উপচেপড়া পর্যটক আর ভ্রমন পিয়াসু মানুষের আগমনে মুখরিত হয়ে উঠছে পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার কুড়িয়ানার বাংলার আপেল খ্যাত পেয়ারা বাগান। পেয়ারা মৌসুমে দিন দিন পর্যটকদের আগমন বেড়ে যাওয়ায় পেয়ারা গ্রামখ্যাত আটঘর কুড়িয়ানা ক্রমেই পরিণত হচ্ছে পর্যটন নগরীতে। তবে পেয়ারা বাগানে নৌকা নিয়ে ঘুরে বেড়ানো,নিজ হাতে পেয়ারা তোলা ও বাগানের মধ্য আরাম আয়েশ সহ সময় কাটানো দর্শনার্থীদের সে চাহিদা ছিল অনেকটা ছিল স্বপ্নের মত।
তাই দর্শনার্থীদের সে স্বপ্নের চাহিদার দিকে তাকানোসহ পাশাপাশি আয়ের উৎসকে লক্ষ্য করে পেয়ারা রাজ্য কুড়িয়ানার কটুরাকাঠিতে গড়ে উঠেছে পেয়ারা পার্ক।
স্থানীয় তিন শিক্ষিত যুবক কটুরাকাঠিতে প্রায় দশ বিগা জায়গার পেয়ারা বাগান লিজ নিয়ে গড়ে তুলেছেন সে বিশাল পেয়ারা পার্ক।
গেল বছরে অর্থ্যাৎ ২০১৮ সালে এলাকার উচ্চ শিক্ষিত পাচ বন্ধু মিলে প্রথমে সল্প জায়গার মধ্য গড়ে তোলেন একটি পার্ক। সেখানে পর্যটকদের আগমনে ভাল সাড়া পাওয়ায় এ বছর তাদের মধ্যে তিনজন অর্নব মজুমদার(এমএ), চিন্ময় হালদার(এমএ), সঞ্জয় সরকার(এমএ) কটুরাকাঠিতে বিশাল পেয়ারা বাগান নিয়ে গড়ে তুলেছেন এ পেয়ারা পার্ক।
শুক্রবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে এ পার্কের উদ্বোধন করেন নেছারাবাদ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান রনি দত্ত জয়।
কটুরাকাঠি এলাকার মনীন্দ্র নাথ হালদার ও তার পার্শবর্তী চারজন পেয়ারা বাগান মালিকের কাছ থেকে ১০ একর ভূমি পাচ বছর মেয়াদে লীজ নিয়ে পার্কটি গড়ে তুলে তার নাম দিয়েছেন ন্যাচারাল টুরিজম এন্ড পিকনিক স্পট(NTPS )।
সরেজমিনে পার্ক ঘুরে দেখা গেছে সেখানে রয়েছে একাধিক ওয়াচ টাওয়ার, কৃত্তিম ব্রিজ, রেস্তোরা, শিশুদের জন্য দোলনা, স্লিপারী, সময় কাটানোর জন্য গোটা বাগান জুড়ে সনের ছাইনির ছোট ছোট ঘর ।
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থী ভীড় করছে ওই পেয়ারা পার্কে। বিশেষ করে ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার হাজার হাজার পর্যটকের সমাগম ঘটে ওইখানে। পর্যটক হিসেবে বিভাগ, জেলা, পার্শবর্তী উপজেলার কর্মকর্তা, সাধারন মানুষ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা আসেন ওই বাগান দর্শনে। ওইসব দর্শনার্থীদের আনন্দ উলাস গোটা এলাকা মুখরিত থাকে।
কথা হয় পেয়ারা পার্কের তিন স্বত্ত্বাধিকারীর মধ্য একজন অর্নবের সাথে। তিনি বলেন,৩০ টাকা প্রবেশ মূল্যের বিনিময়ে পেয়ারা গাছে চড়া, পেয়ারা পেড়ে খাওয়াসহ এখানে ঘোরাফেরা করা যাবে অবাধে। তিনি আরো জানান,পার্কে যাওয়ার জন্য তাদের রয়েছে নিজস্ব ট্রলারের ব্যবস্থা, নাস্তা, ফাষ্ট ফুড এবং দুপুরের খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা। বিশেষ আর্কষন হিসাবে এখানে পাওয়া যাবে পেয়ারা পাতার সুগন্ধি চা। পর্যটকদের ভ্রমনের জন্য ব্যবস্থা রয়েছে ট্রলার /নৌকা ভাড়ার ব্যবস্থা।
এ শিক্ষিত যুবক আরো জানান, মোট কথা ব্যবসা নয় সেবাটাকে মূর্খ্য বিষয় হিসাবে ধারন করে তারা নিরলস সেবা দেওয়ার চেস্টা করছেন পর্যটকদের। চিন্ময়,সঞ্জয় জানান,একদিকে আটঘর কুড়িয়ানার পরিচিতি ঘটানো, পর্যটকদের সহায়তা করা, অপর দিকে সহনীয় পর্যায়ে খরচের মাধ্যমে পর্যটকদের সহায়তার পাশাপাশি বেকারত্ব দুর কারাই তাদের মূল উদ্দেশ্য। তাদের পার্কে পর্যটকদের সহায়তা দেওয়া, চাহিদা মত খাবার রান্না করে দেওয়া, রান্না করা খাবার সরবরাহ করাসহ বিভিন্ন কাজের জন্য কর্মসংস্থান ঘটেছে বেশ কয়েকটি পরিবারেরও।
তবে তারা জানান, এপার্ক করতে তারা যদি সরকারি কোন ঋন সুবিদা পান তাহলে আগামীতে তারা বাগানে আগত পর্যটকদের চাহিদা অনুযায়ি পার্কটি স্থায়ী পর্যটন স্পট হিসাবে মেলে ধরবেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন