যানজট নিয়ন্ত্রণে রাজধানীর দুটি প্রধান সড়কসহ তিন রুটে রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে পুলিশ ও সিটি কর্পোরেশনের অবহেলায় ব্যস্ত প্রধান তিনটি সড়কে এখনও রিকশা চলছে। রিকশা চলাচলের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে দুদিন নৈরাজ্য চালিয়েছে রিকশাচালকরা। এ নিয়ে দুই সিটির মেয়র রিকশা শ্রমিক নেতাদের সাথে আলোচনা করে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন প্রধান সড়কে রিকশা চলবে না। এমনকি দুই বছরের মধ্যে ঢাকায় কোনো রিকশা চলবে না।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, রিকশা বন্ধের সিদ্ধান্ত বহাল আছে। তিনি বলেন, প্রধান সড়কে যানজটের অন্যতম কারণ ধীরগতির যানবাহন রিকশা। পৃথিবীর কোনও শহরে এমন অবস্থা নেই। আমরা অবৈধ যানবাহন বন্ধ, ফুটপাত দখলমুক্ত ও অবৈধ পার্কিং বন্ধে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ে গঠিত কমিটি দুটি প্রধান রুটে রিকশা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পুরো শহর থেকে রিকশা উঠিয়ে দেওয়া হয়নি। মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, এই শহরকে বাঁচাতে হবে। জনগণের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করার দায়িত্ব আমাদের। সেজন্য জনগণের স্বার্থেই রিকশা বন্ধ করা হয়েছে। ডিএসসিসি মেয়র অভিযোগ করে বলেন, কিন্তু কিছু কিছু ব্যক্তি রিকশাচালকদের সামনে রেখে পরিস্থিতি উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে অনড় অবস্থানে আছি। ওই রুটগুলোতে রিকশা চলতে দেওয়া হবে না।
এর আগে গতকাল বুধবার ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, রাজধানী ঢাকার মূল সড়কে রিকশা চলাচল করতে পারবে না। যেসব সড়কে বাইলেন রয়েছে সেখানে বাইলেন দিয়েই রিকশা চলবে। আমাদের আগের সিদ্ধান্তই বহাল থাকবে।
গত ৩ জুলাই দক্ষিণ নগর ভবনে ডিটিসিবির সমন্বয় সভা শেষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন জানান, ৭ জুলাই থেকে রাজধানীর তিনটি রুটে রিকশা চলাচল করবে না। রুটগুলো হচ্ছে কুড়িল-রামপুরা-সায়েদাবাদ, গাবতলী-আসাদগেট-আজিমপুর ও সায়েন্সল্যাব-শাহবাগ।
তবে রিকশা বন্ধের প্রথম দিন থেকেই আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য শুরু করে রিকশাচালক ও মালিকরা। তাদের দাবি, প্রধান সড়কগুলোতেও তাদের চলাচলের অনুমোদন দিতে হবে। তবে রিকশাচালক-মালিকদের এই দাবি মানতে নারাজ দুই সিটি করপোরেশন। সংস্থা দুটি বলছে, মূল রাজধানীর প্রায় ২ হাজার ৩০০ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে মাত্র ২০-২৫ কিলোমিটারের মতো সড়কে রিকশা চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। ফলে রিকশাচালকদের মূল কর্মক্ষেত্রে কমে যায়নি, পর্যাপ্ত রয়েছে। নগরীতে মেট্রোরেলসহ উন্নয়ন কাজের কারণে প্রধান একটি সড়ক সংকুচিত হয়ে পড়ায় যানজট নিয়ন্ত্রণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রিকশা বন্ধ করায় সংশ্লিষ্ট সড়কগুলোতে যানবাহনে গতি কিছুটা ফিরেছে। বাসচালকরা জানান, রিকশা ধীরগতির হওয়ায় এতদিন সড়কে যানজট ছিল। এখন যানবাহনের গতিও ফিরেছে, ট্রিপও বেশি দেওয়া যাচ্ছে। ফলে যাত্রীদের স্বল্প সময়ে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন