নির্বাচন পূর্ববর্তী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তিন বছরের মধ্যে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াবেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ। ক্ষমতা তুলে দেবেন পিকেআর পার্টির প্রেসিডেন্ট আনোয়ার ইব্রাহিমের হাতে। আসিয়ান সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়ে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে সিএনবিসি’কে দেয়া এক সাক্ষাতকারে শনিবার তিনি সে কথাই আবার জানান দিয়েছেন। এ খবর দিয়েছে মালয়েশিয়ার অনলাইন স্টার অনলাইন। মাহাথির ওই সাক্ষাতকারে বলেছেন, যতদূর মনে পড়ে, আমি একটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। বলেছিলাম, আমি পদত্যাগ করবো, যাতে আনোয়ার ইব্রাহিম আমার উত্তরসূরি হিসেবে ক্ষমতায় আসতে পারেন। তিনি বলেন, এই সরকারের জন্য তিনটি বছর প্রয়োজন। কারণ, মালয়েশিয়ার জাতীয় প্রবৃদ্ধির শতকরা ৮০ ভাগ থেকে ঋণ শতকরা ৫৪ ভাগে নামিয়ে আনতে এই সময় প্রয়োজন। এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য তিনি কি ক্ষমতায় থেকেই যাবেন কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে মাহাথির বলেন, না। আমি তিন বছরের বেশি ক্ষমতায় থাকবো না। প্রসঙ্গত, ফেব্রুয়ারিতে আনোয়ার ইব্রাহিম বলেছেন, তিনি দু’বছরের বেশি সময়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী হবেন না। এর মধ্য দিয়ে ড. মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গে তার বোঝাপড়া যে পাকাপোক্ত তারই প্রকাশ পেয়েছে। তিনি স্বীকার করেছেন, ড. মাহাথিরকে যথেষ্ট সময় দেয়া উচিত অত্যন্ত কঠিন সময়ে কার্যকর সরকার পরিচালনার জন্য। উল্লেখ্য, মালয়েশিয়ায় ১৪তম জাতীয় নির্বাচনের সময় পাকাতান জোটভুক্ত দলগুলো এই মর্মে একমত হয় যে, যদি তারা নির্বাচনে বিজয়ী হয় তাহলে ড. মাহাথির মোহাম্মদ দু’বছরের জন্য প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। তারপর তিনি ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন আনোয়ার ইব্রাহিমের কাছে। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ বলেছেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া একটি স্বাধীন আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের তদারকিতে হওয়া উচিত। যাতে করে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের ফেরার পর শাস্তির মুখোমুখি না হয়। রবিবার থাইল্যান্ডের ব্যাংককে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেছেন বলে জানিয়েছে মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম মালয়মেইল। মাহাথির জানান, ৩৪তম আসিয়ান সম্মেলনে তিনি রোহিঙ্গা সংকটের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছেন। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেনারেল আয়ুথ চ্যান ও-চা। মাহাথির বলেন, আমি রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কথা বলেছি। রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রত্যর্পণ প্রতিবেদনে অভিবাসী ও শরণার্থীদের প্রতিক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। শরণার্থীদের মত অবশ্যই বিবেচনায় নেওয়া উচিত। কারণ তারা রাখাইনে ফিরে যাওয়ার ক্ষেত্রে আতঙ্কিত অবস্থার মধ্যে আছে। মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করি রোহিঙ্গারা যখন মিয়ানমার ফিরে যাবে সেখানে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায় তদারকি করবে এবং রাখাইন ও মিয়ানমারে যাতে তারা শাস্তির মুখোমুখি না হয় তা নিশ্চিত করবে। মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি’র সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাহাথির বলেন, তিনি আমার পাশে বসে ছিলেন। বর্ণানুক্রমিকভাবে তিনি আমার পাশে বসে ছিলেন এবং এমনকি খেয়েছেন। তবে সম্মেলনে সু চি’র সঙ্গে কোনও ব্যক্তিগত কথোপকথন হয়েছে কিনা তা জানা যায়নি। মাহাথির বলেন, রাখাইন রাজ্য প্রসঙ্গে একমাত্র কথা বলেছে ইন্দোনেশিয়া। এই একটি বিষয় নিয়েই দেশটি কথা বলেছে। আমি অবশ্য সবসময়ের মতোই অনেক প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছি। স্টার অনলাইন, রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন