একটি সেতুর জন্য দুর্ভোগের শেষ নেই কয়েকটি গ্রামের প্রায় দশ হাজার মানুষের। পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের বাসিন্দারা দীর্ঘদিন থেকে সেতুর দাবী করলেও কোন কাজ হয়নি বলে তাদের অভিযোগ।
দক্ষিন দূর্গাপুর, ডুংডুংগি, চা-পাতি, রবীন মার্কেট, রানীগঞ্জ, চৌমুহনি গ্রামের মানুষের জন্য পারাপারের জন্য বর্তমানে একটি বাঁশের সাকোই একমাত্র ভরসা। বাঁশের এই সাকোটিও কয়েক গ্রামের মানুষ চাঁদা তুলে নিজেদের উদ্যোগে নির্মাণ করেছে।
এলাকাবাসীরা জানায় জেলা শহর, বিভিন্ন উপজেলাসহ হাটবাজারের সাথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই সাকো। এর দুই পাশে রয়েছে একটি হাইস্কুল, দুইটি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং একটি মাদরাসা। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। শিক্ষার্থীদের চলা ফেরার একমাত্র মাধ্যম এই সাকো। বর্ষাকালে পানি বেশি হলে চলাফেরায় ভয় পায় শিক্ষার্থীরা। বাঁশ দিয়ে নির্মিত হওয়ায় আশঙ্কা থাকে দুর্ঘটনার। শিক্ষক শিক্ষার্থীরা সময়মতো প্রতিষ্ঠানে পৌছাতে পারে না। অন্যদিকে হঠাৎ কোন রোগে আক্রান্ত রোগীদের তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে পৌছানোর কোন উপায় নেই এলাকাবাসীর। এলাকার ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন সেতুর অভাবে তারা জিনিষ পত্রের সঠিক মূল্য পাচ্ছেন না। সময় মতো হাট বাজারে মালামাল পৌছাতে পারে না তারা। সেতুর অভাবে এই এলাকায় ট্রাক, বাস এবং অন্যান্য যানবাহন চলাচল করছে না।
স্থানীয় দক্ষিণ দূর্গাপুর গ্রামের নরেশ চন্দ্র বর্মন (৯৮) ইনকিলাবকে বলেন হামরা গাঁও গ্রামের মানুষ। ম্ইু কতদিন হাতে শুনেছু হামার এইঠে একখান পুল হইবে, কিন্তু কয়বার মাপাযোখ নিয়ে গেল হামার পুল আর হয়না, গ্রামের ছুয়া পুতালা ইস্কুল যাবার বেলা ঐ খটখটি খানত খালি পরে যাছে। ডুংডুংগী এলাকার যশোদা রানী (৩৮) ইনকিলাবকে বলেন আমাদেরও বাড়ির বৌয়ের সন্তান প্রসবের ব্যাথা উঠলে সেতু না থাকায় আমরা এ্যম্বুলেন্স আনতে পারিনি, পরে বাড়িতেই প্রসব করাতে হয়েছে। স্কুল শিক্ষার্থী রতন কুমার বলে বর্ষা আসলে এই নড়বরে বাঁশের সাকো দিয়ে চলাচল খুব কষ্ট হয়।
আটোয়ারী উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু জাহিদ ইনকিলাবকে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে বার বার যোগাযোগ করা হলেও কোন কাজ হয়নি।
আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন সুলতানা ইনকিলাবকে বলেন পঞ্চগড় এবং ঠাকুরগাঁও জেলার সীমানা নির্ধারণের জটিলতার ফলে দীর্ঘদিন যাবত এই সেতু নির্মাণ হচ্ছে না তবে দুই জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে, তারা এ সমস্যা সমাধানের আশ^াস দিয়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন