শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

প্রবাস জীবন

লন্ডনে ৩২ ছাত্রের পাগড়ী লাভ

দারুল হাদীস লাতিফিয়ার গ্র্যাজুয়েশন ও ৪০ বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠিত

প্রেস বিজ্ঞপ্তি : | প্রকাশের সময় : ৪ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

ব্রিটেনে গত সোমবার দারুল হাদীস লাতিফিয়ার গ্র্যাজুয়েশন, ৪০ বর্ষপূর্তি ও ডিনার অনুষ্ঠানে শিক্ষা


শামসুল উলামা আল্লামা ফুলতলী ছাহেব (রহ.) প্রতিষ্ঠিত ব্রিটেনের ঐতিহ্যবাহী ইসলামিক প্রতিষ্ঠান দারুল হাদীস লাতিফিয়ার গ্র্যাজুয়েশন, ৪০ বর্ষপূর্তি ও ডিনার অনুষ্ঠান গত সোমবার ইস্ট লন্ডনের স্থানীয় একটি ব্যানকুইটিং হলে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থেকে কামিল (টাইটেল) উত্তীর্ণ ছাত্রদের পাগড়ী পরিয়ে হাতে সনদ তুলে দেন মাদরাসার ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান শায়খুল হাদীস আল্লামা ইমাদ উদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শায়খুল হাদীস আল্লামা হবিবুর রহমান, বেথনালগ্রীন ও বো আসনের এমপি রোশনারা আলী এমপি, টাওয়ার হ্যামল্যাটসের নির্বাহী মেয়র জন বিগস, ডেপুটি মেয়র সিরাজুল ইসলাম, বিশ্বনাথ-বালাগঞ্জের সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরী, আল্লামা মোজাহিদ উদ্দীন চৌধুরী দুবাগী, মুসলিম হ্যান্ডস বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার মাওলানা গুফরান আহমদ চৌধুরী, মাদরাসার গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান আল্লামা হাফিজ আব্দুল জলিল, ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য আলহাজ্জ বশির উদ্দীন আহমদ, দারুল হাদীস লাতিফিয়া নর্থওয়েস্টের প্রিন্সিপাল মাওলানা সালমান আহমদ চৌধুরী প্রমুখ। 

দারুল হাদীস লাতিফিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা মুহাম্মদ হাসান চৌধুরী ফুলতলীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠানে কামিল (টাইটেল) উত্তীর্ণ ৩০ জন ও হিফজ সম্পাদনকারী ২ জন ছাত্র পাগড়ী ও সনদ লাভ করেন।
মাওলানা ফরিদ আহমদ চৌধুরী ও মাওলানা মারুফ আহমদ এর যৌথ পরিচালনায় দুই পর্বের এই অনুষ্ঠানে মাদরাসার পেট্রনদের হাতে সনদও তুলে দেয়া হয়। শতাধিক পেট্রন আল্লামা ইমাদ উদ্দীন চৌধুরী ফুলতলীর কাছ থেকে সনদ গ্রহণ করেন। মাদরাসার বিগত বছরের সাফল্য ও ইতিহাস তুলে ধরে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন ও ভিডিও ডকুমেন্টারি দর্শকদের সামনে তুলে ধরেন মাদরাসার অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রিন্সিপাল মাওলানা মুশাররফ হোসাইন ইমরান।
অনুষ্ঠানে কুরআনে পাক থেকে তিলাওয়াত করেন হাফিজ মাওলানা আনহার আহমদ, ক্বারী আব্দুল ওয়াহীদ, ইয়াহইয়া আলী ও হামযা কাসিম। নাশিদ পরিবেশন করেন মাহির উদ্দিন ও লোকমান আহমদ মারুফ। অনুষ্ঠানের শেষে নৈশভোজের মাধ্যমে মেহমানদেরকে আপ্যায়ন করা হয়।
উল্লেখ্য, ব্রিটেনের অন্যতম প্রাচীন এই দ্বীনী প্রতিষ্ঠান উপমহাদেশের প্রখ্যাত বুযুর্গ হযরত আল্লামা আব্দুল লতিফ চৌধুরী ফুলতলী (রহ.) ১৯৭৮ সালে আদর্শ মুসলিম ব্রিটিশ নাগরিক গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রধান অতিথির নসীহতমূলক বক্তব্যে হযরত আল্লামা ইমাদ উদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী বলেন, আজকে যারা কামিল পাশ করে পাগড়ী লাভ করলেন তারা কতই না সৌভাগ্যবান। এই পাগড়ীর মর্যাদা তাদেরকে রক্ষা করে চলতে হবে। কুরআন ও হাদীস শরীফ থেকে যে শিক্ষা তারা লাভ করেছেন, তা অন্যের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। হাদীসের একজন খাদিম হিসেবে নিজেকে নিয়োজিত করে ফিতনা-ফাসাদের এই যুগে তাদেরকে ইসলামের সঠিক-সুন্দর রূপ ব্রিটেন ও ইউরোপীয় সমাজে তুলে ধরতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শায়খুল হাদীস হযরত আল্লামা হবিবুর রহমান বলেন, হাদীসের সনদের সাথে যারা নিজেদেরকে আজ সম্পৃক্ত করলেন, এটা খুবই বড় প্রাপ্তি। এর মাধ্যমে আল্লাহর রাসূল (সা.) এর সাথে নিজের সম্পর্ক সুদৃঢ় করার পথ উন্মুক্ত হয়। আজকের এই দিনে উপস্থিত থাকলে সবচেয়ে বেশি যিনি খুশী হতেন তিনি হলেন এই মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা আল্লামা ছাহেব ফুলতলী (রহ.)। তার হাতে রোপণ করা বাগানে আজ ফুল ফুটতে শুরু করেছে। সেই ফুলের সৌরভ বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়বে, সমাজ ও দেশকে আলোকিত-সুরভিত করবে এটা আমাদের বিশ্বাস। আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে তার দ্বীনের খাদিম হিসেবে কবুল করুন।
বেথনালগ্রীন ও বো আসনের এমপি রোশনারা আলী বলেন, এ রকম ঐতিহ্যবাহী একটি প্রতিষ্ঠান আমার নির্বাচনী এলাকাতে হওয়াতে আমি খুবই গর্বিত। স্কুলের অর্জন সমাজ ও উন্নয়নে তাদের ভূমিকা আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমি আশা করবো এদের মাঝ থেকেই ব্রিটেনের ভবিষ্যত নেতৃবৃন্দ বেরিয়ে আসবে। ইসলাম এবং মুসলমানদেরকে বৈষম্য-নির্যাতন-নিপীড়ন থেকে উত্তরণে কেবল জাতীয় পর্যায়ে নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও দারুল হাদীস লাতিফিয়ার গ্র্যাজুয়েটরা অবদান রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
টাওয়ার হ্যামলেটস এর নির্বাহী মেয়র জন বিগস্ স্কুলের প্রসংশা করে বলেন, বহুজাতিক ব্রিটেনে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও ভালবাসার মাধ্যমে একটি সহনশীল সমাজ গঠনে দারুল হাদীস লাতিফিয়া অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। এ ধরনের স্কুল সমাজে পজিটিভিটি পরিবর্তন নিয়ে আসে। আমি আজকের গ্র্যাজুয়েটদেরকে কনগ্র্যাচুলেশন জানাই এবং টাওয়ার হ্যামলেটস এর বিভিন্ন বিভাগে তারা তাদের যোগ্যতা দিয়ে প্রবেশ করে এই বারাকে আরো উন্নততর পর্যায়ে নিয়ে যাবে বলে আমি মনে করি।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফয়জুল আলী, গ্র্যাজুয়েটদের পক্ষ থেকে হাফিজ মাওলানা আব্দুল ওয়াছী আরিফ, মাদরাসার ছাত্র হাফিজ হোসাইন আহমদ ওয়াদুদ।
মাহ্ফিলে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত থেকে প্রাণবন্ত এই অনুষ্ঠান উপভোগ করেন তানজানিয়ান রিপেয়ে-এর প্রেসিডেন্ট হারুন নাবিয়ূ, টাওয়ার হ্যামলেটসের ডেপুটি স্পিকার আহবাব হোসাইন, আল-ফালাহ স্কুল এর শায়েখ আমীর, ওয়েস্ট আফ্রিকান কমিউনিটির প্রতিনিধি ইমাম ইব্রাহীম চাম, মুসলিম এসোসিয়েশন নাইজেরিয়ার প্রধান ইমাম ইমাম তাজউদ্দীন সালামী, মিনহাজুল কুরআন ইন্টারন্যাশনাল-এর ডাইরেক্টর আল্লামা সাদিক কুরাইশি, কাউন্সিলর শাহ্ সোহেল আমীন, কমিউনিটি নেতা একেএম আবু তাহের চৌধুরী, সাপ্তাহিক সুরমা পত্রিকার সম্পাদক ফরিদ আহমদ রেজা, মাওলানা শামসুদ্দীন নূরী, মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা মুফতি ইলিয়াছ হোসাইন, মুহাদ্দিস মাওলানা নজরুল ইসলাম, মাওলানা শেহাব উদ্দীন, ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল কাহ্হার, মুফতি আশরাফুুর রহমান, মাওলানা আব্দুল আউয়াল হেলাল, ব্রিটিশ মুসলিম স্কুল এর প্রিন্সিপাল মাওলানা এম.এ কাদির আল হাসান, কিথলী শাহজালাল মসজিদের খতীব মাওলানা ফখরুল ইসলাম, বায়তুল আমান মসজিদের খতীব মাওলানা আব্দুল মালিক, আনজুমানে আল ইসলাহ ইউকে’র ভাইস প্রেসিডেন্ট মাওলানা ফখরুল হাসান রুতবাহ, মাওলানা ছাদ উদ্দীন সিদ্দীকী, মানচেস্টার শাহজালাল মসজিদের খতীব মাওলানা খায়রুল হুদা খান, বার্মিহ্যাম মাল্টিপারপাস সেন্টার এর চেয়াম্যান ইমদাদ হোসাইন, মাদরাসার গভর্নিং বডির সদস্য হাফিজ মাওলানা কয়েছুজ্জামান, আলহাজ্জ গোলাম রব্বানী, আবদুল কালাম, নজরুল ইসলাম গজনভী, ব্রিকলেন জামে মসজিদের প্রেসিডেন্ট সাজ্জাদ মিয়া, মুফতি আব্দুর রহমান নিজামী, ক্বারী আব্দুল মুনতাকিম রাহেল, ম্যানচেস্টার শাহজালাল মসজিদের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আলাউদ্দীন, জকিগন্জ ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন এর সভাপতি হামিদুর রহমান চৌধুরী আজাদ, সাবেক সভাপতি মশিউর রহমান শাহীন, হারুনুর রশীদ চৌধুরী, মাদরাসার সেক্রেটারী বদরুল ইসলাম, মাওলানা মুসলেহ উদ্দীন, মাওলানা মোঃ আব্দুল কুদ্দুছ, মাওলানা আব্দুস শহীদ, মাদরাসার শিক্ষক নজমুল হক, হাফিজ মাওলানা আনহার আহমদ, মাওলানা ফয়সাল আহমদ হানাফী, মাওলানা ফারুক আহমদ, হাফিজ আসকির মিয়া, ক্বারী আব্দুল কাদির, হাজী সিরাজ উদ্দীন খান, ক্বারী শরীফ উদ্দীন, মিজান খানসহ অভিভাবকবৃন্দ, শিক্ষাবীদ, স্থানীয় বিভিন্ন স্কুল মাদরাসার প্রধানগণ, কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন মসজিদের ইমাম ও খতীব, মাদরাসার পেট্রনগণ ও শুভাকাক্সক্ষী শুভানুধ্যায়ীবৃন্দ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন