শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

প্রসবকালীন মাতৃমৃত্যুর হার কমেছে- সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী

বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস কাল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ জুলাই, ২০১৯, ৮:৪৭ পিএম

প্রসবকালীন মাতৃমৃত্যুর হার কমেছে। ২৫ বছর আগে স্বল্প আয়ের দেশসমূহে প্রতি এক হাজার নারীর মধ্যে ৮ জনই প্রসবকালীন সময়ে মারা যেত। বর্তমানে তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। ২০০৪ সালে বাংলাদেশে এই হার ছিল ৩ দশমিক ২০ জন যা বর্তমানে হ্রাস পেয়ে ১ দশমিক ৬৯ হয়েছে নেমেছে।

বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেকের অনুপস্থিতিতে তাঁর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম। বুধবার (১০ জুলাই) মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৯৯৪-২০১৯ সাল পর্যন্ত এই ২৫ বছরে বিশ্বব্যাপী মা ও শিশু স্বাস্থ্য কার্যক্রমে লক্ষ্যণীয় অগ্রগতি সাধিত হয়েছে যেখানে বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। ১৯৯৪ সালে যেখানে মাত্র ১৫ শতাংশ নারী আধুনিক পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহার করতো, বর্তমানে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৩৭ শতাংশ হয়েছে। বাংলাদেশে এ হার বর্তমানে ৬১ দশমিক ৬ শতাংশ। ২৫ বছর আগে এসব দেশসম‚হে প্রতি এক হাজার নারীর মধ্যে ৮ জন নারী প্রসবকালীন সময়ে মারা যেত। বর্তমানে তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। ২০০৪ সালে বাংলাদেশে এই হার ছিল ৩ দশমিক ২০ জন যা বর্তমানে হ্রাস পেয়ে ১ দশমিক ৬৯ হয়েছে নেমেছে। স্বল্প আয়ের দেশে ২৫ বছর আগে একজন নারী কমপক্ষে ৬টি সন্তান জš§ দিত যা বর্তমানে ৪-এর নীচে নেমে এসেছে। বাংলাদেশে এ হার বর্তমানে ২ দশমিক ০৫ জন।

প্রসঙ্গত, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ৪৫/২১৬ নম্বর প্রস্তাব পাশের প্রেক্ষিতে ১৯৯০ সালের ১১ জুলাই প্রথমবারের মত ৯০টি দেশে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উদযাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ ধারাবাহিকতায় নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে অন্যান্য দেশের মতো দেশব্যাপী বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালিত হতে যাচ্ছে। দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘জনসংখ্য ও উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ২৫ বছর : প্রতিশ্রæতির দ্রæত বাস্তবায়ন’। বর্তমান প্রেক্ষাপটে, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের কেন্দ্র বিন্দুতে রয়েছে সার্বজনীন যৌন-প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার নিশ্চিতকরণ। একজন নারী ‘সন্তান নেবে কি নেবে না, নিলে কখন নেবে এবং কতটি সন্তান নেবে’ - এসব বিষয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতা এখনও পরিপূর্ণভাবে পেতে সক্ষম হয়নি। তাই ১৯৯৪ সালে মিশরের কায়রোতে অনুষ্ঠিত জনসংখ্যা ও উন্নয়ন সম্মেলন- আইসিপিডি’র অসমাপ্ত কার্যক্রমের দ্রæত বাস্তবায়নের অঙ্গীকার প্রকাশ হয়েছে এবারের প্রতিপাদ্যের মাধ্যমে।

এ বছর ‘জনসংখ্যা ও উন্নয়ন’ বা কায়রো আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ২৫ বছর পূর্তি হতে যাচ্ছে। কায়রো সম্মেলন ছিল এমন একটি সম্মেলন যেখানে জাতীয় ও সর্বজনীন উন্নয়ন প্রচেষ্টা হিসেবে যৌন-প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার (এসআরএইচআর)-কে কেন্দ্র বিন্দুতে রেখে যুগান্তকারী কর্মকৌশল নির্ধারণ করা হয়। কর্মকৌশলে বলা হয়, সকল ব্যক্তির সর্বজনীন প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা পাবার অধিকার রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে স্বেচ্ছাভিত্তিক পরিবার পরিকল্পনা, নিরাপদ মাতৃত্ব ও প্রসব সেবা এবং যৌনবাহিত সংক্রমণের প্রতিরোধ ও সেবা গ্রহণ। কর্মকৌশলে আরো বলা হয়, একজন নারীর জন্য জাতীয়, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সকল ক্ষেত্রে যেমন, অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক কর্মকান্ডে সমানভাবে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে এবং সেই সাথে নারীর প্রতি সকল ধরণের যৌন বৈষম্য দূরীকরণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। কায়রো সম্মেলনে কিশোরী ও নারীদের মাঝে তাদের ‘পছন্দ ও সুযোগ’-কে কাজে লাগানোর বিষয়ে উদ্ধুদ্ধকরণে জোর দেয়া হয়। এই ২৫ বছরে নারীরা তাঁদের পছন্দসই সুযোগগুলোকে কাজে লাগিয়ে জীবনযাত্রার মানকে কতটুকু পরিবর্তন করতে পেরেছে বা এগিয়ে নিয়ে যেতে পেরেছে তা যাচাই করার সময় এসেছে।

দুই সন্তানের নীতিতেই থাকবে সরকার

সরকার জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে দুই সন্তানের নীতিতেই থাকবে বলে জানিয়েছেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের আইইএম (ইনফরমেশন, এডুকেশন অ্যান্ড মোটিভেশন) ইউনিটের পরিচালক অতিরিক্ত সচিব আশরাফুন্নেছা। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের স্লোগানটা হচ্ছে ‘ছেলে হোক মেয়ে হোক দুটি সন্তানই যথেষ্ট’। সরকার দুই সন্তানের নীতিতেই থাকবে। এক সন্তানের যেটি আছে, সোশ্যালাইজেশন প্রসেসের মধ্যে এর একটা ত্রæটি থেকে যায়। ‘আমরা যে ব্যালান্স সোসাইটির কথা বলছি, সেখানে ছেলে-মেয়ে, মেয়ে-ছেলে দু’জন মিলে শেয়ারিং কেয়ারিং ও আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের বিষয়টি এনশিওর করা যায়।’

সংবাদ সম্মলনে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব শেখ ইউসুফ হারুন, নার্সিং অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) তন্দ্রা সিকদার এবং জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (নিপোর্ট) মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) সুশান্ত কুমার সাহা।

এদিকে দিবসটি উপলক্ষে কাল বৃহষ্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া সকাল সাড়ে দশটায় ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনষ্টিটিউ মিলনায়তনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা এবং পুরস্কার বিতরনী কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন