বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

চার দেশেই বন্যা

উজানের ঢলে তলিয়ে যাচ্ছে নতুন এলাকা : সীমাহীন দুর্ভোগে লাখ লাখ মানুষ

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ১৬ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

উত্তরের জনপদে বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। উজানে ভারতের অবিরাম ঢলে ফুলে ফুঁসে উঠেছে দেশের প্রধান অববাহিকায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা বন্যা বিস্তৃত হচ্ছে দেশের মধ্যাঞ্চলেও। তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠছে নদীভাঙন।

ভেঙে-ধসে পড়ছে অনেক স্থানেই দুর্বল বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। বন্যাকবলিত লাখ লাখ মানুষের দুর্ভোগ সীমাহীন। শুষ্ক জায়গার অভাবে অনেকেরই নেই আশ্রয়। নেই চাল-চুলা। কাজ নেই খাবার নেই। এদিকে চীন, নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশ মিলিয়ে পার্শ্ববর্তী চারটি দেশের ব্যাপক অঞ্চল একযোগে বন্যার কবলে পড়েছে। অতিবৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল, ভ‚মিধস বা পাহাড়ধস, বজ্রপাত ও বন্যায় বহু লোক হতাহত হচ্ছে চারটি দেশেই। অতিবৃষ্টিতে আসামসহ উত্তর-পূর্ব ভারতে এ যাবৎ পানিবৃদ্ধি মারাত্মক।

আসামের ভয়াল বন্যার পানির ঢল ভাটিতে ডুবিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশের বিরাট অংশ। কেননা চীন-তিব্বত থেকে সাংপো নামে বয়ে আসা ভারতের অরুণাচলে সিয়ং আসামে দিহাঙ-দিবং-লোহিত মিলে বিশাল নদী অববাহিকা ব্রহ্মপুত্র। যেটি কুড়িগ্রামের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। গত এক সপ্তাহ ধরে উজানভাগে অতিবর্ষণের ফলে চীন, ভারত ও বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র ও একই অববাহিকায় যমুনা নদের পানি হু হু করে বৃদ্ধি পেয়েছে।

উভয় নদ বিপদসীমার ওপর দিয়ে আরও বেড়েই চলেছে। উজানে অর্থাৎ চীন-তিব্বত ও ভারতে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে আগামী ৭২ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদে পানি বৃদ্ধি এবং বন্যা পরিস্থিতি অবনতির পূর্বাভাস রয়েছে। অন্যদিকে বিহারসহ উত্তর-পশ্চিম ভারত এবং নেপালে ভারী বর্ষণের কারণে অন্যতম বৃহৎ অববাহিকা গঙ্গা-পদ্মায় প্রতিদিনই বাড়ছে পানি। বানের চাপ বাড়লে ভারত যদি অতীতের কায়দায় ফারাক্কা বাঁধের গেট-স্পিলওয়েগুলো খুলে দেয় তখন বন্যা কবলিত হতে পারে পদ্মার জনপদ। তবে আপাতত তেমনটি শঙ্কা করছেন না সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞগণ।

পানিসম্পদ বিশেষজ্ঞ সূত্র জানায়, গত এপ্রিল মাস থেকে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলজুড়ে ‘এল-নিনো’ (বৃষ্টিপাত-নিরোধক) অবস্থা বিরাজ করছে। এর প্রভাবে তীব্র তাপপ্রবাহ, তীব্র শীত, বৃষ্টিপাতেও তীব্রতা এবং হঠাৎ করে স্বল্প এলাকাজুড়ে প্রবল বর্ষণের প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। আবহাওয়া-জলবায়ুর এই অস্বাভাবিক বৈরী আচরণই হচ্ছে মূলত চরম ভাবাপন্ন অবস্থা। কিছুদিন আগেও তাপদাহ, প্রচন্ড খরা-অনাবৃষ্টিতে পুড়ে খাক হয়ে যায় এই উপমহাদেশ।

আবহাওয়া-জলবায়ু যেন কোনো নিয়ম মানতে চাইছে না। অনেক সময়ই পূর্বাভাসও মিলছে না। বৈরী হয়ে ওঠা আবহাওয়া-প্রকৃতির শিকার বাংলাদেশ এবং পার্শ্ববর্তী ভারত, চীন, নেপাল, পাকিস্তান। এই পরিপ্রেক্ষিতে চরম ভাবাপন্ন আবহাওয়ায় এ অঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি ঝরাচ্ছে। আর উজানভাগে অতিবর্ষণ ভাটিতে বাংলাদেশের জন্য বন্যা-দুর্যোগ বয়ে আনছে।

এদিকে উত্তর-পূর্ব ভারতের উজান থেকে নামছেই পাহাড়ি ঢল। বানের পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। দেশের প্রধান অববাহিকায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও এর সঙ্গে সংযুক্ত শাখানদী উপনদীগুলোতে পানি অবিরাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদে বিপদসীমার ঊর্ধ্বে পানি আরও বাড়ছে ভয়াবহ হারে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ৭২ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা এবং গঙ্গা-পদ্মা নদীসমূহের পানির সমতল বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। গতকাল মধ্যাঞ্চলে টাঙ্গাইলে ধলেশ্বরী নদী এলাসিন পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করেছে।

এ অবস্থায় উত্তর জনপদের লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জসহ ব্যাপক এলাকা তলিয়ে যাচ্ছে বানের পানিতে। ২৪ ঘণ্টায় সেসব জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতির কথা জানায় পাউবো’র বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। বলা হয়েছে, নদ-নদীসমূহের ৯৩টি পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় পানি বৃদ্ধি পায় ৬৮টি পয়েন্টে। বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয় ২৬টি পয়েন্টে। পানি হ্রাস পায় ২২ পয়েন্টে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আরিফুজ্জামান ভূঁঁইয়া জানান, সুরমা-কুশিয়ারা ছাড়া দেশের সব প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া বিভাগ পূর্বাভাসে বলছে, বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং এর সংলগ্ন ভারতের আসাম ও মেঘালয় প্রদেশসমূহের বিস্তীর্ণ এলাকায় আগামী ২৪ ঘণ্টায় মাঝারি থেকে ভারী এবং কোথাও কোথাও অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল সংলগ্ন ভারতের বিহার এবং নেপালে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

আগামী ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে। অপরদিকে নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলায় বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল বা সার্বিক অপরিবর্তিত থাকতে পারে। লালমনিরহাট, চট্টগ্রাম ও বান্দরবান জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি আগামী ২৪ ঘণ্টায়ও অব্যাহত থাকতে পারে।

প্রধান নদ-নদীর সর্বশেষ প্রবাহ ও বিপদসীমা
গতকাল বিকেলে সর্বশেষ প্রাপ্ত নদ-নদীসমূহ প্রবাহের তথ্য-উপাত্তে জানা যায়, উত্তর জনপদে প্রধান অববাহিকা ব্রহ্মপুত্র নদের পানি আরও বেড়ে গিয়ে নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৯ সেন্টিমিটার ও চিলমারী পয়েন্টে ১০৮ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। যমুনা নদে পানির অব্যাহত বৃদ্ধির কারণে পাঁচটি পয়েন্টেই বিপদসীমার ঊর্ধ্বে।

এরমধ্যে ফুলছড়িতে বিপদসীমার ১১২ সে.মি., বাহাদুরাবাদে ১২৬ সে.মি., সারিয়াকান্দিতে ৭৮ সে.মি., কাজিপুরে ৫৬ সে.মি. ও সিরাজঞ্জে ২৫ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। উত্তর জনপদের অন্যতম নদ ধরলা কুড়িগ্রামে বিপদসীমার ১১২ সে.মি. ঊর্ধ্বে, তিস্তা নদীর পানি আরও হ্রাস পেয়ে কাউনিয়া পয়েন্টে ২ সে.মি. ও ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমা বরাবর রয়েছে। ঘাগট গাইবান্ধায় ৭৪ সে.মি. ঊর্ধ্বে প্রবাহিত হচ্ছে। উত্তর জনপদ প্লাবিত করে মধ্যাঞ্চলেও ধেয়ে আসছে বানের পানি।

এতে করে গতকাল টাঙ্গাইলে এলাসিন ঘাটে ধলেশ্বরী নদী বিপদসীমার ২ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বিহারসহ ভারতের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এবং নেপালে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে পানি বাড়ছে গঙ্গা-পদ্মার উজানভাগে। ভাটিতে পদ্মার গোয়ালন্দ পয়েন্টে পানি আরও বেড়ে বিপদসীমার ৪২ সে.মি. নিচে এসে গেছে। অন্যান্য পয়েন্টেও ধীরে ধীরে বাড়ছে পানি। তবে ফারাক্কা বাঁধের গেটগুলো ভারত খুলে দিলে ভাটিতে গঙ্গা-পদ্মায় বাংলাদেশে বন্যার কারণ ঘটতে পারে।

সিলেট অঞ্চলে সুরমাসহ প্রধান নদ-নদীর পানি কিছুটা কমলেও সার্বিক প্রায় স্থিতিশীল ও অপরিবর্তিত রয়েছে। সুরমা নদী তিনটি পয়েন্টেই বিপদসীমার ওপরে বইছিল। এরমধ্যে কানাইঘাটে ১১৩ সে.মি., সিলেটে ৬৮ সে.মি. ও সুনামগঞ্জে ৭৯ সে.মি. উপরে রয়েছে। কুশিয়ারা নদীও তিনটি পয়েন্টে বিপদসীমার উপরে। এরমধ্যে অমলশীদে ১৪৬ সে.মি., শেওলায় ৯৪ সে.মি., শেরপুর-সিলেটে ৫২ সে.মি. ঊর্ধ্বে রয়েছে।

মনু নদীর পানি কিছুটা হ্রাস পেলেও দু’টি পয়েন্টে বিপদসীমার ঊর্ধ্বে। এরমধ্যে মনু-রেলওয়ে ব্রিজে ২৮ সে.মি. ও মৌলভীবাজারে ৮৬ সে.মি. উপরে রয়েছে। ধলাই নদীর কমলগঞ্জে বিপদসীমার ২৮ সে.মি. ঊর্ধ্বে, খোয়াই নদী বাল্লা পয়েন্টে ১২৫ সে.মি. ঊর্ধ্বে। তবে হবিগঞ্জ পয়েন্টে ৫০ সে.মি. নিচে প্রবাহিত হচ্ছে। পুরাতন সুরমা-দিরাই পয়েন্টে ৯ সে.মি., কংস নদী জারিয়াজঞ্জাইল পয়েন্টে ৪৪ সে.মি. ঊর্ধ্বে প্রবাহিত হচ্ছে।

দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাঙ্গু নদীর পানি আরও হ্রাস পেয়েছে। গতকাল সাঙ্গু দোহাজারীতে বিপদসীমার ৮২ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তবে বান্দরবানে চারদিন পর বিপদসীমার ৯৪ সে.মি. নিচে নেমেছে।


উজানে ভারী বর্ষণ
বাংলাদেশের প্রধান নদ-নদীর উজানভাগে বিশেষত উত্তর-পূর্ব ভারতে অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত রয়েছে। গতকাল ২৪ ঘণ্টায় আসামের চেরাপুঞ্জিতে ২০৫ মিলিমিটার, ধুবরিতে ৭০ মি.মি., কৈলাশহরে ৬৩ মি.মি. বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এক সপ্তাহেরও বেশিদিন টানা ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হচ্ছে। বিশেষ করে ব্রহ্মপুত্র নদের পানির বড় উৎসমুখ আসাম রাজ্য। আসামে অব্যাহত ভয়াল বন্যায় ৩৩টি জেলার মধ্যে ২৮টি বন্যাকবলিত। তলিয়ে গেছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার গ্রাম। বন্যাদূর্গত লোকসংখ্যা ২৭ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। তবে আগামী ২ থেকে ৩ দিন উত্তর-পূর্ব ভারতে বৃষ্টিপাতের মাত্রা কিছুটা কমতে পারে বলে জানায় দেশটির আবহাওয়া বিভাগ। অন্যদিকে উত্তর-পশ্চিম ভারতসহ বিহার ও নেপালে অতিবৃষ্টি অব্যাহত থাকলে গঙ্গা-পদ্মা প্লাবিত হতে পারে।

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ কোথাও কোথাও অতি বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এরমধ্যে দেওয়ানগঞ্জে ১৫০ মি.মি., দুর্গাপুরে ১৩৫ মি.মি., ভৈরব বাজারে ১৩০ মি.মি., নরসিংদীতে ১০৯ মি.মি., কমলগঞ্জে ১০৩ মি.মি., গাইবান্ধায় ৯৬ মি.মি., জামালপুরে ৯২ মি.মি., জাফলংয়ে ৯১ মি.মি. বৃষ্টিপাত হয়েছে।

কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামে ৫৫টি ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। প্লাবিত হয়েছে ৩৯০টি গ্রামের প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মানুষ। সিভিল সার্জন ডা. আমিনুল ইসলাম জানান, বন্যার পানিতে ডুবে ৪ শিশুর মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে। এরমধ্যে উলিপুরের হাতিয়া ইউনিয়নের হাবিবুল্লাহ (৬), ফুলবাড়ীতে ১ জন ও চিলমারী উপজেলায় ২ জন শিশু বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছে। কুড়িগ্রাম-নাগেশ^রী মহাসড়কে যানচলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ফলে দূরপাল্লার যাত্রীরা চরম ভোগান্তির মধ্যে যাতায়াত করছে।

গাইবান্ধা : ২৬টি ইউনিয়নের ১১৩টি গ্রামেসহ নতুন নতুন এলাকা বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে বিভিন্ন রাস্তা-ঘাট ও ফসলি জমি। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। ফুলছড়ি উপজেলার কাতলামারীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ধসে গেছে। ১৪৫ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

নেত্রকোনা : বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে প্রায় লক্ষাধিক পরিবার। অনেক গ্রামীণ সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে হত-দরিদ্র খেটে খাওয়া। অনেকেই পরিবার পরিজন দিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। দূর্গত এলাকায় ত্রাণের জন্য চলছে হা-হা-কার।

লালমনিরহাট : খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। গবাদি পশু-পাখি নিয়েও বিপাকে পড়েছেন তারা। পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলেও মিলছে না চিকিৎসা সেবা। যে ত্রাণ বরাদ্দ হিসেবে পেয়েছেন তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারে কম বলেও অভিযোগ রয়েছে তাদের।

নীলফামারী : মানুষজনের মাঝে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দিয়েছে। চলমান বন্যায় ডিমলা উপজেলার ১৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম তিন দিন ধরে বন্ধ রয়েছে বলে জানান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ওসমান গণি।

পাবনা : পাবনায় পদ্মা নদীর পানি বাড়ছে। তবে এখনও বিপদ সীমা অতিক্রম করেনি। এবার যমুনা ও পদ্মা নদীর পানি এক সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

রাউজান (চট্টগ্রাম) : রাউজানে অনেক সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। পশ্চিম ডাবুয়ার জাকেরিয়া চৌধুরী ঘাটার সর্তাখালের বাঁধ ভেঙে হযরত আকবর শাহ সড়কের শতভাগ ক্ষতি সাধিত হয়েছে। পশ্চিম ডাবুয়ার নির্মাণাধীন নতুন ব্রিজটির ডাইবারশান সড়কটি পানির স্রোতে ভেঙে সড়কে চলাচল বন্ধ রয়েছে।

সাতকানিয়া : দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় বন্যার পানিতে ধসে পড়ল আস্ত দোতলা বাড়ি। গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার বাজালিয়া ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) : গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি দেখা দিয়েছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমানে ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়েছেন। বন্যার পানিতে ডুবে হরিপুর ইউনিয়নের গেন্দুরাম গ্রামের দুলা মিয়ার ছেলে আনারুল ইসলাম (৩২) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

উলিপুর (কুড়িগ্রাম) : উলিপুর উপজেলা লাগোয়া গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের কাশিমবাজার লখিয়ার পাড়ার তিস্তা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভেঙে উপজেলার বজরা ইউনিয়নের চারটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ওইসব এলাকায় ত্রিপল ও গো-খাদ্যের মারাত্মক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট ও শৌচাগার ডুবে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে জলমগ্ন মানুষ। বিঘিœত হচ্ছে পরিবেশ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (11)
Azizul Islam ১৬ জুলাই, ২০১৯, ২:২৯ এএম says : 0
আল্লাহ সবাইকে রক্ষা করো
Total Reply(0)
Shopno Choya Shopno Choya ১৬ জুলাই, ২০১৯, ২:৩০ এএম says : 0
Sobaike hefajot kro malik
Total Reply(0)
Ali Ahmad Ali Ahmad ১৬ জুলাই, ২০১৯, ২:৩০ এএম says : 0
আল্লাহ তুমি আমার ভাই বোন সকল কে রক্ষা করো।আমিন
Total Reply(0)
Abubakr Siddik ১৬ জুলাই, ২০১৯, ২:৩০ এএম says : 0
আল্লাহ তুমি রহমত কর আমিন
Total Reply(0)
Ashraful Islam ১৬ জুলাই, ২০১৯, ২:৩০ এএম says : 0
আল্লাহ আপনি মহান সবাইকে রক্ষা করুন আমিন
Total Reply(0)
Pijush Gupta ১৬ জুলাই, ২০১৯, ২:৩১ এএম says : 0
ত্রা‌নের প্র‌য়োজন।প্র‌তি‌টি প‌রিবার ক্ষতিগ্রস্থ
Total Reply(0)
Sarwar ১৬ জুলাই, ২০১৯, ২:৩৫ এএম says : 0
ভারত বন্যার সময় পানি ছেড়ে দেয় আর শুকনার সময় পানি দেয় না, আমরা কি কিছু করতে পারি না ?
Total Reply(0)
Amir Hamza ১৬ জুলাই, ২০১৯, ২:৩৭ এএম says : 0
প্রকৃতির ভারসাম্য আমরা নষ্ট করছি, তাই প্রকৃতি ও আমাদের উপহার দিচ্ছে।
Total Reply(0)
Monsur Alom ১৬ জুলাই, ২০১৯, ২:৩৭ এএম says : 0
আল্লাহ হেফাজত কর,এ বন্যায় সবচেয়ে লোকসানে পড়বে গরীব শ্রেনীর মানুষ মাঝে মাঝে নেতারা গিয়ে কিছু দিবে আর সেলফি তোলে ফেইসবুকে দিবে, ব্যস
Total Reply(0)
kkio ১৬ জুলাই, ২০১৯, ৫:৪৯ এএম says : 0
why are you silent about the reserve water of 9 months exerting extra rush on our rivers causing extra damage.
Total Reply(0)
Mohammed Kowaj Ali khan ১৬ জুলাই, ২০১৯, ৭:৪২ এএম says : 0
বন্যা খড়া প্রাকৃতিক দুরযোগের জন্য সম্পূর্ণ ভারত দায়ী । ভারতকে স্বাস্থীর আওতায় আনা হোক। ইনশাআল্লাহ। ওরা বাঁধ নিরমান করে পানির স্বাভাবিক চলাচল বিঘ্ন ঘটাইয়াছে। তাই আজ এই অবস্থা।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন