শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ধানের চারা লাগিয়ে প্রতিবাদ

রাস্তা পাকা করতে মাপজোখেই বছর পার

রুবাইয়া সুলতানা বাণী, ঠাকুরগাঁও থেকে | প্রকাশের সময় : ১৫ জুন, ২০১৯, ১২:০৮ এএম

বৃষ্টির ৫ দিন পরও রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী করা হয়নি। স্থানীয়রা এর প্রতিবাদ করলেন রাস্তায় ধানের চারা লাগিয়ে। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার পটুয়া-জামালপুর রাস্তার আড়াই কিলোমিটার কাঁচা থাকায় এমন বেহাল দশা। সামান্য বৃষ্টিতে চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়ায় ধানের চারা লাগাতে বাধ্য হন তারা।
গতকাল শুক্রবার সকালে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরর শিক্ষার্থীদের আয়োজনে পটুয়া-জামালপুর রাস্তার পাইকপাড়া গ্রামের বিভিন্ন স্থানে ধানের চারা রোপণ করা হয়। সদর উপজেলার পটুয়া-জামালপুর রাস্তার আড়াই কিলোমিটারের মধ্যে ২ কিলোমিটার রহিমানপুর ইউনিয়ন ও বাকিটা জামালপুর ইউনিয়নের। রহিমানপুরের শেষ ও জামালপুরের শুরু হওয়ায় মাঝে পাইকপাড়া গ্রামটি অবহেলায়। ভোটের সময় ভোট আর পরে তেমন খবর নেয়ার সময় পান না জনপ্রতিনিধিরা, অভিযোগ এলাকাবাসীর।
ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মাসুদ, জাকির, সাদ্দাম বলেন, দীর্ঘদিন থেকে দেখে আসছি রাস্তাটি শুধু মাপজোখ হচ্ছে। পাকা করার কোন খবর নেই। রাস্তাটি পাকা হওয়া খুব জরুরি। ধানের চারা লাগিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছি। কারণ জনপ্রতিনিধিদের বলে বলে আর বলতে পারছি না। স্থানীয় সংসদ সদস্যকেও বার বার বলেছি। তিনি বলেছেন, হবে হবে।
স্থানীয়দের দাবি, ওই এলাকায় আওয়ামী লীগের ভোটার থাকলেও কোন নেতা না থাকায় রাস্তার দাবি সঠিক জায়গাতে না যাওয়ায় পাকা হচ্ছে না। ফলে এলাবাসীর দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় বিশেষ করে বিদ্যালয় পড়–য়া শিক্ষার্থীরা পড়েন বিপাকে। কারণ ঐতিহ্যবাহী জামালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীর একমাত্র যাওয়া-আসার রাস্তা এটি।
পাইকপাড়া গ্রামের জামালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জীবন, শাম্মি, খেলাফত, রহমান জানায়, বৃষ্টি হলে ওই রাস্তা দিয়ে ৩ থেকে ৪ দিন চলাচল করা যায় না। তারপরও রাস্তা বাদ দিয়ে অন্যের বাড়ি দিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হয়। অনেক সময় অন্যের গালাগালিও শুনতে হয়।
জামালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারুক হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ও অভিভাবকদের স্থানীয় বড় বাজার শিবগঞ্জে যাওয়ার প্রধান সড়ক পটুয়া-জামালপুর। এখনও বর্ষা শুরু হয়নি, তাতেই এই অবস্থা। রাস্তাটি পাকা করার বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা দ্রæত সিদ্ধান্ত নিবেন।
রহিমানপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান হান্নু বলেন, প্রতি বছর ট্রলিতে করে ইট ভাটার গুড়া ইট রাস্তায় দেয়া হয়। তারপরও কিছুদিন পর পর রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ হয়। পাকা রাস্তা না হওয়া পর্যন্ত এলাবাসীর দুর্ভোগ কমবে না।
জামালপুর ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, রাস্তার এক পাশে জামালপুর আরেক পাশে রহিমানপুর। ৪০ দিনের কর্মসূচির লোকদের পাঠানো হয়েছিল পাশে মাটি না পাওয়ায় জামালপুরের খারাপ অংশ মেরামত সম্ভব হয়নি। নাম না প্রকাশ করার শর্তে এলজিইডি’র এক প্রকৌশলী বলেন, ঠাকুরগাঁও জেলায় যে কয়টি রাস্তা পাকা হওয়ার বাকি আছে তার মধ্যে পটুয়া-জামালপুর রাস্তাটি উল্লেখ্যযোগ্য। তারপরও কেন পাকা হচ্ছে না সেটা বলতে পারছি না। সদর উপজেলা প্রকৌশলী নুরুজ্জামান সরদার বলেন, ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন-এর নির্দেশে পটুয়া-জামালপুর রাস্তা গত বছর মাপযোখ শেষে প্রাক্কলন করে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু হবে।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন বলেন, অনেক রাস্তা পাকা করার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। পটুয়া-জামালপুর রাস্তাটিও আছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন