শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

নেত্রকোনার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত

নেত্রকোনা জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৬ জুলাই, ২০১৯, ৬:৪৭ পিএম

নেত্রকোনা জেলায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।
নেত্রকোনা জেলায় গত ৮ দিন ধরে অব্যাহত ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কলমাকান্দা, দূর্গাপুর, বারহাট্টা ও পূর্বধলা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে।
নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান বলেন, বিভিন্ন পয়েন্টে সোমেশ্বরী ও ধনু নদীর পানি বিপদ সীমার কিছুটা নিচে থাকলেও কংস ও উব্দাখালি নদীর পানি বিপদসীমার প্রায় ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
নেত্রকোনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী দিদারুল আলম তরফদার জানান, নেত্রকোনার ঠাকুরাকোণা-কলমাকান্দা সড়কে ২১ কিলোমিটারের মধ্যে ৪ কিলোমিটার সড়ক বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে করে সড়কটি আরও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। এছাড়াও দুর্গাপুর উপজেলার বিজয়পুর সড়কের বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ক্যাম্প এলাকায় ১৫ মিটার নতুন সড়ক, শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি সড়কের ২০ মিটারের মতো অ্যাপ্রোচসহ ওই সড়কের ইন্দ্রপুর এলাকায় একটি বক্স কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা দিলীপ কুমার সাহা জানান, অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলের পানিতে এ পর্যন্ত ২ হাজার ৯ শত ৬৩টি পুকুর তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় ১ হাজার ৩ শত ৪২ মেট্রিক টন মাছ পানিতে ভেসে যাওয়ায় মৎস্য চাষীদের প্রায় ১২ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ মৎস্য চাষীদের তালিকা তৈরি করে সরকারি ভাবে তাদের সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ উবায়দুল্লাহ জানান, অব্যাহত ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ী ঢলে বিদ্যালয়ে প্রাঙ্গণে বন্যার পানি প্রবেশ করায় দূঘর্টনার আশঙ্কায় এ পর্যন্ত ৩ শত ৩৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, বারহাট্টা ও পূর্বধলা উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের ২শত ১৭টি গ্রামের ১৭ হাজার ৬ শত পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে প্রায় ৮৮ হাজারের মতো মানুষ। তবে স্থানীয়দের দাবি দুর্ভোগে পড়া মানুষের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে।
বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণের জন্য হা-হা-কার চলছে। ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বা স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা কখন ত্রাণ নিয়ে দূর্গত এলাকায় আসবেন বানভাসি ছোট-বড় সবাই সামান্য ত্রাণের আশায় ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করছে। তারপরও অনেক এলাকায় প্রয়োজনীয় ত্রাণ পাচ্ছে না বন্যা দূর্গতরা। স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বারগন বলছেন, তারা যা ত্রাণ পাচ্ছেন তা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত অপ্রতুল। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে সেসব বণ্যাকবলিত এলাকার লাখো মানুষ।
নেত্রকোনার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম বলেন, বন্যা কবলিত এলাকায় ৭টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেখানে প্রায় ২ শত পরিবার ইতোমধ্যে আশ্রয় নিয়েছে। বণ্যা কবলিত অসহায় মানুষের জন্য এ পর্যন্ত ১ শত ১০ মেট্রিক টন চাল ও ৩ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। বণ্যা কবলিত এলাকায় যাতে পানিবাহিত রোগ-ব্যাধি ছড়িয়ে পড়তে না পারে তার জন্য উপজেলা প্রশাসনের কাছে পর্যাপ্ত পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন