প্রায় দেড় দশক পরে উত্তর কোরিয়া সফরে যাচ্ছেন কোনও চিনা প্রেসিডেন্ট। সেই সফরের আগে উত্তর কোরিয়ার শাসক দলের মুখপত্রে নিবন্ধ লিখে দু’দেশের ‘অটুট’ মৈত্রীর উপরে জোর দিলেন শি জিনপিং। অন্য রাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমে চিনা প্রেসিডেন্টের এমন নিবন্ধ লেখার ঘটনা বিরল।

শুক্রবার দু’দিনের সফরে উত্তর কোরিয়া যাচ্ছেন চিনের প্রেসিডেন্ট। তাকে স্বাগত জানাতে পিয়ংইয়্যাংয়ের ‘ফ্রেন্ডশিপ টাওয়ার’-এর সংস্কার করা হচ্ছে। কোরীয় যুদ্ধের সময়ে যে চিনা সেনারা উত্তর কোরিয়াকে প্রায় নিশ্চিত পরাজয়ের হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন তাদের স্মৃতির উদ্দেশে তৈরি হয়েছিল ওই সৌধ। পিয়ংইয়ংয়ে লাগানো হয়েছে চিনা পতাকাও।

বৃহষ্পতিবার উত্তর কোরিয়ার একনায়ক কিম জং উনের দলের মুখপত্রে জিনপিং লিখেছেন, ‘চিন-উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ক ৭০ বছরের পুরনো। ঝড়বৃষ্টির মধ্যেই আমরা এক নৌকোয় এগিয়েছি। আমাদের এই সম্পর্কের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল।’

শীতল যুদ্ধের সময়ের মিত্র হলেও সম্প্রতি বেইজিং-পিয়ংইয়্যাং সম্পর্ক অবনমন হয়েছে। উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্র প্রকল্প ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জেরে জাতিসংঘে আমেরিকার আনা নিষেধাজ্ঞা সমর্থন করেছিল চিন ও রাশিয়া। তার পরে অবশ্য পিয়ংইয়ংয়ের সম্পর্কের উন্নতির জন্য ফের সক্রিয় হয়েছে বেইজিং।

কূটনীতিকদের মতে, এই সফরের পরে কিম তার দেশবাসীকে বোঝাতে পারবেন আমেরিকার সঙ্গে আলোচনা ব্যর্থ হলে চিন তার পাশে আছে। অন্য দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ নিয়ে আলোচনার সময়ে কিছুটা সুবিধে পাবেন জিনপিংও। কারণ উত্তর কোরিয়ার উপরে চিনের প্রভাব বজায় থাকলে পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে আলোচনা চালাতে বেইজিংয়ের সাহায্য চাইতে পারেন ট্রাম্প।

এরই মধ্যে উত্তর কোরিয়াকে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করার মার্কিন প্রস্তাব চিন ও রাশিয়ার আপত্তিতে স্থগিত হয়ে গিয়েছে। ওয়াশিংটনের দাবি, জাতিসংঘে বেঁধে দেওয়া সীমা ভেঙে বেআইনি ভাবে জ্বালানি আমদানি করছে পিয়ংইয়ং। কিন্তু চিন ও রাশিয়া জানিয়েছে, মার্কিন প্রস্তাব খতিয়ে দেখতে সময় লাগবে।