বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধ ভিক্ষু একজন সিতাগু সায়াদাও

শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারে বৌদ্ধ জঙ্গিবাদের উত্থান-৩

নিউ ইয়র্ক টাইমস | প্রকাশের সময় : ১৩ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

মিয়ানমারের সবচেয়ে প্রভাবশালী ভিক্ষু হচ্ছেন ৮২ বছর বয়স্ক ভক্তিভাজন অশিন নায়ানিসারা। তিনি সবার কাছে সিতাগু সায়াদাও নামে পরিচিত। ১৯৮৮ সালে সিতাগু ছিলেন অন্যতম শীর্ষ ভিক্ষু যিনি দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন সমর্থন করেছিলেন। সে সময় লাখ লাখ মানুষ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ জানাতে রাস্তায় নেমেছিল। মিয়ানমারের সামরিক শাসকরা সে সময় শত শত মানুষকে হত্যা করে।

সহিংসতার প্রচন্ডতা সামরিক জান্তাকে কলঙ্কিত করে। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের নেতৃত্বে গণতন্ত্রপন্থী আরেকটি আন্দোলন দমন করা হয় ২০০৭ সালে। তবে এরপর রাজনৈতিক পরিবর্তন আসে। আর সে পরিণতিতে সামরিক জান্তা অং সান সু চির বেসামরিক সরকারের সাথে ক্ষমতা ভাগাভাগি করে।

১৯৮৮ সালের দমন অভিযানের পর সিতাগু সায়াদাও টেনেসিতে প্রবাস জীবন কাটান। পরে বৌদ্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও একটি ধর্মীয় বিশ^বিদ্যালয় খোলার জন্য দেশে ফেরেন। ওই সময়কার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও পোপ ফ্রান্সিস তার সাথে সাক্ষাত করেন। সিতাগু আন্তধর্মীয় পরিষদগুলোতে যোগ দেন। তার মিশনারি সোসাইটি টেক্সাস, ফ্লোরিডা ও মিনেসোটায় মেডিটেশন সেন্টার পরিচালনা করে।

কিন্তু যখন লাখ লাখ রোহিঙ্গা তাদের পুড়িয়ে দেয়া গ্রামগুলো থেকে পালিয়ে যাচ্ছিল সে সময় এক অনুষ্ঠানে সেনা অফিসার শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে সিতাগু সায়াদাও বলেন, মুসলমানরা জাতিসংঘকে প্রায় কিনে নিয়েছে। তিনি বলেন, সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধ ভিক্ষুরা এক। মে মাসে মিয়ানমার সামরিক বাহিনী সংশ্লিষ্ট ফেসবুক পেজে সিতাগু সায়াদাওকে সৈন্যদের মাঝে হাসিমুখে দেখা যায়। তিনি তার ধর্মের শ্রেষ্ঠতম আখ্যা তাদের প্রদান করেন- জাতীয় স্বার্থে নিবেদিত ধর্মীয় সৈনিকদের সেনাবাহিনী। তিনি মিয়ানমার সশস্ত্র বাহিনী প্রধানকে বলেন, মিয়ানমারে চার লাখেরও বেশি ভিক্ষু রয়েছে। আপনার যদি প্রয়োজন হয় আমি তাদের শুরু করতে বলব। এটা সহজ।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃতত্ত¡বিদ খিন মার মার কি বলেন, যখন সিতাগু সায়াদাওর মত কোনো সম্মানিত লোক কোনো কথা বলেন, যদি তা মহল বিশেষের কাছে একেবারেই অগ্রহণযোগ্যও হয়, তাহলেও মানুষ তা শোনে। তার বক্তৃতায় বিদ্বেষকে যৌক্তিকতা প্রদান করা হয়। কিছু ভিক্ষু আছেন, যদিও তাদের সংখ্যা খুব সীমিত, তারা এই ধর্মবিদ্বেষী বক্তৃতার বিরোধিতা করছেন।

ইয়াঙ্গুনে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে শান্তিবাদীরা আন্তঃধর্ম সম্প্রীতির উন্নয়নে মুসলমানদের হাতে সাদা গোলাপ তুলে দেন। এশিয়া আলো বৌদ্ধমঠের মঠাধ্যক্ষ অশিন সেইন দাই তা বলেন, উগ্রপন্থীরা মিয়ানমারের বৌদ্ধদের একটি ক্ষুদ্র অংশ। কিন্তু গলাবাজিতে তারা এগিয়ে। তিনি বলেন, আমাদের সুস্পষ্টভাবে বলা উচিত যে যদি কোনো ভিক্ষু হত্যা করার কথা বলেন, এমনকি তিনি যদি সিতাগৃ সায়াদাওর মত ব্যক্তিও হন, তার ধর্মীয় মর্যাদা বাতিল করা উচিত। কিন্তু যে দেশে প্রবীণ ভিক্ষুরা এত সম্মানিত, সেখানে তাদের কর্তৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা কঠিন।
বিশ^ব্যাপী মুসলিম বিরোধী মনোভাব মুসলমানদের সম্পর্কে ভুল ধারণাকে জোরদার করেছে। অন্যদিকে সামাজিক মাধ্যম ক্ষতিকর ভূমিকা পালন করছে। জান্তার ক্ষমতার চ‚ড়ান্ত পর্যায়ে মিয়ানমারে অনুমোদনহীন ফাক্স মেশিন বেআইনি ছিল। আর সংবাদ মাধ্যম ছিল সেন্সর ব্যবস্থার আওতায়। আজকের দিনে বেশিরভাগ মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে। ফলে আসল ঘটনা গোপন করা সহজ নয়। (চলবে)

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
Sopon Solaiman ১৩ জুলাই, ২০১৯, ১:৩৭ এএম says : 0
মুখে মধু অন্তরে বিষ।
Total Reply(0)
Md Dulal ১৩ জুলাই, ২০১৯, ১:৩৭ এএম says : 0
দুনিয়ায় একটি মাত্র ধর্ম যে ধর্মে জিব হত্যা মহা পাপ আর রহিঙ্গা মুসলিম হত্যা জায়েজ আর সেটা হল বৌদ্ধ ধর্ম
Total Reply(0)
Mohammad Harunur Rashid ১৩ জুলাই, ২০১৯, ১:৩৮ এএম says : 0
একমত
Total Reply(0)
MD. Anwar Zahid ১৩ জুলাই, ২০১৯, ১:৩৯ এএম says : 0
বোদ্ধরা বলে জীব হত্যা মহাপাপ, আর তারাই শিয়াল, কুকুর, বিড়াল, শুয়োর, সাপ বেঙ, তেলাপোকা,যা পায় তাই মেরে খায়। ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় এরা হল বিশ্বের সবচেয়ে অত্যাচারী। চেঙ্গিস খান লক্ষ লক্ষ মুসলমান মেরে রক্তের নদী বানিয়েছে। এই হল এদের জীব হত্যা মহাপাপের নমুনা। এদের ভিক্ষুরা হল মিথ্যাবাদি ধোকাবাজ আর দাঙ্গাবাজ ধরষক, যা মিয়ানমারে তারা দেখাচ্ছে। আল্লার দুনিয়া ছেড়ে এই অত্যাচারীরা কোথায়া যাবে। নাস্তিক মিথ্যাবাদীদের পুরস্কার তো জাহান্নামে রাখা আছে। কয় দিন আর তোরা মিথ্যাচার বদমাইসি করবি । সব মিথ্যাচার একদিন শেষ হবে। সেদিন সব গলাবাজী বনধ হবে। অহংকারীরা তাদের ঠিকানা পুরস্কার পুরপুরিই পেয়ে যাবে।
Total Reply(0)
Jalal Uddin Ahmed ১৩ জুলাই, ২০১৯, ১:৩৯ এএম says : 0
Buddhist killing human beings Muslims Communities and doing inhumanity behaviours to Mankind. Witharu must be punished against international laws
Total Reply(0)
MD Azmery = ১৩ জুলাই, ২০১৯, ১:৩৯ এএম says : 0
শুধু এই বুড্ডিশটা এরকম তা কিন্তু নয়।পৃথীবির প্রত্যেকটা বুদ্ধ এই রকম বর্বরোচিত। তাদের ধর্মটাই এরকম।ওম শান্তির আড়ালে লুকিয়ে আছে বিশ্বের বর্বরতা।
Total Reply(0)
মেহেদী হাসান ১৩ জুলাই, ২০১৯, ১:৪০ এএম says : 0
বোদ্ধ জঙ্গিবাদের বিরুদেধ সোচ্চার হতে হবে।
Total Reply(0)
তামিম ১৩ জুলাই, ২০১৯, ১০:৫০ এএম says : 0
জিব হত্যা মহা পাপ, মুসলিম হত্যা পুন্নি । যাদের ধর্ম গ্রন্থে, এমন জঘন্য কথা লেখা থাকে, তারাতো বর্বর, নিকৃষ্ট যাতি।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন