শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ ভাইস প্রিন্সিপাল নিয়োগে অনিয়ম

স্টাফ রিপোর্টার, কুষ্টিয়া থেকে : | প্রকাশের সময় : ১৭ জুন, ২০১৯, ১২:২৯ এএম

 দেশের শীর্ষস্থানীয় বৃহৎ সরকারি মহাবিদ্যালয়ের মধ্যে অন্যতম কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে জেষ্ঠ্যতা ও শর্ত লঙ্ঘন করে নিয়োগ প্রাপ্ত উপাধ্যক্ষের কর্মস্থলে যোগদান বিষয়কে কেন্দ্র করে শিক্ষক অসন্তোষে কলেজ কর্তৃপক্ষ বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়েছে। ফলে কলেজের পরিবেশ নষ্ট এবং লেখাপড়ায় ব্যাঘাত ঘটছে বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।

কর্তৃপক্ষ বলছেন, কলেজে ভাইস প্রিন্সিপালের বিদ্যমান শূন্যপদে নিয়োগের নিমিত্তে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব স্বাক্ষরিত ও প্রেরিত পত্রেও অসঙ্গতি ও শর্ত জালিয়াতির বিষয় দৃষ্টিগোচর হওয়ায় তা অবহিত করে এই নিয়োগ স্থগিতের অনুরোধ জানিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। অভিযুক্ত ঐ শিক্ষক বলছেন যা কিছু হয়েছে সরকারি বিধিমতে নিয়ম মেনেই হয়েছে।

আত্মীকরণ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ প্রাপ্তির শর্তানুযায়ী শিক্ষা ক্ষেত্রে কর্মকালীন ১০বছর পূর্ণকরণসহ কর্মজীবনে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বাক্ষর রেখেছেন এমন বিশেষ বিবেচনার কোটা সুবিধা নিয়ে বে-সরকারি কলেজ থেকে সরকারি কলেজে নিয়োগ পর্যন্ত সকল স্তরে অসত্য তথ্য সরবরাহসহ অবৈধ প্রভাব কাজে লাগিয়ে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হন মো. মসলেম উদ্দিন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, গত ২৩ জুন ২০০৫ সালে বেসরকারি মহাবিদ্যালয় কুষ্টিয়া আদর্শ ডিগ্রী কলেজে হিসাববিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক পদে কর্মরত সময়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে শতকরা ১০% আত্মীকরণ নিয়োগদানের বিজ্ঞাপন দেয় একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মূখ্য সচিব শহিদুল ইসলামের সহায়তায় এবং তার ভাইঝি’কে বিয়ে করার শর্তে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত পূরণ যোগ্যতা ছাড়াই এই সুবিধাপ্রাপ্ত হন।

যদিও নিয়োগ প্রাপ্তির পর তিনি সচিবের ভাইঝিকে বিয়ে করেন নি এবং বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই তরুণীর সাথে মেলামেশা করে প্রতারণা করার দায়ে ওই তরুনীর দেয়া অভিযোগে ২০০৭ সালে শিক্ষক মসলেম উদ্দিনকে তার নিজ বাড়ি সদর উপজেলার হররা গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেন কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ। পরে পক্ষগণের মধ্যে আপস মীমাংসায় সে যাত্রায় রেহায় পান তিনি। এরপর ২০১৭ সালে আরও একটি নারী কেলেঙ্কারীর ঘটনায় তিনি জনরোষের শিকার হয়ে গুরুতর আহত হন।

একইভাবে অধ্যাপক মসলেম উদ্দিনকে ভাইস প্রিন্সিপাল পদে যোগদানের আপত্তি জানিয়ে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত দরখাস্তে অভিযোগ-অনৈতিক ও অবৈধ প্রভাব দেখিয়ে কর্মস্থলে সমকর্মীদের সাথে অসদাচরণ, ছাত্রীদের সাথেও অশালীন আচরণে অভিযুক্ত শিক্ষক ভাইস প্রিন্সিপাল পদে নিয়োগ পেলে কলেজের শিক্ষক-শিক্ষর্থীরাও নিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে। সেকারণে অবিলম্বে এই নিয়োগ বাতিলের দাবি তাদের।

এবিষয়ে অভিযুক্ত ওই শিক্ষক অধ্যাপক মসলেম উদ্দিন মুঠোফোনে প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অসত্য তথ্য আপনাদের কাছে সরবরাহ করা হয়েছে। কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ কাজী মনজুর কাদির বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সহকর্মী হিসেবে অধ্যাপক মসলেম উদ্দিনকে এমন বিশেষ কোন যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখতে দেখিনি যে, তিনি এ অঞ্চলের বৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কুষ্টিয়া সরকারী কলেজের প্রশাসনিক দায়িত্ব সুচারুরূপে পালন করতে পারবেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন