ইনকিলাব ডেস্ক : জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) মতো জঙ্গিবাদী সংগঠনকে রুখতে মানবাধিকার লঙ্ঘন না করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, কঠোর পন্থা নেয়ার ফলে জঙ্গিবাদ বরং বেড়ে গেছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বিশ্বের দেশগুলোর প্রতি এই আহ্বান জানিয়ে একটি কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরে বান কি মুন প্রতিটি রাষ্ট্রকে জঙ্গিবাদ নির্মূলে একটি জাতীয় পরিকল্পনা তৈরির আহ্বান জানান। বান কি মুন জঙ্গিবাদ নির্মূলে ৭৯ দফা সুপারিশ করেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো, যেসব বিদেশি ইতিমধ্যে আইএসের মতো জঙ্গি সংগঠনে যোগ দিতে গেছে, তাদের শিক্ষা ও চাকরির সুযোগ দিয়ে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা। মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে শিক্ষার প্রসারের তাগিদ দেন বান কি মুন। তিনি বলেন, এর ফলে আইএস বা বোকো হারামের মতো জঙ্গি সংগঠনগুলো তরুণদের দলে ভেড়ানোর চেষ্টা বন্ধ করবে। তিনি বলেন, আইএস বা অন্যান্য জঙ্গিগোষ্ঠীর হুমকি মোকাবিলায় এখন সংকীর্ণ পরিসরে কেবল সামরিক ও নিরাপত্তাগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। কিন্তু এদের মোকাবিলা করতে হলে এসব পন্থার বাইরে এসে পরিকল্পনা করতে হবে।
বান কি মুন বলেন, অপরিকল্পিত নীতি, ব্যর্থ নেতৃত্ব, কঠোর পন্থা, কেবল বল প্রয়োগ করে জঙ্গিবাদ নির্মূলের চেষ্টা হয়েছে। উপেক্ষিত হয়েছে মানবাধিকার। দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, এসব পন্থা নেয়ার ফলে জঙ্গিবাদ বরং বেড়েই গেছে। জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, ভুল নীতির ফলে আমরা নিষ্ঠুর জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে হেরে চলেছি। এ ধরনের নীতি মানুষের বিরুদ্ধে মানুষকে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। কোণঠাসা হওয়া মানুষ দিন দিন আরও কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। আর এর ফলে শত্রুদের হাতই শুধু শক্তিশালী হচ্ছে। বান কি-মুন বলেন, আমাদের মাথা ঠা-া রাখতে হবে এবং সাধারণ জ্ঞান প্রয়োগ করতে হবে। মুন বলেন, সন্ত্রাসবাদ বা জঙ্গিবাদের একপেশে ব্যাখ্যা দিয়ে প্রায়ই বিরোধী পক্ষ, সুশীল সমাজের সংগঠন বা মানবাধিকারকর্মীদের কর্মকা-কে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হয়। কারও মুখ বন্ধ করতে বা কাউকে বাধা দিতে কোনো সরকারেরই এ ধরনের আচরণ করা উচিত নয়। জঙ্গিবাদ সব সময়ই এ ধরনের পরিস্থিতির সুযোগ নেয়। আমরা যেন সেই ফাঁদে পা না দিই। মহাসচিব বলেন, জঙ্গিবাদের হুমকি মোকাবিলায় আইনগত অধিকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের রয়েছে। তবে এই সন্ত্রাসবাদের কারণ নির্ণয়েও আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। এএফপি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন