পুলিশের গাফিলতি এবং চিকিৎসকদের উদাসীনতাতেই মৃত্যু হয়েছে তাবরেজ আনসারির, প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর এমনই দাবি তদন্তকারীদের। মারধরের পর প্রায় চারদিন জেলে বন্দি করে রাখা হয়েছিল তবরজেকে। গণপিটুনির পরই তাবরেজকে তড়িঘড়ি চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে ওই যুবক বেঁচে যেতে পারত বলেও দাবি কর্মকর্তাদের।
কর্মসূত্রে ভিনরাজ্যেই থাকতেন ঝাড়খন্ডের বাসিন্দা তাবরেজ আনসারি। ছুটি কাটাতে বাড়ি ফিরেছিলেন তিনি। মাসখানেক আগে বছর চব্বিশের তাবরেজ বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন। পথে যে বিপদ ওৎ পেতে বসে আছে, তা ভাবতেও পারেননি তাবরেজ বা তার কোনো বন্ধু। রাস্তায় বেশ কয়েকজন তাঁকে ঘিরে ধরে। শুধুমাত্র সন্দেহের বশে ‘চোর’ বলে তকমা দেয়া হয় তাবরেজকে। দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা ধরে বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁকে। ‘জয় শ্রীরাম’ এবং ‘জয় হনুমান’ ধ্বনিও দিতেও বাধ্য করা হয় ওই যুবককে।
মারধরের জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন তাবরেজ। রাস্তায় অচৈতন্য হয়ে পড়েন তিনি। পুলিশের কাছে খবর পৌঁছনোর আগেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তাবরেজ। দীর্ঘক্ষণ পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাবরেজকে উদ্ধার করে। থানায় নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। বন্দি অবস্থায় ওই যুবকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। দিন চারেক পর জেলের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় প্রহৃত যুবককে। তবে শেষরক্ষা হয়নি। মারা যান তাবরেজ আনসারি।
মারধরের ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। সমালোচনায় মুখর হন সকলেই। চাপের মুখে ঘটনার তদন্তভার নেয় জেলা প্রশাসন। এবার সামনে এসেছে ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট। তদন্তকারীদের দাবি, পুলিশ ঘটনাস্থলে আরও আগে পৌঁছলে হয় তো বেঁচে যেতেন তাবরেজ। চারদিন ধরে জেলে বন্দি অবস্থায় তাবরেজকে বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখাও উচিত হয়নি বলেও দাবি তদন্তকারীদের। যে অভিযোগ বরাবর করে এসেছেন তাবরেজের স্ত্রী শাহিস্তা পারভিন। প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট দেখে চোখে পানি মুছতে মুছতেই তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র মুসলমান বলেই আমার স্বামীকে বেধড়ক মারধর করা হয়। আমার স্বামী ছাড়া আর কেউ নেই। আমি সুবিচার চাই।’ সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন