বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

আর্জেন্টিনার সুযোগ, তবুও আশায় ব্রাজিল

প্রকাশের সময় : ৩ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক: ফুটবলের পাড় ভক্ত হলে আজ রাতে নিশ্চয় একটু বাড়তি প্রস্তুতি নিয়েই ঘুমাতে যাবেন। না হলে উপায় কি? বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের নিয়ে আজ (বাংলাদেশ সময় আগামীকাল সকাল) থেকেই যে শুরু হচ্ছে বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম এক আসর। না, ইউরো ২০১৬ নয়, কোপা আমেরিকা সেন্তেনারিও। উদ্বোধনী দিনে মুখোমুখী হবে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র ও ভাবছেন কোপা আমেরিকা তো গত বছরই না হয়ে গেল? ঠিকই ধরেছেন। সাথে এটাও নিশ্চয় জানেন বৈশ্বিক ফুটবল প্রতিযোগিতায় এখনো টিকে আছে এর মধ্যে সবচেয়ে পুরাতন আসর কোপা আমেরিকা। ২০১৬ সালে আসরটি পা রেখেছে একশ’ বছরে। শতবর্ষী উপলক্ষেই কোপার এই বিশেষ আয়োজন। ল্যাটিন শব্দ ‘সেন্তেনারিও’ অর্থই হল ‘শতবর্ষ পূর্তি’। আজ থেকে ঠিক একশ’ বছর আগে স্বাগতিক আর্জেন্টিনা এবং প্রতিবেশি তিন রাষ্ট্র ব্রাজিল, চিলি ও উরুগুয়েকে নিয়ে যাত্রা হয় কোপার। শুরুর বছরেই আর্জেন্টিনাকে কাঁদিয়ে শিরোপা দখলে নিয়েছিল উরুগুয়ে। এখন পর্যন্ত এই উরুগুয়েই আসরের সফলতম দল। ১৫ বার আসরের চ্যাম্পিয়ন তারা, সর্বশেষ ২০১১ সালে। ১৪ বারের সেরা আর্জেন্টিনা, ৮ বার ব্রাজিল। আরও আশ্চর্য হল আর্জেন্টিনা আসরে শেষ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল প্রায় সিকি শতাব্দি আগে, ১৯৯৩ সালে! ঐবারই নয়া সংস্করণে যাত্রা শুরু করে কোপা। এরপর তিন বার ফাইনাল খেলেও শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হয়নি তাদের। গেল বছর স্বাগতিক চিলির কাছে টাইব্রেকারে হারের ক্ষতটা তো মেসি-ডি মারিয়াদের এখনো গদগদে। অপরদিকে ওটিই ছিল চিলির আসরের প্রথম শিরোপা। এর আগের দুই ফাইনালে (২০০৪ ও ২০০৭) সাদা-আকাশীদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল। সব মিলে কোপার এটি ৪৫তম আসর। দক্ষিণ আমেরিকান ১২টি দেশ এই টুর্নামেন্টে অংশ নেয়। তবে এবারই প্রথম ১৬ দলের অংশগ্রহণে শুরু হচ্ছে এই বিশেষ আসর। ল্যাতিন আমেরিকার শীর্ষ ১০ দলের সাথে যোগ দিচ্ছে কনকাকাফ থেকে ৬টি দল। সরাসরি অংশ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো। হাইতি ও পানামা সুযোগ পেয়েছে প্লে-অফের বাধা অতিক্রম করে। উত্তর আমেরিকার বাকি দুই দল ২০১৪ সালের কোপা মধ্যআমেরিকা চ্যাম্পিয়ন কোস্টারিকা ও একই বছরের ক্যারাবিয়ান চ্যাম্পিয়ন জ্যামাইকা। আর্থিক বিষয়ের কথা মাথায় রেখেই প্রথমবারের মত কোপার আয়োজক দেশ যুক্তরাষ্ট্র।
কোপার এই বিশেষ আসর বেশ কয়েকটি দেশের জন্যে বয়ে এনেছে বিেিশষ সুযোগ। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটানোর এবারই সবচেয়ে বড় সুযোগ আর্জেন্টিনার জন্য। আরো ছোট করে বললে সুযোগটা সময়ের সেরা খেলোয়াড় লিওনেল মেসির জন্যে। ফিফা র‌্যাংকিংয়ের শীর্ষস্থান ধরে রেখেই লড়াইয়ে নামবে তারা। তবে হন্ডুরাসের সাথে প্রস্তুতিমূলক ম্যাচে লো ব্যাক ইনজুরিতে পড়া মেসিকে নিয়ে একটু সংশয় থেকেই যাচ্ছে। অবশ্য আর্জেন্টাইনরা লড়াইয়ে নামবে তিন দিন পর। জাতীয় দলের হয়ে শিরোপা শূন্যতা ঘোচানোর এটাই হয়তো বিশেষ সুযোগ ৫ বারের বিশ্ব সেরার সামনে। লুউস সুয়ারেজের উরুগুয়েও চাইবে নিজেদের সম্মানটা আরো উঁচুতে নিয়ে যেতে। এজন্য অবশ্য উরুগুয়ানদের বড় একটা ধাক্কা সামলাতে হবে। ধাক্কাটা দলের সবচেয়ে বড় তারকা পিচিচি ট্রফি জয়ী সুয়ারেজকে নিয়ে। কোপা দেল রের ফাইনালে হ্যামিস্ট্রিং চোট নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছাড়েন বার্সার হয়ে দুর্দান্ত মৌসুম কাটানো স্ট্রাইকার। যদিও দল কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলে তাকে দেখা যেতেও পারে।
কোপার অন্যতম ফেভারিট ব্রাজিলের সামনেও সুযোগ নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করার। তবে আসর যতই ঘনিয়ে আসছে ততই যেন একের পর এক আঘাতে জর্জরিত হচ্ছে ৫ বারের বিশ্বচ্যামিয়নরা। আগেই নিশ্চিত ছিল কোচ কার্লোস দুঙ্গার দলে নেইমারের না থাকাটা। বার্সার সাথে ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনের সমঝতা অনুযায়ী কোপা অথবা অলিম্পিক যে কোন একটি আসরে খেলার সুযোগ ছিল নেইমারের। ঘরের মাঠে অনুষ্ঠেও অলিম্পিকে স্বর্ণক্ষরা ঘোচানোর লক্ষ্যে ব্রাজিল ফেডারেশন ও নেইমার বেছে নেন অলিম্পিক। এছাড়া সেলেসাও দলে বাঁধ সেজেছে ইনজুরি সমস্যা। দলের নিয়তি মুখ ডগ্লাস কস্তা চোটে পড়ায় প্রথমবারের মত কোপায় খেলার স্বপ্ন দেখছিলেন রিকার্ডো কাকা। কিন্তু বেরসিক চোট জেকে ধরেছে তাকেও। আগত্য ফিফা ২০০৭ বর্ষসেরা ফুটবলারকে বাদ দিয়ে তাই দলে ডাকা হয়েছে গানসোকে। সর্বশেষ ২০১২ সালে জাতীয় দলের হয়ে খেলেছিলেন গানসো। পেশির চোট নিয়ে ছিটকে গেছেন দলের আরেক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় রাফিনহো। বার্সা মিডফিল্ডারের পরিবর্তে দলে ডাকা হয়েছে পিএসজি মিডফিল্ডার লুকাস মউরাকে। এছাড়া কোপায় খেলার স্বপ্ন ভেঙ্গে গেছে এদেরসনেরও। কুচকির চোটে ভুগছেন বেনফিকার এই গোলরক্ষক। তার জায়গায় ডাকা হয়েছে ঘরোয়া ক্লাব গ্রেমিওতে খেলা ২৯ বছর বয়সী মার্সেলো গ্রোহেকে। এরপরও আসরের অন্যতম ফেভারিট দল ভাবা হচ্ছে ব্রাজিলকে।
অ্যালেক্সিস সানসেচ ও আর্তুরো ভিদালের মত তারকাদের নিয়ে শিরোপা ধরে রাখার প্রত্যয় আছে চিলিয়ান কোচ জুয়ান অ্যান্তোনিও পিজ্জির মনেও। দুর্দান্ত মনবল বিশিষ্ঠ একটা দল আছে তার অধীনে। এছাড়া স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্রিকোরও সুযোগ থাকছে তাদের সমর্থ দেখানোর। সব মিলে ফুটবলের দুর্দান্ত এক আসর দেখার প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে পারেন এখনই।

কোপা আমেরিকা গ্রুপিং ও ফিকশ্চার

    গ্রুপ-এ    গ্রুপ-বি    গ্রুপ-সি    গ্রুপ-ডি
    যুক্তরাষ্ট্র    ব্রাজিল    মেক্সিকো    আর্জেন্টিনা
    কলম্বিয়া    ইকুয়েডর    উরুগুয়ে    চিলি
কোস্টা রিকা    হাইতি    জ্যামাইকা    পানামা
প্যারাগুয়ে    পেরু    ভেনেজুয়েলা    বলিভিয়া

তারিখ    সময়    ম্যাচ
৪ জুন    সকাল সাড়ে ৭টা    যুক্তরাষ্ট্র-কলম্বিয়া
৫ জুন    রাত ৩টা    কোস্টারিকা-প্যারাগুয়ে
    ভোর সাড়ে ৫টা    হাইতি-পেরু
    সকাল ৮টা    ব্রাজিল-ইকুয়েডর
৬ জুন    রাত ৩টা    জ্যামাইকা-ভেনেজুয়েলা
    ভোর ৬টা    মেক্সিকো-উরুগুয়ে
৭ জুন    ভোর ৫টা    পানামা-বলিভিয়া
    সকাল ৮টা    আর্জেন্টিনা-চিলি
৮ জুন    ভোর ৬টা    যুক্তরাষ্ট্র-কোস্টারিকা
    সকাল ৮টা    কলম্বিয়া-প্যারাগুয়ে
৯ জুন    ভোর সাড়ে ৫টা    ব্রাজিল-হাইতি
    সকাল ৮টা    ইকুয়েডর-পেরু
১০ জুন    ভোর সাড়ে ৫টা    উরুগুয়ে-ভেনেজুয়েলা
    সকাল ৮টা    মেক্সিকো-জ্যামাইকা
১১ জুন    ভোর ৫টা    চিলি-বলিভিয়া
    সকাল সাড়ে ৭টা    আর্জেন্টিনা-পানামা
১২ জুন    ভোর ৫টা    যুক্তরাষ্ট্র-প্যারাগুয়ে
    সকাল ৭টা    কলম্বিয়া-কোস্টারিকা
১৩ জুন    ভোর সাড়ে ৪টা    ইকুয়েডর-হাইতি
    ভোর সাড়ে ৬টা    ব্রাজিল-পেরু
১৪ জুন    ভোর ৬টা    মেক্সিকো-ভেনেজুয়েলা
    সকাল ৮টা    উরুগুয়ে-জ্যামাইকা
১৫ জুন    ভোর ৬টা    চিলি-পানামা
    সকাল ৮টা    আর্জেন্টিনা-বলিভিয়া

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন