শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

শিরোপা ব্রাজিলের হাতেই

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

টানা দুই বারের চ্যাম্পিয়ন চিলি, রেকর্ড ১৫ বারের চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ে কিংবা লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা কেউই উঠতে পারেনি ফাইনালে। তাই বড় কোনো অঘটন ছাড়া এবারের কোপা আমেরিকার শিরোপা যে ব্রাজিলের হাতেই উঠবে তা অনুমিতই ছিল। অনুমানটা মিথ্যে হয়নি।
পেরুকে হারিয়ে এক যুগ পর কোপা আমেরিকায় শিরোপার স্বাদ পেয়েছে ব্রাজিল। ম্যাচটি ছিল গ্যাব্রিয়েল জেসুসময়। ম্যানচেস্টার সিটি তারকা গোল করিয়েছেন, করেছেন, এরপর অশ্রুসিক্ত নয়নে মাঠ ছেড়েছেন লাল কার্ড দেখে। শেষ ২০ মিনিট দশ জনের দল নিয়ে খেলেও বিপদে পড়তে হয়নি তিতের দলকে।

পরশু রাতে ঐতিহাসিক মারাকানা স্টেডিয়ামে সফরকারী দলকে ৩-১ গোলে হারায় পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। প্রথমার্ধে এভারটনের গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। পেনাল্টি পেয়ে স্কোরবোর্ডে সমতা আনেন পাওলো গুয়েরেরো। বিরতির ঠিক আগ মুহূর্তে সেলেসাওদের এগিয়ে নেন জেসুস। দ্বিতীয়ার্ধের শেষ সময়ে পেনাল্টি পেয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন বদলি নামা রিচার্লিসন। স্বাগতিক হিসেবে এ নিয়ে পাঁচ বারই শিরোপা জিতল ব্রাজিল। সব মিলে প্রতিযোগিতায় এটি তাদের নবম শিরোপা।

ম্যাচ শেষে উচ্ছ¡সিত অধিনায়ক দানি আলভেস বলেছেন, ‘এটা সত্যিই বিশেষ এক শিরোপা। কারণ একসাথে আমরা সবাই মিলে কিছু একটা করে দেখাতে পেরেছি।’

ব্রাজিলের বোসা নোভা সঙ্গীতের জনক হুয়াও গিলবার্তোর মৃত্যুতে ম্যাচের শুরুতে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। ম্যাচের শুরু থেকেই আন্ডারডগ পেরুকে বেশ আত্মবিশ্বাসী দেখা গেছে। তাদের দেখে মনেই হয়নি ব্রাজিলের মত একটি প্রতিপক্ষের বিপক্ষে কোন টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলতে নেমেছে তারা। অথচ গ্রুপ পর্বে এই পেরুকেই ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল ব্রাজিল। দলটির মিডফিল্ডার এডিনসন ফ্লোরেস বলেছেন, ‘এটা এমন একটি ম্যাচ ছিল যেখানে ব্রাজিল আমাদের ভুলের সুযোগ কাজে লাগিয়ে গোল আদায় করে নিয়েছে।’

দুই দলের লড়াইটা ছিল মূলত মিডফিল্ডে। বলের দখলে এগিয়ে থাকলেও আক্রমণে সুবিধা করতে পারছিলেন না এভারটন-জেসুসরা। তবে গোলমুখে তারা সুযোগগুলো কাজে লাগিয়েছে দারুণভাবে। পুরো ম্যাচে তিনটি শটই তারা লক্ষ্যে রাখতে পারে। বিচ্ছিন্ন আক্রমণে দুই অর্ধে দুটি শট লক্ষ্যে রাখতে পারে পেরু।
প্রথম সুযোগেই গোল আদায় করে নেয় তিতের শিষ্যরা। ম্যাচের ১৫তম মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে ডি-বক্সে জেসুসের ক্রস পেয়ে সহজ ভলিতে গ্যালারিতে উল্লাসের উপলক্ষ্য এনে দেন গ্রেমিও ফরোয়ার্ড এভারটন। ৪১তম মিনিটে ডি বক্সে থিয়াগো সিলভার হাতে বল লাগলে পেনাল্টি পায় পেরু। সফল স্পটকিকে স্কোরবোর্ডে সমতা আনেন গুয়েরেরো। প্রথমার্ধের শেষ শটে আবার মারাকানায় উল্লাসের ঢেউ তোলেন জেসুস। আর্থারের বাড়ানো বল ডি বক্সের মাঝে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সহজেই গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন ম্যানচেস্টার সিটি ফরোয়ার্ড।

দ্বিতীয়ার্ধেও খেলার ধারায় তেমন পরিবর্তন আসেনি। ৭০তম মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছাড়েন জেসুস। লাফিয়ে বলের দখল নিতে গিয়ে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়কে কনুই দিয়ে আঘাত করায় দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখানো হয় তাকে। এসময় তিনে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান। ম্যাচ শেষে অবশ্য এজন্য তিনি ক্ষমাও চেয়েছেন।

শেষ ২০ মিনিট প্রতিপক্ষ দলে একজন কম থাকার সুযোগ নিতে পারেনি পেরু। উল্টো ৮৭তম মিনিটে নিজেদের ডি বক্সে এভারটনকে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় ব্রাজিল। স্পট কিক থেকে দলের জয় নিশ্চিত করতে কোনো ভুল করেননি এভারটন।

এই গোলেই নির্ধারণ হয়ে যায় ম্যাচের ভাগ্য। হলুদ গ্যালারিতে ওঠে উল্লাসের ঢেউ। ২০১৬ সালে অলিম্পিকে স্বর্ণ জয়ের পর এটি ব্রাজিলের প্রথম শিরোপা। ২০০৭ সালের পর এই প্রথম লাতিন শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে সেরার স্বীকৃতি পেল তারা।

তিন গোল নিয়ে আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা ও ম্যান অব দ্যা ফাইনাল নির্বাচিত হয়েছেন এভারটন। সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার গোল্ডেন গ্লাভস জিতেছেন ব্রাজিলের আলিসন।

এই জয়ে ইতিহাসে নাম লিখিয়েছেন তিতে। প্রথম কোচ হিসেবে কোপা আমেরিকা, কোপা লেবার্তাদোরেস (কারিন্থিয়ান্স, ২০১২) ও কোপা সুদামেরিকানা (ইন্টারস্যাসিওনাল, ২০০৮) জিতলেন ৫৮ বছর বয়সী এই ব্রাজিলিয়ান।
ব্রাজিল ৩ : ১ পেরু

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন