বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

৪৯ বছরেও স্বীকৃতি পাননি মুক্তিযোদ্ধা করিম

স্টাফ রিপোর্টার, বরগুনা থেকে | প্রকাশের সময় : ২৪ জুন, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

১৯৭১-এর রনাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা এম. এ. করিম স্বাধীনতার ৪৯ বছর পর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাওয়ার আবেদন করেছেন। তিনি স¤প্রতি মুক্তিযোদ্বা হিসেবে বিভিন্ন দালিলিক প্রমানপত্রসহ মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়ে আবেদন করেন। তিনি ইনকিলাবকে জানান, তার বাড়ি বরগুনার পাথরঘাটা থানার জালিয়াঘাটা গ্রামে। তিনি ১৯৬৮ সনে বি.এম কলেজ থেকে ডিগ্রী পাশ করে নিজ এলাকায় একটি হাই স্কুলে শিক্ষকতা করেন। ১৯৭১ সনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আহবানে দেশ-মাতৃকার টানে নিজ এলাকায় সংগ্রাম পরিষদ ও স্থানীয় যুব সমাজকে নিয়ে মুক্তি বাহিনী গঠন করেন। এক পর্যায়ে ৯ নং সেক্টর কমান্ডার এম.এ জলিলের নির্দেশে ক্যাপ্টেন মেহেদী আলী ইমামের নেতৃত্বে বুকাবনিয়ায় প্রতিষ্ঠিত মুক্তি বাহিনীর সাব সেন্টারে যোগ দিয়ে অস্ত্রহাতে পাক বাহিনীর মোকাবেলা করেন। এরই মধ্যে পাক সেনারা পাথরঘাটা থানার ৯/১০ জন মুক্তিকামী মানুষকে হত্যা করে। ওই তালিকায় তার নাম থাকায় রাজাকাররা তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা করে। এ সময়ে তিনি নিজ এলাকা ছেড়ে ছদ্মবেশে ঢাকা হয়ে সিলেটের বাহুবল থানায় তার এক বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় গ্রহন করেন। সেখানে ৩নং সেক্টর কমান্ডার মেজর কে.এম.শফিউল­াহর নেতৃত্বে বাহুবল থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. জালাল উদ্দিনের অধীনে মুক্তিবাহিনীতে যোগ দিয়ে তার সাথে থেকে দেশ স্বাধীন হওয়া পর্যন্ত পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেন।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর দেশে ফিরে বন মন্ত্রনালয়ের অধীনে একটি সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ‘আমি স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছি এটাই আমার গর্ব। সনদ সংগ্রহের উপর আমি কখনো গুরুত্ব দেইনি। ১৯৮৫ সনে সরকার মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্ত/কর্মচারীদের ২টি অগ্রীম ইনক্রিমেন্ট দেয়ার সুযোগ দিলে আমি বাহুবল উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের কমান্ডার মো. জালাল উদ্দিনের নিকট থেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সনদ সংগ্রহ করি এবং সেই সনদের আলোকে অফিস থেকে আমাকে দু’টি ইনক্রিমেন্ট প্রদান করা হয়।

কেন আপনি রাষ্ট্রীয়ভাবে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেতে পরবর্তীতে আবেদন বা চেষ্টা করেননি? এ প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযোদ্ধা করিম বলেন ‘পরবর্তী সময়ে মিস ফাইলিংয়ের কারনে আমার মুক্তিযোদ্ধা সনদ পত্রখানা হারিয়ে যায়। দীর্ঘ ৩২ বছর পর অনেক খোজাখুজি করে স¤প্রতি সময়ে সনদপত্র পেয়ে সকল প্রমানাদিসহ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি পেতে আবেদন করেছি।
এখন আমি মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে। স্বাধীনতা যুদ্ধের সেই ভয়াবহ স্মৃতিগুলো খুব মনে পড়ছে। দেশমাতৃকার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মৃত্যুর পূর্ব মূহুর্তে হলেও আমি আমার অবদানের স্বীকৃতি চাই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন