মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে বাধা নেই

প্রকাশের সময় : ৩ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর হাতিরঝিলে অবস্থিত বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারিং এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) ভবনটিকে ভাঙতে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। গতকাল বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র করা আপিল আবেদন খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের বেঞ্চ। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার। ফলে হাতিরঝিল প্রকল্প সংলগ্ন লেক দখল করে গড়ে ওঠা বিজিএমইএ’র বহুতল এ ভবনটি ভাঙতে আইনগত কোনো বাধা রইল না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। আদালতে বিজিএমইএ’র পক্ষে ছিলেন প্রবীণ আইনজীবী রফিক-উল হক ও কামরুল হক সিদ্দিকী। রাষ্ট্রপক্ষে এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। পরিবেশবাদী সংগঠনের পক্ষে ছিলেন এডভোকেট মনজিল মোরসেদ। এ বিষয়ে এ মামলার এমিকাস কিউরি মনজিল মোরসেদ বলেন, করে ৯০ দিনের মধ্যে বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে হবে। তিনি আরো বলেন, আপিল বিভাগ বলেছেন, দেশের সবচেয়ে সৌন্দর্যম-িত স্থান হাতিরঝিলের জন্য বিজিএমইএ ভবন একটি বিষফোঁড়া।
হাইকোর্ট রায়ে বলেছিল, বিজিএমইএ ভবনটি সৌন্দর্যম-িত হাতিরঝিল প্রকল্পে একটি ক্যান্সারের মতো। এ ধ্বংসাত্মক ভবন অচিরেই বিনষ্ট না করা হলে এটি শুধু হাতিরঝিল প্রকল্পই নয়, সমস্ত ঢাকা শহরকে সংক্রমিত করবে। হাইকোর্ট ২০১১ সালে এক রায়ে জলাধার রক্ষা আইন লঙ্ঘন করে হাতিরঝিলে গড়ে তোলা বহুতল ভবনটি ভাঙার নির্দেশ দেয়। দুই বছর পর রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর তার বিরুদ্ধে আপিলের এই আবেদন করে বিজিএমইএ।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১০ সালের ২ অক্টোবর রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অনুমোদন ছাড়া বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ বিষয়ে একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনটি আদালতের দৃষ্টিতে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ডি এইচ এম মুনিরউদ্দিন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ৩ অক্টোবর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল দেন। রুলে বিজিএমইএ ভবন ভাঙার নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১১ সালের হাইকোর্ট বেঞ্চ বিজিএমইএ ভবন অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়। এতে স্থগিতাদেশ চেয়ে করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ৫ এপ্রিল চেম্বার বিচারপতি হাই কোর্টের রায়ের ওপর ছয় সপ্তাহের স্থগিতাদেশ দেন। ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ ভবনটি ভেঙে ফেলতে হাইকোর্টের দেয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। এরপর ওই বছর ২১ মে বিজিএমইএ লিভ টু আপিল করে। হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়, বিজিএমইএ যাদের কাছে ওই ভবনের ফ্ল্যাট বা অংশ বিক্রি করেছে, দাবি পাওয়ার এক বছরের মধ্যে তাদের টাকা ফেরত দিতে হবে। ক্রেতাদের সঙ্গে ওই চুক্তি ছিল বেআইনি। কারণ, ওই জায়গায় ভবন নির্মাণ বা কোনো অংশ কারও কাছে বিক্রির কোনো অধিকার বিজিএমইএ’র ছিল না। রায়ে আরো বলা হয়, আর্থিক পেশীশক্তির অধিকারী বলে শক্তিশালী একটি মহলকে আইনের ঊর্ধ্বে রাখতে হবে, এমন যুক্তি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা হিসেবে বিজিএমইএ’র আইনের প্রতি আরও বেশি শ্রদ্ধাশীল হওয়া বাঞ্ছনীয় ছিল। তারা তা না করে আইনকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছে।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে ১৯৯৮ সালে বিজিএমইএ তাদের প্রধান কার্যালয় ভবন নির্মাণের জন্য সোনারগাঁও হোটেলের পাশে বেগুনবাড়ী খালপাড়ের এ জায়গাটি নির্ধারণ করে এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর কাছ থেকে ৫ কোটি ১৭ লাখ টাকায় জমিটি কেনে। ওই বছরের ২৮ নভেম্বর ভবনটি তৈরির কাজ শুরু হয়। ভবনটি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নকশা অনুযায়ী করা হয়নি বলে রাজউক বলে আসছিল। পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠনও ভবনটি ভাঙার দাবি জানিয়ে আসছিল।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
এস, আনোয়ার ৬ মার্চ, ২০১৭, ৬:৪১ পিএম says : 0
আইনকে বাধা দেবার ক্ষমতা কারোই নেই। কিন্তু এই ক্ষেত্রে বিশাল একটা আর্থিক ক্ষতিতো হয়েই যাবে। রাজউক যখন জানতোই যে, তার অনুমোদন ছাড়া বিশাল একটা ভবনের ভিত্তি স্থাপন করা হচ্ছে ঠিক তখনই রাজউক এর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাগন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাহায্য নিয়ে কাজ বন্ধ করে দিলেই পারতেন। তাহলে এখন আর এই কোটি কোটি টাকার গচ্চাটা দিতে হতো না। গচ্চার টাকাটা যারই হোকনা কেন আমাদের দেশেরতো।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন