চলতি মৌসুমে দেশে পাট আবাদ দু’বছর আগের তুলনায় লক্ষাধিক হেক্টর বৃদ্ধি পেলেও বৃষ্টির অভাবে উৎপাদন যথেষ্ঠ ব্যাহত হয়েছে। এমনকি দিন দশেক আগ পর্যন্ত পাট জাগ দেয়া নিয়েও যথেষ্ঠ শঙ্কায় ছিলেন কৃষকরা। গত জানুয়ারী থেকে জুন পর্যন্ত সারা দেশেই বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের নিচে ছিল। পাশাপাশি সদ্যসমাপ্ত অর্থ বছরে পাট খাতে রফতানি আগের বছরের চেয়ে প্রায় ৫% কমে যাওয়ায় এ খাতে দুঃশ্চিন্তা কিছুটা বাড়ছে সংশ্লিষ্ট মহলে।
জুলাইয়ের প্রথম ১০ দিনে সারা দেশেই স্বাভাবিকের চেয়ে বেশ কিছুটা বেশি বৃষ্টিপাতের ফলে জাগ দেয়া নিয়ে সঙ্কট কিছুটা কাটলেও পাট কাটা নিয়ে কৃষকরা নতুন সমস্যায় পড়ছেন। ইতোমধ্যে সারা দেশে প্রায় ২৫% পাট কাটা সম্পন্ন হয়েছে। এতোদিন বৃষ্টির অভাবে খাল, নালা, ডোবায় পানি না থাকায় কৃষকরা পাট কাটেননি। কিন্তু গত সপ্তাহখানেকের অতি বর্ষণে পাট কাটতে পারছেন না কৃষকরা।
এবার সারা দেশে গত বছরের চেয়ে প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে পাট আবাদ হয়েছে বলে কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে। ফলে উৎপাদনও গত বছরের ৭৪ লাখ ৪৫ হাজার বেলের তুলনায় বৃদ্ধি পাবার কথা। চলতি মৌসুমে কৃষি মন্ত্রণালয় সারা দেশে ৬ লাখ ৯৯ হাজার হেক্টর জমিতে ৮০ লাখ ৮ হাজার বেল পাট উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
বরিশাল ও ফরিদপুর অঞ্চলের ১১টি জেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় ২ লাখ ৩৩ হাজার হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্য রয়েছে ২৭ লাখ ২৭ হাজার বেল। শুধুমাত্র বৃহত্তর ফরিদপুরের ৫টি জেলায় ২ লাখ ১৯ হাজার ৬৮১ হেক্টর পাটের আবাদ করেছেন কৃষকরা। ফরিদপুর, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী ও গোপালগঞ্জের বিস্তৃত জমিতে এখন সবুজ পাটের সমারোহ। পাশাপাশি বিগত দিন পনের যাবত পাট কাটাও চলছে। তবে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলাতে পাটের বাণিজ্যিক আবাদ না করলেও তা ক্রমশ বাড়ছে।
পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট ইতোমধ্যে উন্নতমানের ও উচ্চ ফলণশীল তোষা পাটের বেশ কয়েকটি জাত উদ্ভাবন করেছে। এমনকি দক্ষিণ উপক‚লের লবণাক্ত এলাকায় পাটের আবাদ স¤প্রসারণের লক্ষ্যে গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যে লবণ সহিষ্ণু পাটের জাত উদ্ভাবন করেছেন। ফলে আগামীতে দক্ষিণাঞ্চলে পাটের আবাদ আশাব্যাঞ্জকভাবে বৃদ্ধির আশা করছেন মাঠ পর্যায়ের কৃষিবীদরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন