ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে কিশোরী ধর্ষণের পর সালিশ দরবারে জরিমানা করে ধর্ষককে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। গত রবিবার রাতে উপজেলার উচাখিলা বাজারে ওই ঘটনাটি ঘটে।
এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের একটি গ্রামে আলিয়া মাদরাসায় অধ্যয়নরত কিশোরীর সাথে মোবাইলে সর্ম্পক গড়ে উঠে একই ইউনিয়নের মরিচারচর গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে আব্দুল আহাদের(২২)।
কিশোরী জানায় আহাদ একটি মাদরাসায় পড়ে। হঠাৎ একদিন রঙ নাম্বারে যোগোযোগ হয় তার সাথে। এ অবস্থায় কথাবার্তার এক পর্যায়ে দুই জনের মধ্যে গভীর সর্ম্পক গড়ে উঠলে বিয়ের কথা বলে তাকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যায়। গত শনিবার সকালে ফের ফোন করে তাকে ময়মনসিংহের একটি আবাসিক হোটেলে গিয়ে তাকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে। পরদিন সকালে এলাকায় গিয়ে বিয়ের কথা বলে সটকে পড়তে চাইলে স্থানীয় লোকজন আহাদকে আটকে রাখে। পরে আটক আহাদকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ সভাপতি মঞ্জুরুল হকের কাছে তুলে দেওয়া হয়।
এ অবস্থায় রাত ১১ টার দিকে সভাপতির বাসার পাশের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিয়ে গিয়ে এক সালিশের আয়োজন করে। সালিশে থাকা কয়েকজন জানান, আওয়ামী লীগ সভাপতি মঞ্জুরুল হক ছাড়াও ওই সালিশে উপস্থিত ছিলেন পাশের রাজিবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ একে এম মোদাব্বিরুল ইসলামসহ স্থানীয় অনেক সালিশকারী। পরে ওই কিশোরির কাছ থেকে ধর্ষণের বর্ণনা শোনে আটক করা যুবককে দোষী সাব্যস্থ করে তিন লাখ টাকা জরিমানা ধার্য্য করা হলেও প্রায় দুই ঘন্টা ব্যাপি আলোচনা শেষে এক লাখ আশি হাজার টাকায় ধার্য্য করা হয়। পরে নগদ টাকা ও বাকীতে ধর্ষণে অভিযুক্ত আব্দুল আহাদকে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সালিশে মীমাংসা করার কথা স্বীকার করে উচাখিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মঞ্জুরুল হক জানান, ছেলে প্রাপ্ত বয়স্ক হলেও মেয়েটির বয়স অত্যন্ত কম। তাই মেয়েটির ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে জরিমানা ধার্য্য করা হয়। জরিমানার পরিমান কত জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘আগে টাকা পরিশোধ হউক তারপর অঙ্কটা বলা যাবে। তারপরও তো কত ধার্য্য করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘এই লাখ দেড়েক হবে আর কি।
রাজিবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুদাব্বিরুল ইসলাম সালিশ দরবারে থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, ছেলেকে ছেলের পরিবারে ও মেয়েকে মেয়ের পরিবারে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। টাকার বিষয় তিনি কিছু জানেন না। ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত জয়নাল আবেদীন সরকার জানান, তিনি ঘটনা জানেননি। তবে ধর্ষণের বিচার সালিশে সম্পন্ন করা যায় না। এখন খোঁজ খবর নিয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন