শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

জাতীয় মুক্তি মঞ্চের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ জুন, ২০১৯, ৯:০১ পিএম

অলি আহমদের জাতীয় মুক্তি মঞ্চে’র উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি। শুক্রবার বিকালে শেরে বাংলা নগরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারতের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘‘ একটা রাজনৈতিক দলের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা আছে যেকোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহন করবার জন্যে এবং সেই ধরনের কোনো উদ্যোগ গ্রহন করবার জন্যে। আমরা মনে করি যে, গণতন্ত্রের জন্য ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্যে যেকোনো উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই।
গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের এক সংবাদ সম্মেলনে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক লিবারেল ডেমোক্রেটিক লীগ(এলডিপি) সভাপতি অলি আহমেদ গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে জাতীয় সংসদের পুণঃনির্বাচন ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দা্বিতে ‘জাতীয় মুক্তি মঞ্চ’ নামে নতুন প্ল্যাটফর্ম গঠনের ঘোষণা দেন। এই মঞ্চে ২০ দলীয় জোটের শরিক কল্যাণ পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি(জাগপা), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিয়ের একটি অংশ ও ইসলামী মুভমেন্ট যুক্ত হয়েছে।

বিকাল সাড়ে তিনটায় বগুড়া-৬ আসনের উপ-নির্বাচনে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত দলীয় সদস্য জিএম সিরাজকে নিয়ে বিএনপি মহাসচিব শেরে বাংলানগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে যান। তারা জিয়ার কবরে পুস্পমাল্য অর্পন করেন এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত করেন।

এ সময়ে দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, মাহবুবুর রহমান, নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল, ওবায়দুর রহমান চন্দন, শায়রুল কবির খান, বগুড়া-৪ আসনের সাংসদ মোশাররফ হোসেনসহ বগুড়া জেলার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘ বর্তমানে বরগুনার মতো ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে, প্রতিদিন খারাপ থেকে খারাপতর হচ্ছে। এই ঘটনা প্রমাণ করে এই সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।সর্বক্ষেত্রে দলীয়করণ করার কারণে বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয়করণ করার কারনেই এসব ঘটনা ঘটছে।”

‘‘ যখনই আপনার অপরাধী যদি শাস্তি না পায় এবং দলীয় কারনে তারা যদি মুক্ত হয়ে যায়। স্বাভাবিক কারনে অন্যান্য অপরাধী সেই দলের ছত্রছায়ায় গিয়ে অপরাধ করার প্রবণতা আরো বেড়ে যায়- সেখানেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবণতি ঘটে সেখানেই।”

এরকম ঘটনা কেনো ঘটছে বলে মনে করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘ এসব হত্যাকান্ড বেড়েছে যেহেতু দেশে আইনের শাসন নেই, যেহেতু জবাবদিহিতামূলক কোনো সরকার নেই, যেহেতু জনগন এই সরকারকে নির্বাচিত করেনি, পার্লামেন্ট কোনো জনগনের প্রতিনিধি নেই, সেই কারণে এ্সব ঘটনা ঘটছে। এখানে ন্যায় বিচার নেই, বিচারহীন আছে।”

‘‘ আমরা খুব পরিস্কারভাবে দেখতে পারছি বিগত একদশক ধরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শুধু নয়, বিচার বিভাগকেও দলীয়করণ করা হয়েছে। সেইক্ষেত্রে খুব স্বাভাবিকভাবে আইনশৃঙ্খলার অবণতি হবে, হত্যা বাড়বে, ধর্ষন বাড়বে-এটাই কিন্তু সোশ্যাল কন্ডিশনস সেটাই প্রমাণিত হবে, সামাজিকভাবে সেইটাই আসবে।”

গত ১০ বছরে যত হত্যা-নির্যাতন-ধর্ষন হয়েছে তা ‘নজিরবিহীন’ বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।

গত বুধবার বরগুনায় রিফাতকে স্ত্রীর সামনেই কুপিয়ে জখম করে একদল যুবক। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন যে, ড. কামাল হোসেন আওয়ামী লীগের পক্ষে খে্লে্ছেন। এর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ এসব পলিটিক্যাল রেটোরিক্টস। এগুলো উত্তর পাবেন না আমার কা্ছে।”

বগড়ুা-৬ আসনে নির্বাচনে নির্বাচিত সদস্য জি এম সিরাজ বলেন, ‘‘ আপনারা জানেন যে, বগুড়া উপনির্বা্চনে বগুড়ার মানুষ এবার ভোট দিয়েছে। ভোটটি উসবমুখর বলবো না। এবার ভোট হয়েছে মানুষের মনে বিষাদ, মানুষ ধিক্কার নিয়ে ভোট দিয়েছে। মানুষ ভোটের ওপর অনাস্থা, অনাগ্রহ। আপনারা জানেন গত ১০ বছর ভোটের সংস্কৃতি নষ্ট করে দিয়েছে এই সরকার, মানুষ ভোট দিতে পারছে না।”

‘‘ এই সরকার ভোটের সরকার নয়, রাতের ভোট দিনে হয়, দিনের ভোট রাতে হয়। যাহোক মানুষের এই অনাগ্রহ ও মানুষের অনিচ্ছার মধ্যে এই ভোট হয়েছে। তারপরও বিএনপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে বগুড়ার জনগন সেই আসনে যে আসন বেগম খালেদা জিয়ার আসন, যে আসন জিয়া পরিবারের আসন, এই আসনটি যাতে বেহাত না হয়, এই আসনটি যাতে জিয়া পরিবারের কাছে থাকে সেজন্য বগুড়ার মানুষ ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করেছে।”

তিনি বলেন, ‘‘ সারাদেশে আমাদের হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা-হামলা এবং মাঠেও আমরা যেতে পারিনা, বক্তৃতা দিতে পারি না, মিছিল করতে পারি না। মিলাদ মাহফিল করলে পুলিশের অনুমতি লাগে। সেখানে আমরা ৬জন হই, ৭ জন হই আমরা সংসদের ভেতরে-বাইরে যখন স্পিকারের অনুমতি নিয়ে ২/৪ মিনিট কথা বলতে পারবো- ১০ কোটি মানুষ শুনবে, গণতন্ত্রের মুক্তি কথা শুনবে, আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবির কথা শুনবে।”

‘‘ বিনা অপরাধে মিথ্যা মামলায় আমাদের নেতা তারেক রহমান আজকে নির্বাসিত। তিনি দেশে প্রত্যাবর্তন করতে পারবেন- সেটা আমরা সংসদে বলতে পারবো। সবচেয়ে বড় কথা মানুষ আজকে বাকরুদ্ধ। গণমাধ্যমের সাংবাদিকদেরও আইন-কানুন দিয়ে কন্ঠরোধ করে রাখা হয়েছে, জনগনের পক্ষে আমরা সংসদে কথা বলব।”

নির্বাচন কমিশন ভোটের ফলাফলের গ্যাজেট হলে সংসদ সদস্য নিয়ে শপথ নেবেন বলে জানান জি এম সিরাজ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন