তামিম ইকবালের কাছে বাংলাদেশ দলের প্রত্যাশা ছিল অনেক। কিন্তু বিশ্বকাপে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ব্যাট হাতে আরেকটি সাদামাটা বিশ্বকাপ কাটানো তামিম অবশ্য পাচ্ছেন স্টিভ রোডসের সমর্থন। সফলতা না পেলেও শিষ্যের আন্তরিকতায় কোনো ঘাটতি দেখছেন না টাইগার কোচ।
এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের তৃতীয় সেরা সংগ্রাহক তামিম ইকবাল। সাত ইনিংসে ৩২.৪২ গড়ে ২২৭ রান করেছেন তিনি। স্ট্রাইক রেট ৭৩.৯৪। কিন্তু এই পারফরম্যান্স তামিমের নামের সঙ্গে ঠিক মানানসই নয়। গেল চার বছরের পরিসংখ্যান ঘাঁটলেই বোঝা যায়। ২০১৫ সালে তামিমের ব্যাটিং গড় ছিল ৪৬.৩৮, ২০১৬ সালে ৪৫.২২, ২০১৭ সালে ৬৪.৬০ ও ২০১৮ সালে ৮৫.৫০।
চলমান আসরে প্রতিটি ম্যাচেই দুই অঙ্কে পৌঁছেছেন তামিম। জাগিয়েছেন বড় ইনিংস খেলার সম্ভাবনা। তবে আশার বেলুন চুপসে যেতেও সময় লাগেনি। কেবল একটি ম্যাচেই পেয়েছেন হাফসেঞ্চুরি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে করেছিলেন ৬২ রান। তার বাকি ইনিংসগুলো হলো যথাক্রমে ১৬, ২৪, ১৯, ৪৮, ৩৬ ও ২২।
উইকেটে মানিয়ে নেওয়ার পর বারবার অল্প রানে আউট হওয়ায় তামিমের ব্যাটিং কৌশল নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তাছাড়া তিনটি বিশ্বকাপে (২০০৭, ২০১১ ও ২০১৫) খেলার অভিজ্ঞতা ইংল্যান্ডের মাটিতে কাজে লাগাতে না পারায় বিভিন্ন মহলে চলছে সমালোচনা। বিশেষ করে বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তরা এ নিয়ে খুবই সরব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। তবে রোডস আশাবাদী। তার বিশ্বাস, এবার না পারলেও আগামী বিশ্বকাপে তামিম ঠিকই ভালো করবেন, ‘আমি বলব, তামিমের পারফরম্যান্সে আন্তরিকতা ছিল। বেশি রান করতে পারলে অবশ্যই তার ভালো লাগত কারণ যে পরিমাণ রান সে করেছে (ক্রিকেটের বিভিন্ন ফরম্যাটে), সেটা গর্বের ব্যাপার। তবে সে খুবই আন্তরিক ছিল এবং নিজের সেরা চেষ্টাটা করেছে। কিন্তু কখনও কখনও কোনোকিছু হওয়ার থাকে না। এই যেমন, আজ (পরশু) সে দারুণ কিছু শট খেলেছে। আমি ভাবছিলাম, এটাই বুঝি তার দিন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সেটা হয়নি। কিন্তু সে নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টাই করেছে। আর আমি নিশ্চিত, আরেকটি বিশ্বকাপে অর্থাৎ ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপে সে ভালো কিছু করার সুযোগ পাবে। কারণ চার বছর পরের বিশ্বকাপে খেলার জন্য সে যথেষ্ট তরুণ।’
বাঁচা-মরার ম্যাচে বোলাররা লক্ষ্যটা রেখেছিলেন নাগালে। মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এগিয়ে আসতে পারলেন না ব্যাটসম্যানরা। দলকে উপহার দিতে পারলেন না বড় কোনো জুটি। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা মনে করেন, একটা ৮০-৯০ রানের জুটি গড়তে পারলে হয়তো চিত্রটা ভিন্ন হতো। ম্যাচ শেষে অধিনায়ক জানান, জেতার জন্য একটা বড় জুটি খুব প্রয়োজন ছিল, ‘টিকে থাকতে এই ম্যাচটা আমাদের জিততেই হতো। আমরা তা করতে পারিনি। জেতার জন্য একটা ৮০ থেকে ৯০ রানের জুটি প্রয়োজন ছিল।’
ম্যাচে বাংলাদেশ ৩০ ছাড়ানো জুটি পেয়েছিল পাঁচটি। এর কেবল একটি ছাড়াতে পেরেছে পঞ্চাশ। সপ্তম উইকেটে ৬৬ রানের জুটি গড়েন সাব্বির রহমান ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। হেরে যাওয়া ম্যাচে কিছু প্রাপ্তি দেখছেন মাশরাফি, ‘মুস্তাফিজ আজকে (পরশু) ভালো বোলিং করেছে। সাকিব ও মুশফিক ভালো ব্যাটিং করেছে। ওরা টুর্নামেন্ট জুড়েই ভালো করছে।’ আগামীকাল লর্ডসে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে এবারের আসর শেষ হবে বাংলাদেশের। শেষটা ভালো করতে উন্মুখ অধিনায়ক।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন