শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ঐক্যফ্রন্ট লক্ষ্য অর্জনে চরম ব্যর্থ : মান্না

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ জুন, ২০১৯, ১২:০৭ পিএম

ঐক্যফ্রন্ট লক্ষ্য অর্জনে চরম ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ফ্রন্টের অন্যতম নেতা নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, ‘শুধু ঘরে বসে বসে ত্যানা ছেড়ার কাজ করলে কোনো কাজ হবে না। কাজ তখনই হবে যদি কাঁথা সেলাই করার মতো কাজ করতে পারি। আমি এখনও জানি না ভোট চুরি নয়, ভোট ডাকাতির ৬ মাস হয়েছে। এ ৬ মাস কত মাসে গিয়ে ঠেকবে তাও জানি না। কিন্তু আমরা আজও রাজপথে নেমে এ নির্লজ্জ ভোট ডাকাতির কোনো প্রতিবাদ করতে পারলাম না।’

‘ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র চাই, কল্যাণ রাষ্ট্র গড়তে চাই’- শীর্ষক এক আলোচনা সভায় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মান্না এসব কথা বলেন। সামাজিক সংগঠন থেকে নাগরিক ঐক্যের রাজনৈতিক দল হিসেবে দুই বছর পূর্তিতে শুক্রবার বিকেলে সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে এ আলোচনা সভা হয়।

দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘নিজেরা নিজেদের প্রস্তুত করুন। সংগঠনকে বিস্তৃত করুন। অন্য কারও ওপর ভরসা করে লাভ নেই। আমরা কারও ওপর ভরসা করে চলিনি। আমাদের শক্তিতেই চলতে চেয়েছি। তবে আমাদের শক্তি এত বেশি নয় যে একাই পারব। অতএব অন্যদের সঙ্গে মিলি। অন্যদের সঙ্গে যোগ দিয়ে শক্তিটা বৃদ্ধি করি। শক্তিবৃদ্ধি করে লড়াই করে জয় ছিনিয়ে আনি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের চিন্তার মধ্যে ভুল ছিল সেটা আমি বলব না। কিন্তু আমরা যাদের যাদের সঙ্গে এ সম্পর্ক করে সামনের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলাম, তারা মনে মনে আগেই তাদের জায়গায় পৌঁছে গেছে। তারপর স্বপ্ন যখন ভেঙে গেছে তখন মনে হয়েছে একি আমিতো পথের মাঝেই দাঁড়িয়ে ছিলাম। ওরা আমার সাথে থেকে লাভ কী? অতএব নতুন করে ভাবছি।’

বরগুনায় রিফাত হত্যার ঘটনা শুধু হিন্দি ছবিতেই দেখা যায় উল্লেখ করে মান্না বলেন, ‘বরগুনাতে যখন এ ঘটনা ঘটলো তখন সবাই রাতে টিভিতে দেখেছেন অথবা ফেসবুকে দেখেছেন। আমি পরদিন দুইজন মানুষকে ফোন করেছিলাম, তারা কাঁদতে কাঁদতে বললেন, এ কি আমাদের বাংলাদেশ! একটা যুবক ছেলেকে বিনা কারণে বিনা দোষে কুপিয়ে হত্যা করলো। আর শত শত মানুষ তাকিয়ে তাকিয়ে দেখলো, অথচ এ বাংলাদেশতো মুক্তিযুদ্ধ করেছিল। এই বাংলাদেশ ৫২ সালে ভাষার জন্য লড়াই করেছিল। কোনো একজন যদি যেত, লড়াই করতো, ওই চাপাতি ধরে ফেলতো। দেশ এখন উল্টো রথে চলে, চলছে। দেশে কোনো আইনের শাসন নাই, বিচার নাই। দেশে কোনো নির্বাচন নাই, দেশে কেবল ডাকাতি আছে। জনগণের অধিকার ডাকাতি করে নিয়ে যাচ্ছে, এ হলো দেশ। লড়াই যদি করতে হয়, লড়াইয়ের মতো লড়াই করতে হবে।’

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে মান্না বলেন, ‘আমরা এখনও এক সাথে চলি, চলতে চাই। পরস্পর পরস্পরকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু এ প্রশ্ন মানুষ করছে, ৩০ তারিখের পর ছয় মাস পার হয়ে গেলো একটাও কর্মসূচি দিতে পারলেন না কেন? যখন নির্বাচন নির্বাচন খেলা চলছিল, একটার পর একটা গায়েবী মামলা দেয়া হচ্ছিল। বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীর নামে লাখ লাখ মামলা হচ্ছিল। আমরা প্রতিবাদ করছিলাম। সেই সময় আমরা দেশের প্রধানমন্ত্রীর সাথে সংলাপে বসেছিলাম। সংলাপে উনি বললেন, আমাকে একবার বিশ্বাস করেন। আমি বঙ্গবন্ধুর মেয়ে। আমি কথা দিচ্ছি, এই ভোট সম্পূর্ণ ভালো হবে। কোনো রকম হস্তক্ষেপ করা হবে না। আমাদের পক্ষ থেকে বলা হলো সারাদেশের যে পরিস্থিতি, আমাদের নেতাকর্মীরা বাড়িতে যেতে পারে না, নির্বাচনী এলাকায় যেতে পারে না, তাহলে নির্বাচন হবে কীভাবে। তিনি বলেন, কেন? মনে হয় উনি কিছুই জানেন না। ওনাকে আমরা বললাম, নেতাকর্মীদের নামে গায়েবী মামলা। সে এলাকায় গেলেই গ্রেফতার হবে। উনি বললেন, আপনাদের কাছে কোনো লিস্ট আছে? এটা কি সত্যি ঘটনা? লিস্ট দিন আমি ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমরা পরদিন লিস্ট দিয়েছি। সেই লিস্ট উনি পড়ে দেখেছেন কি না সে কথা ঐক্যফ্রন্টের কোনো নেতা কি জানেন? জানেন না, কিন্তু গ্রেফতার, হয়রানি বন্ধ হয়নি। গায়েবী মামলাও বন্ধ হয়নি।’

মাহমুদুর রহমান মান্নার সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা এসএম আকরাম, দলের নেতা মঈনুল ইসলাম, এলডিপি নেতা ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Citizen ২৯ জুন, ২০১৯, ১:৩৫ পিএম says : 0
Nation needs a practical program of movement to reach the goal. Today we should all be united not divided. Target must be determined. We should see towards future not past. People are ready to cooperate. Leaders should announce what is to be done.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন