শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

প্রধানমন্ত্রী কোনো ধরনের চাঁদাবাজি পছন্দ করেন না : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ৫ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী কোন ধরনের দলীয় চাঁদাবাজি পছন্দ করেন না। পরিবহন চাঁদাবাজিরোধে এরই মধ্যে গোয়েন্দা বিভাগ কাজ করছে। পণ্য যাতায়াতে ব্যবসায়ীদের কোন সমস্যা হলে জানার সাথে সাথে সে অনুযায়ী তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গতকাল শনিবার মতিঝিল ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) অডিটোরিয়ামে “রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যবসায়ী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়ক ভূমিকা’’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ডিসিসিআই এ সভার আয়োজন করে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আরো বলেন, রমজানে ক্রেতা-বিক্রেতাদের আর্থিক লেনদেনের নিরাপত্তা দিতে শপিংমল এলাকার আশপাশে ব্যাংকের শাখা রাত পর্যন্ত খোলা রাখা হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, ‘শিগগিরই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে সার্কুলার দেয়া হবে। এছাড়াও নগদ অর্থ বহনে যেকোনো ব্যক্তি সিটি পুলিশের সহযোগিতা নিতে পারবে।
ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বেআইনিভাবে চাঁদা নেয়া হচ্ছে- এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখন চাঁদাবাজি অনেক কমে গেছে। এছাড়া যেসব স্থানে চাঁদাবাজি হচ্ছে সেসব জায়গা গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক চাঁদাবাজকে কোনোরকম প্রশ্রয় দেয়া হবে না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘রমজানে গ্রামের বাড়ি যাওয়াকে কেন্দ্র করে পরিবহনে চাপ বেড়ে যায়। তাই নিরাপত্তায় কিছুটা হিমশিম খেতে হয়। কিন্তু এবার সব ধরনের নিরাপত্তা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে দেয়া হবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান মিয়া বলেন, রমজান মাসকে ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর মধ্যে শপিংমল, পরিবহনখাত, অজ্ঞান ও মলম পার্টি, যেসব জায়গায় নারীদের সমাগম হয়, জালটাকা ইত্যাদি ক্ষেত্রে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে মলম ও অজ্ঞান পার্টিদের কার্যক্রম নিয়ে ডকুমেন্টারি তৈরি করা হয়েছে। যা ফেসবুক, ইউটিউব ইত্যাদিতে প্রচার করা হবে। চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে ডিএমপি অঙ্গীকারাবদ্ধ।
ডিএমপি কমিশনার আরো বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য বর্তমানকালে ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ কমেছে। যে কারণে রমজান মাসে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ে। যথেষ্ট পরিমাণ পণ্য মজুদ থাকা সত্ত্বেও দাম বাড়ার কারণ কি এমন প্রশ্ন রাখেন ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে। কোথায় কি পরিমাণ ডাল, ছোলা, চিনি, তেল মজুদ আছে তা আমরা জানি। এসব পণ্য মজুদ রেখে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হলে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এসময় ব্যবসায়ীরা রমজানে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার জন্য অর্থমন্ত্রীকেই দায়ী করে জানান, এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর না করে প্যাকেজ ভ্যাট বহাল রাখার দাবি করা হয়েছে। কিন্তু প্যাকেজ ভ্যাট বহাল থাকলেও ভ্যাটের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এ কারণে রমজানে পণ্যের দাম বাড়ার সম্ভাবনা আছে।
এফবিসিসিআই পরিচালক আবু মোতালেব বলেন, ‘নতুন ভ্যাট আইন ২০১৭ সালে কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে। অথচ সদ্য বাজেটে প্যাকেজ ভ্যাটের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে নতুন ভ্যাট আইনের ৮০ শতাংশ কার্যকর হয়েছে। প্যাকেজ ভ্যাটের পরিমাণ দ্বিগুণ করা হয়েছে। এ কারণেই দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়বে।
এর আগে মূল প্রবন্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধতত্ত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. জিয়াউর রহমান বলেন, কঠোর নিরীক্ষা ব্যবস্থার অভাব, বাস্তবায়নহীন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, দুর্বল আইনের প্রয়োগ, সরকারের আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের অভাব, রাজনীতিতে জড়িত ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে সরকারের দুর্বলতা ইত্যাদির কারণে রমজানে মাসে দ্রব্যমূল্য বেড়ে যায়।
ব্যবসায়ীরা বলেন, ঢালাওভাবে ব্যবসায়ীদেরকে অসাধু বলা হয়। এটা ঠিক না। অসাধু ব্যবসায়ী যদি থেকে থাকে তা রয়েছে সরকারের ছত্রছায়ায়। এসব অসাধু ব্যবসায়ীদেরকে ধরে শাস্তি দেওয়া হোক।
তাদের মতে, রাস্তঘাটে পণ্য যাতায়াতকালে পুলিশ, রাজনৈতিক ও মার্শাল বাহিনীর চাঁদাবাজির কবলে পড়তে হয়, যার প্রভাব পড়ে পণ্যের মূল্যের উপরে। দ্রব্যের দাম ঠিক রাখার জন্য এসব চাঁদাবাজি বন্ধ করা উচিত। সভায় সভাপতিত্ব করেন ডিসিসিআই সভাপতি হোসেন খালেদ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন