শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামী বিশ্ব

পারস্য উপসাগরে সংঘাত সঙ্কেত

হরমুজে মার্কিন জাহাজ থেকে গুলি করে ইরানি ড্রোন ধ্বংসের দাবি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২০ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

হরমুজে মার্কিন জাহাজ থেকে গুলি করে ইরানি ড্রোন ধ্বংসের দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। পারস্য উপসাগরে একের পর এক মারাত্মক ঘটনার পর এই প্রথম সামরিক সংঘাতে জড়াল ওয়াশিংটন। এ সম্পর্কে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইউএসএস বক্সার জাহাজ ইরানি ড্রোনের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। কারণ সেটি জাহাজ ও ক্রুদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছিল। সে কারণে ড্রোনে গুলি করা হয়েছে। এর আগের ঘটনাগুলোর জন্য তেহরানকে দায়ী করে আসছে যুক্তরাষ্ট্রসহ তার উপসাগরীয় মিত্রদেশগুলো। আরব আমিরাত ও সউদী তেলট্যাংকারে হামলাসহ জাহাজের গায়ে লিমপিট মাইন স্থাপনের অভিযোগের তীরও তেহরানের দিকে। এসব ঘটনা পারস্য উপসাগরে বড় ধরনের সংঘাতের সঙ্কেত বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া সিরিয়া ও ইয়েমেনে ছায়াযুদ্ধ নিয়েও উত্তেজনা রয়েছে। গত মে মাসে ইরানি বাহিনীর কাছ থেকে হুমকির আভাষের জবাবে ইরানি নৌসীমার কাছে একটি রণতরী ও বি-৫২ বোমারু বিমান মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে পেন্টাগন। জুনে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক নজরদারি ড্রোন গুলি করে ধ্বংস করেছে তেহরান। এতে ইরানের বিরুদ্ধে বিমান হামলার হুমকি দিয়েও শেষ মুহূর্তে এসে তা থেকে সরে আসেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি তখন বলেন, এ হামলা সমানুপাতিক হতো না এবং সেখানে বড় ধরনের হতাহতের হুমকি ছিল। গত ৪ জুলাইয়ে জাবাল আল-তারিক প্রণালীর কাছ থেকে একটি ইরানি তেল ট্যাংকার জব্দ করে ব্রিটেন। মার্কিন মিত্র দেশটির দাবি, ওই ট্যাংকারে তেল নিয়ে সিরিয়ার পরিশোধনাগারে যাওয়া হচ্ছিল, যেটা ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার লঙ্ঘন। ব্রিটেনের এই পদক্ষেপকে ক্ষুব্ধ ইরান দস্যুতা হিসেবে আখ্যায়িত করে। সপ্তাহখানেক পরে পারস্য উপসাগরে সশস্ত্র ইরানি বোট একটি ব্রিটিশ তেল ট্যাংকারকে ধাওয়া করে জব্দের চেষ্টা চালায়। কিন্তু ব্রিটিশ রয়েল নেভির যুদ্ধজাহাজ তাদের তাড়িয়ে দেয়। এতে উপসাগরীয় তেল ক্ষেত্রগুলো থেকে হাইড্রোকার্বন বোঝাই করে নিয়ে যাওয়া নৌযানগুলোর নিরাপত্তা দিতে হরমুজ প্রণালীতে আন্তর্জাতিক নৌবহরগুলোর প্রতি আহŸান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার উপসাগরীয় নৌপথে জাহাজ চলাচলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অংশীদার দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে আগ্রাসী পদক্ষেপ নেয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান কেনেথ ম্যাককেনজি। এসব ঘটনাপ্রবাহ ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদেশগুলোর আঞ্চলিক সংঘাতেরই আভাস দিচ্ছে। কারণ এই হজমুজ প্রণালী দিয়ে পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশ তেল পরিবহন করা হয়। ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে ২০১৫ সালে ইরানের পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরে যাওয়ার পর এসব ঘটনা ঘটছে। একতরফাভাবে ওই চুক্তি থেকে সরে আসার বছরখানেক পর তেহরানের অর্থনীতিকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিতে ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। চলতি মাসের শুরুতে উদ্দেম্যমূলকভাবেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বাড়িয়ে দিয়েছে তেহরান। মূলত চুক্তির অন্য অংশীদারতে চাপে রাখতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছে শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটি। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ বলেন, ওয়াশিংটন অর্থনৈতিক সন্ত্রাসবাদে জড়িয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, এই অবৈধ ও কর্তৃত্বের বাইরে গিয়ে আরোপ করা নিষেধাজ্ঞায় ইরান ও প্রতিবেশী দেশগুলোর টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে হুমকিতে ফেলে দিয়েছে। এসব সত্তে¡ও বৃহস্পতিবার তেহরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচিতে গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ সরবরাহে ইরান, বেলজিয়াম ও চীনের বিভিন্ন কোম্পানির একটি নেটওয়ার্ককের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে দুই পক্ষই আলোচনার সম্ভাব্য পথ খোলা রেখেছে বলে দাবি করা হচ্ছে। গার্ডিয়ানের এক খবর জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র যদি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে সম্মত হয়, তবে ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে পরিদর্শন বাড়াতে একটি নতুন চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছেন জাভেদ জারিফ। আলোচনায় ট্রাম্পকেও আগ্রহী হতে দেখা গেছে। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, চাপের কারণে আঞ্চলিক তৎপরতা উল্লেখযোগ্য কমাতে বাধ্য হয়েছে ইরান। এএফপি, রয়টার্স।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
mahbubur rahman babu ২০ জুলাই, ২০১৯, ৪:৫১ এএম says : 0
kash iraner samoric sokti jodi muslim bisser jonno hoto ?
Total Reply(0)
মোয়াজ্জেম হোসেন ২২ জুলাই, ২০১৯, ১:৫২ পিএম says : 0
ইরান যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হুমকি নয়; বরং যুক্তরাষ্ট্র ইরান এবং বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রের জন্য হুমকি। যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের মদদে গায়ে পড়ে ইরানের সাথে যুদ্ধ বাধানোর চেষ্টা করছে এবং বিভিন্ন অপকৌশল করছে। যুক্তরাষ্ট্রকে নোংরা যুদ্ধাবাজ নীতি থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে। নতুবা যুক্তরাষ্ট্রকে চরম মূল্য দিতে হবে।
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন