শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

বিদায় লগ্নে আষাঢ় ফিরেছে, বরেন্দ্র অঞ্চলে বেড়েছে কৃষকের ব্যস্ততা

রাজশাহী ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১২ জুলাই, ২০১৯, ৭:৫৫ পিএম

আষাঢ়ের বিদায় লগ্নে দেখা মিলেছে ভারী বর্ষনের। স্বস্তি এসেছে জনজীবন আর প্রকৃতিতে। বৃষ্টি নির্ভর আমন আবাদের জন্য অপেক্ষার প্রহর কেটেছে। জমিতে ‘‘জো’’ এসেছে। কৃষক মাঠে নেমে পড়েছে আমন চারা রোপনে। এমনিতে বোরো ধানের দাম না পেয়ে কৃষকের মন বিষন্ন। তারপর আবার আমন আবাদের সময় বয়ে যাচ্ছে। চলে যাচ্ছে আষাঢ় তবু বৃষ্টি নেই। এ নিয়ে মনটা আরো খারাপ।
আষাঢ়ের একেবারে শেষ মুহুর্তে এসে ভারী বৃষ্টি পড়েছে। সেই বৃষ্টিতে ভিজে কাদাপানি মেখে রাজশাহী অঞ্চলের কৃষক আমন আবাদে মাঠে নেমে পড়েছে। এবার রাজশাহী তথা বরেন্দ্র অঞ্চলের চার জেলা রাজশাহী, নাটোর, নওগা ও চাপাইনবাবগঞ্জের আমনের আবাদ হবে সাড়ে তিনলাখ হেক্টরের বেশী জমিতে। এলক্ষ্যে বীজতলা তৈরী হয়েছে আঠারো হাজার। রাজশাহীতে আমনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সত্তর হাজার দুশো চব্বিশ হেক্টর জমিতে। এজন্য বীজতলা তৈরী হয়েছে তিন হাজার তিনশো সাতষট্টি হেক্টর জমিতে।
রাজশাহীর গ্রামীন জনপদ ঘুরে দেখা যায় মাঠে মাঠে কৃষকের ব্যস্ততা। জমিচাষ, বীজতলা থেকে বীজ তোলা আর রোপন নিয়ে ব্যাস্ত সময় পার করছে। মাঠ ঘুরতে কৃষকের সাথে আলাপকালে তারা বোরো ধানের লোকসানের কথাই তুলে ধরেন। এবারো তাদের লোকসান আর ঋনের পাল্লাটাই আরো ভারী হয়েছে। ঘাম ঝরানো স্বপ্নের বোরো ঘরে নেবার আগে চলে গেছে ফড়িয়া মিলারের লোকজন আর দালালদের হাতে। মহাজনের কাছ থেকে নেয়া ঋনের সুদাসল মাঠেই বুঝিয়ে দিতে হয়েছে। যতটুকু পেয়েছে তা নিজেদের অন্যান্য প্রয়োজন মেটাতে শুরুতেই কম দামে বেচে দিয়েছে। অভিমান দু:খে পন করেছে আর আবাদ নয়। কিন্তু প্রান্তিক চাষীরা ঘরে থাকতে পারেনি। মাটি যে তাদের ধ্যান জ্ঞান। মাটি তাদের ডাকে। ফলে অভিমান করে বসে থাকতে পারেনা। আগামী ফসলে এবারের ক্ষতি পুষিয়ে যাবে এমন আশা নিয়ে ফের মাঠে নেমেছে। তাছাড়া আর কি করার আছে। তাদের আনন্দ হাসি কান্না সুখ দু:খ সব মিশে আছে ক্ষেতে।
আষাঢ় মাসেও কাংখিত বৃষ্টি না মেলায় আমন আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল কপালে। মাঝেমধ্যে মেঘের তর্জন গর্জন আর বিদ্যুতের চমকে আশান্বিত হচ্ছিল এই বুঝি আষাঢ় স্বরুপে নামবে। কিন্তু ছিটে ফোটা বৃষ্টি ঝরিয়ে মেঘে উধাও হচ্ছিল। এ অঞ্চলের কৃষক আমন আবাদে সেচে বৃষ্টিকে বোনাস হিসাবে মনে করে। আষাঢ় শ্রাবনে বৃষ্টি ঝরে বলে নীচের সেচের পানির উপর নির্ভর করতে হয়না। সেচের জন্য পানি কেনার খরচ বেঁচে যায়। তাছাড়া বৃষ্টির পানিতে ভূগর্ভস্ত পানির কিছুটা রিচার্জ হয়। এ পানি দিয়ে বছরের অন্য সময় গুলো চাষাবাদ চলে। এবার আষাঢ় শুরু থেকেই ভিন্ন আচরন করাই হতাশ হয়েছিল কৃষক। তবে একেবারে বিদায় লগ্নে এসে স্বরুপে জানান দিচ্ছে আষাঢ়।
তাছাড়া পানির অভাবে খাল বিল ডোবা পুকুর পানি শূন্য। বড় বড় দিঘীর পানি রয়েছে তলানীতে। বৃষ্টিতে পানি জমতে শুরু করেছে। প্রত্যাশা শ্রাবনে ভারী রকমের বৃষ্টির। কৃষির পাশপাশি মৎস্য ক্ষেতে সহায়ক হবে। খাল বিলের সুস্বাদু মাছ বাজারে আসবে। বৃষ্টি অন্যান্য স্বব্জির ক্ষেতে আর্শীবাদ হয়েছে। পাট আবাদের জন্য বেশ সহায়ক হয়েছে। বরেন্দ্র অঞ্চলের উঁচু জমিতে আবাদের জন্য আরো বৃষ্টির প্রয়োজন। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, আমনের মওসুম শুরু হয়েছে শ্রাবন মাস পর্যন্ত আমন রোপন করতে পারবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন