শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসলামী বিশ্ব

এরদোগান আরবদের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ জুন, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

আরব যুবকদের কাছে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা হয়ে উঠেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান। বিবিসি আরবি বিভাগ পরিচালিত একটি জরিপে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। মঙ্গলবার প্রকাশিত ওই জরিপে আরব বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ২৫ হাজার যুবকের মতামত নেয়া হয়, যাদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল।

প্রাপ্ত ফল অনুসারে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অবস্থান সবার নিচে এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøলাদিমির পুতিন দ্বিতীয় অবস্থানে। কিন্তু তাদের দুজনের সম্মিলিত গ্রহণযোগ্যতা তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগানের ধারেকাছেও নেই।
প্রেসিডেন্ট এরদোগান র‌্যাংকিংয়ে প্রথম স্থানে রয়েছেন। আরব যুবকদের ৫০ শতাংশের বেশি উত্তরদাতা তার পক্ষে ইতিবাচক মন্তব্য করেন। ইস্তাম্বুলের মেয়র নির্বাচনে পরাজয় দীর্ঘ শাসনামলে এরদোগানের জন্য একটি ধাক্কা হলেও বিবিসির এ জরিপটি এরদোগানের সমর্থকদের জন্য কিছুটা হলেও সান্ত¡না বয়ে আনবে।

বিবিসির এ জরিপটিকে সা¤প্রতিক সময়ে পরিচালিত জরিপগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় জরিপ হিসেবে বলা হচ্ছে। যদিও এই জরিপে সব আরব দেশকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা এবং ফিলিস্তিনসহ ১০ দেশে ২৫ হাজারের বেশি মানুষের মধ্যে এ জরিপ চালানো হয়েছে।

২০১৮ সালের শেষ দিকে থেকে শুরু করে ২০১৯ সালের মধ্য সময় পর্যন্ত চালানো এ জরিপে আরব যুবকদের কাছে নানা বিষয়ে তাদের মত জানতে চাওয়া হয়েছিল। আরব দেশগুলোর জনগণ যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও তুরস্কের নেতাদের কতটা ইতিবাচকভাবে দেখে সে বিষয়ে মতামত জানতে চাওয়া হয়েছিল জরিপে।

১১ দেশের মধ্যে সাত দেশে ৫০ শতাংশের বেশি উত্তরদাতা এরদোগানের পক্ষে মতামত দিয়েছেন। শুধু মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণেই যে আরব যুবকরা এরদোগানের পক্ষে মত দিয়েছেন বিষয়টি এমন নয়। কারণ ইতিহাস বলে, তুর্কি জাতির সঙ্গে আরবদের কখনই তেমন সখ্য ছিল না। জাতি হিসেবেও তুর্কি ও আরব দুটি ভিন্ন জাতি। তুরস্কের উসমানী সাম্রাজ্য যে কয়েকশ’ বছর মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার একটি বড় অংশ শাসন করেছে, সে সময় তারা আরব দেশের জনগণকে অধিকার বঞ্চিত করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। উসমানী খিলাফত পতনের পরও আরবদের সঙ্গে তুর্কিদের সম্পর্কের তেমন কোনো উন্নতি হয়নি।

উসমানী খিলাফত বিলুপ্ত করে কামাল আতাতুর্কের হাত ধরে পথচলা শুরু হয় আধুনিক তুরস্কের। ইস্তাম্বুলে খিলাফত বিলুপ্ত করে ধর্মনিরপেক্ষতার পথ বেছে নেয় তুরস্ক প্রজাতন্ত্র।

তুরস্কের এমন পরিবর্তন মধ্যপ্রাচ্যে ইসলামপন্থীদের জন্য বড় ধাক্কা ছিল। নতুন তুরস্কের গোড়াপত্তনের পর আরবি বর্ণমালা উঠিয়ে দিয়ে চালু করা হয় ল্যাটিন বর্ণমালা। এর মাধ্যমে তুরস্কের ইসলামী আবরণ ছাড়িয়ে পাশ্চাত্যমুখী একটি সমাজব্যবস্থা গড়তে চেয়েছিলেন কামাল আতাতুর্ক। দেশটির সেনাবাহিনীকেও গড়ে তোলা হয় ধর্মনিরপেক্ষতার আদলে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের সঙ্গে বেশ ঘনিষ্ঠতাও তুরস্কের। ইসরাইলের সঙ্গে একসময় যৌথ সামরিক মহড়ায় অংশ নিলেও তুরস্কের এখন বিশাল পরিবর্তন হয়েছে।

২০০২ সালে এরদোগানের জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টে পার্টি ক্ষমতায় আসার পর তুরস্কের সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক পরিচয় আবারও ইসলামী আদর্শের দিকে ঝুঁকতে শুরু করে।

মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে ঐতিহাসিক সম্পর্ক পুনরায় জাগিয়ে তোলেন তিনি। তুরস্কের অর্থনীতির স্বার্থে আরব দেশগুলোর সঙ্গেও বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নত করার চেষ্টা করেছেন তিনি। বর্তমানে তুরস্কের সেনাবাহিনী পুরোপুরি বেসামরিক নেতৃত্বের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

প্রেসিডেন্ট এরদোগান প্রকাশ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। তবে বিভিন্নভাবে সম্পর্ক ঠিক রাখতে চেষ্টা করেন তিনি। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকেও সন্ত্রাসী দেশের নেতা ও চোর হিসেবে আখ্যায়িত করেন এরদোগান।

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলের অবরোধ ও নির্যাতনের বিষয়ে সবসময় সোচ্চার থাকতে চেষ্টা করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। তা ছাড়া রোহিঙ্গা ইস্যুসহ বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে মুসলিম নির্যাতনের বিষয়ে তাকেই কথা বলতে দেখা যায়। ম‚লত এরদোগানের জনপ্রিয়তার ম‚ল রহস্যটি এখানেই। বৈশ্বিকভাবে যখন মুসলমানদের পক্ষে শক্তভাবে কথা বলার প্রয়োজন হয়, এরদোগানকেই তখন এগিয়ে আসতে দেখা যায়।

স¤প্রতি নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে ভয়াবহ হামলা ও মিসরের মুরসির মৃত্যুর পর এরদোগানকেই অভিভাবকের ভ‚মিকা পালন করতে দেখা গেছে। পর্যবেক্ষক মারওয়ান মুয়াশের মনে করেন, এরদোগানের ইসরাইলবিরোধী অবস্থান ফিলিস্তিন ও জর্ডানে তার ভক্ত বাড়িয়েছে।

তিনি বলেন, এরদোগানকে দেখা হয় এমন এক ব্যক্তি হিসেবে যিনি ইসরাইল ও আমেরিকার সামনে দাঁড়িয়েছেন এবং নিজ দেশের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন করেছেন। এরদোগানের উঠে আসার গল্প তুরস্কের বহু মানুষকে আন্দোলিত করে। একটি ধার্মিক পরিবারে জন্ম নেয়া এরদোগান তুরস্কের ধর্মনিরপেক্ষ শাসকগোষ্ঠীকে চ্যালেঞ্জ করেছেন এবং তুরস্কের নীরব সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের পক্ষে কথা বলেছেন। তা ছাড়া সুদানের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরের শাসনামলে দেশটি যখন আন্তর্জাতিক স¤প্রদায় থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল, তখন দেশটিতে তুরস্ক বিনিয়োগ করেছিল। এ জন্য সুদানের মানুষ তার কাছে কৃতজ্ঞ।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (9)
Md Harun Rashid ২৮ জুন, ২০১৯, ৯:২৩ এএম says : 0
আলহামদুলিল্লাহ
Total Reply(0)
Jomadder Mizan ২৮ জুন, ২০১৯, ৯:২৩ এএম says : 0
আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ তাকে বিশ্ব মুসলিমের পক্ষে আজীবন কাজ করার সুযোগ দান করুক (আমিন)
Total Reply(0)
মোঃ হাবিব উল্লাহ্ ২৮ জুন, ২০১৯, ৯:২৩ এএম says : 0
এরদোগান শুধু আরবদের কাছে জনপ্রিয় নেতা নন, সারা বিশ্বের মুসলমানদের কাছে জনপ্রিয় নেতা তিনি।
Total Reply(0)
Obaidullah Amin ২৮ জুন, ২০১৯, ৯:২৩ এএম says : 1
আরবদের নয় গনতন্ত্র নামক লেলিন মতবাদীদের প্রিয় নেতা।
Total Reply(0)
আবু আবিদ ২৮ জুন, ২০১৯, ৯:২৩ এএম says : 0
আমিও তাকে সাপোর্ট করি। তিন মজলুম মুসলমান সমাজের নেতা।
Total Reply(0)
Md Nurul Islam ২৮ জুন, ২০১৯, ৯:২৪ এএম says : 0
আল্লাহ পাক উনার হায়াতের মধ্যে বরকত দান করুন। এবং উনাকে আরও বেশি শক্তি এবং হিম্মত দান করুন। আমিন।
Total Reply(0)
Firoz Almamun ২৮ জুন, ২০১৯, ৯:২৪ এএম says : 0
বিশ্বের একমাত্র প্রেসিডেন্ট যে ৩০ পাড়া কোরআনের হাফেজ, আল্লাহ তার নেক হায়াত বাড়িয়ে দিক❤❤আমিন
Total Reply(0)
Mohammed Bhuiyan ২৮ জুন, ২০১৯, ৯:২৫ এএম says : 0
Yes he is a great & brave Muslim leader
Total Reply(0)
Din Islam ২৮ জুন, ২০১৯, ৯:২৫ এএম says : 1
তিনি তার দেশের জন্য বড় মাপের নেতা বিশ্বের জন্য না। সে কোন মুসলিম দেশ এর পাশে দাড়ি কি কাজ টা করছে যে সে বিশ্ব নেতা।পাগলের মতো বক্ত না হয়ে যাচাই বাচাই করেন তাহলে বুঝবেন।
Total Reply(1)
Md. Abdur Razzak ২৯ জুন, ২০১৯, ৩:০০ পিএম says : 4
Ai ...... tui kichu bujhs na ki ?

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন