শ্রমিক সঙ্কট, শ্রমিকের অধিক মূল্য ও উৎপাদিত পাটের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় গত দুই বছর থেকে নাটোরের লালপুর অঞ্চলের পাট চাষীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। দুই বছরের ক্ষতির বোঝা মাথায় তার পরেও এ বছর লাভের মুখ দেখবেন এমটা আশা করে আবারও পাট চাষ করেছেন এই অঞ্চলের চাষীরা। লালপুর উপজেলার অনেক পাট চাষী গত দুই বছর থেকে পাট চাষ করতে গিয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে এবছর চড়া সুদে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে পাট চাষ করেছেন। তবে এবছরও কি পাটের ন্যায্য মূল্য তারা পবেন..? এমন প্রশ্নে উজেলার প্রতিটি পাট চাষীর রাতের ঘুম যেন হারাম হয়েগেছে। প্রতিটি পাট চাষীর চেহারায় হাতাশার ভাঁজ।
গতকাল শনিবার সকালে লালপুর উপজেলার, বড়ময়না, নান্দ, ওয়ালিয়া, লালপুর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, লোকসান জেনেও চাষীরা তাদের সর্বস্ব দিয়ে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে নিবির পরিচর্যায় সবুজ পাট গাছে ভরে তুলেছেন জমি। এখন পালা শুধু পাট গাছ কাটা, জাগ দেয়া, পাট গাছ থেকে আঁশ ছোড়ানো ও শুখানো।
লালপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে লালপুর উপজেলায় মোট ৫৯১০ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। গত বছর এই উপজেলায় ৩৬০০ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়েছিলো।
উপজেলার পাট চাষী রেজাউল ইসলাম দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ‘গত দুই বছর পাট চাষ করে লোকসান হচ্ছে, এ বছর কাঙ্খিত দাম পেলে বিগত দিনের ক্ষতি কিছুটা হলেও পোষাবে ভেবে এবারও পাটের চাষ করেছেন তিনি।’
মিন্টু নামের এক চাষী প্রতিবেদককে বলেন, ‘দাম না পেয়ে পাট চাষ করে শেষ হয়ে গেছি, তার পরেও ঋণের বোঝা মাথাই নিয়েই এবছরও পাট চাষ করেছি এবছর পাটের দাম না পেলে মরা ছাড়া কোন গতি নেই।’
জাহাঙ্গীর আলম নামের বড় ময়না গ্রামের এক পাট চাষী বলেন, ‘পাট এখন আমাদের গলার কাটা, না পারছি ফেলতে না পারছি গিলতে।’
লালপুর উপজেলা কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলাম দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ‘লালপুরে প্রতিবছরই পাট চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে, গত দুই বছর থেকে পাটের সঠিক দাম না পেয়ে অনেক চাষী হতাশ হয়েছেন। উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পাট চাষের বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানে তারা বেশি বেশি পাটের চাষ করেছেন। পাটের সঠিক দাম পেলে আগামীতে এই উপজেলায় পাটের চাষ আরো বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন