শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ট্রাম্পকে জার্মানির গ্রামে ফেরার আহবান

অভিবাসী ছিলেন ট্রাম্পের দাদা, নিজ দেশে ঠাঁই পাননি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ জুলাই, ২০১৯, ১২:১৬ এএম

যুক্তরাষ্ট্রের ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে মনোনয়ন দেয়ার পর জার্মানির কালস্টাট গ্রামটি হঠাৎ সাংবাদিক ও পর্যটকদের জন্য আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। কারণ এটি তার পূর্বপুরুষদের বাসস্থান। ট্রাম্পের দাদা ফ্রিয়েডরিক ট্রাম্প ১৮৬৯ সালে জার্মানির রাইনল্যান্ড প্যালেটিনেটের কালস্টাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ১৮৮৫ সালে ১৬ বছর বয়সে উন্নতমানের জীবনযাপনের আশায় নিজের জন্মস্থান ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেন। গ্রামটির এক হাজার ২০০ বাসিন্দা মেনে নিয়েছিল যে ট্রাম্প গ্রামটির কথা ভুলেই গেছেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ৪ নারী কংগ্রেস সদস্যকে তারা যেখান থেকে এসেছেন, সেখানে ফিরে গিয়ে সেখানকার অপরাধ দমনের আহŸান জানিয়েছেন। এরপর কালস্টাট গ্রামের দরিদ্র বাসিন্দাদের কয়েকজন তাকে তার পরিবারের আদি বাসস্থানের কথা মনে করার আহŸান জানিয়েছেন বলে মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট। কালস্টাটের মেয়র থমাস জায়োরেক বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্টের পূর্বপুরুষদের অনুন্নত বাসস্থান নিশ্চয় তাকে ফিরিয়ে আনবে। যদি ট্রাম্প এখানে আসেন, তবে তিনি অভিবাসী, নাগরিকত্ব ও একাত্মতার বিষয়ে একটি পরিবর্তিত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কালস্টাট ত্যাগ করবেন। কালস্টাটের এক নারী সংঘের প্রধান বিয়াট্রিক্স রিয়েডে বলেন, প্রত্যেকের আদি বাসস্থান আছে এবং তার মতো আরেকজনের দেশত্যাগ দাবি করেন। আমি আশা করি আমেরিকানরা আগামী নির্বাচনে এমন কাউকে নির্বাচিত করবেন, যিনি ভেবেচিন্তে কথা বলবেন। অপরদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই কট্টর অভিবাসন নীতিমালা প্রণয়ন করেছেন। মুসলিম দেশগুলোতে নিষেধাজ্ঞা, অভিবাসীদের ফিরিয়ে দেয়া, সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ করা, শরণার্থী শিশুদের বাবা-মা থেকে আলাদা করে আশ্রয়কেন্দ্রে আটকে রাখাসহ বহু বিতর্কিত পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি। সর্বশেষ বিদেশি বংশোদ্ভূত চার নারী কংগ্রেস সদস্যকে আমেরিকা ছেড়ে যেতে বলে তীব্র সমালোচনার শিকার হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু তিনি নিজেই একজন অভিবাসীরই বংশধর। তার স্ত্রী মেলানিয়াও অভিবাসী। আর ট্রাম্পের দাদা ফ্রেডরিক ছিলেন বর্তমান জার্মানির অংশ বাভারিয়ার নাগরিক। সেখানে ঠাঁই না পেয়ে নিউ ইয়র্কে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন। নিজ জন্মভূমি থেকে বিতাড়িত হওয়ার আগে সেখানে থাকার অনুমতি চেয়ে বাভারিয়ার তৎকালীন শাসক বরাবর একটি চিঠি লিখেছিলেন ফ্রেডরিক। সে চিঠির একটি অনুবাদ স¤প্রতি প্রকাশ করেছে হার্পাস পত্রিকা। হার্পাস পত্রিকার প্রতিবেদন অনুসারে, ষোলো বছর বয়সে ভাগ্যের সন্ধানে ছেড়ে আমেরিকায় যান ফ্রেডরিক। সেখানে নাপিত হিসেবে কাজ শুরু করেন। ধীরে ধীরে খুলে বসেন রেস্তোরা, গণিকালয় সহ নানা ব্যবসা। কিন্তু আমেরিকায় আবহাওয়ায় খাপ খাওয়াতে পারছিলেন না তার স্ত্রী। স্ত্রীর জন্য ১৯০৫ সালে বাভারিয়ায় ফিরে যান ফ্রেডরিক। কিন্তু বাভারিয়ায় তার ঠাঁই হয়নি। বাভারিয়ার তৎকালীন শাসনব্যবস্থা অনুসারে, দেশের সকল তরুণদের একটা নির্দিষ্ট সময় সামরিক বাহিনীতে কাজ করা বাধ্যতামূলক ছিল। ফ্রেডরিক ওই সেবা দেননি। আমেরিকা যাওয়ার বিষয়টিও নিজের দেশে সরকারিভাবে নথিভুক্ত করান নি। এসব কারণে ‘কিংডম অব বাভারিয়া’ ছেড়ে চলে যেতে বলা হয় তাকে। সে সময় দেশে থেকে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে ‘প্রিন্স রিজেন্ট অব বাভারিয়া’কে একটি চিঠি লিখেছিলেন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাদা। ওয়াশিংটন পোস্ট, হার্পাস নিউজ।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Ahmed Fozol ১৯ জুলাই, ২০১৯, ১:৩২ এএম says : 0
আর সেজন্যই কি বেচারা বাঙালি অভিবাসীদের ওপর প্রতিশোধ নিচ্ছেন?
Total Reply(0)
Shamsuddoha Ranju ১৯ জুলাই, ২০১৯, ১:৩২ এএম says : 0
একটা প্রবাদ আছে, চোরের মুখে ধর্মের বানী
Total Reply(0)
রুবি আক্তার ১৯ জুলাই, ২০১৯, ১:৩৫ এএম says : 0
গ্রামে একটা প্রবাদ বাক্য আছে চোরের মার বড় গলা। আজ ট্রাম্পের অবস্থা ঠিক তাই।
Total Reply(0)
সাইফুল ইসলাম ১৯ জুলাই, ২০১৯, ১:৩৬ এএম says : 0
নিজে অভিবাসীর বংশধর হয়ে অভিবাসী বিরোধী পদক্ষেপ নেয়, তারমানে পলিটিক্স ছাড়া আর কিছুই না।
Total Reply(0)
Hasan Mohammad Akram ১৯ জুলাই, ২০১৯, ১১:১৭ এএম says : 0
এতক্ষণে বোঝা গেলো আসল ঘটনা
Total Reply(0)
নাবিল ১৯ জুলাই, ২০১৯, ১১:১৭ এএম says : 0
এবার কি করবেন ট্রাম্প
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন