বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বন্যা উন্নতির দিকে

বিশেষ সংবাদদাতা, চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২০ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

বন্যা পরিস্থিতি সার্বিক উন্নতির দিকে যাচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদসহ উত্তরাঞ্চলের নদ-নদীসমূহ এখনও বিপদসীমার ওপরে রয়েছে। তবে গতকাল শুক্রবার থেকে উত্তরের প্রায় সব নদ-নদীতে এবং সেই অঞ্চলে ধীরে ধীরে বানের পানি কমছে। মধ্যাঞ্চল থেকে মেঘনার ভাটির কাছাকাছি পর্যন্ত বানের স্রোত বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকায় খাদ্য সঙ্কট তীব্র। বানের পানি হ্রাসের সাথে সাথে বিভিন্ন স্থানে নদীভাঙন বৃদ্ধি পেয়েছে। উজান থেকে ভাটি হয়ে বানের পানি নামার সাথে সাথেই ভেসে উঠছে বন্যার ক্ষতচিহ্ন। গত ১০ জুলাই থেকে ভারতের উজানের পাহাড়ি ঢলে ভাটিতে দেশের অনেক এলাকা বন্যাকবলিত হয়।

উজানে উত্তর-পূর্ব ভারতে এবং দেশের অভ্যন্তরে আপাতত তেমন বৃষ্টিপাত নেই। এ সপ্তাহে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বর্ষণের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে এবং বাংলাদেশের ওপর বর্ষার মৌসুমী বায়ু তেমন সক্রিয় নয়।

এদিকে পাউবো’র বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্র জানায়, গঙ্গা-পদ্মা ছাড়া দেশের প্রধান নদীগুলোর পানির সমতল হ্রাস পাচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদের পানি হ্রাস পেতে পারে। আর ব্রহ্মপুত্র নদের পানি হ্রাস অব্যাহত থাকতে পারে। অন্যদিকে ৪৮ ঘণ্টায়ও গঙ্গা-পদ্মার নদ-নদীসমূহের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ জামালপুরে এবং পদ্মা নদী সুরেশ্বর পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। আগামী ২৪ টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে। তবে মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও মুন্সীগঞ্জ বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। বগুড়া, জামালপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলায় আগামী ২৪ ঘণ্টায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া বিভাগের পূর্বাভাসে বলা হয়, বাংলাদেশের উজানে উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রদেশগুলোতে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের নদ-নদীগুলোতে ৯৩টি পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে ৪৫ পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি এবং ৪৭টিতে হ্রাস পায়। বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয় ২২টি পয়েন্টে।

নদ-নদীর বিপদসীমা পরিস্থিতি সম্পর্কে পাউবো’র তথ্যে জানা গেছে, গতকাল উত্তর জনপদে প্রধান অববাহিকা ব্রহ্মপুত্র নদে বিপদসীমার উপরে পানি আরও কমেছে। ব্রহ্মপুত্র নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৮০ সেন্টিমিটার ও চিলমারীতে ১০৮ সে.মি. ঊর্ধ্বে প্রবাহিত হচ্ছে। যমুনা নদেও কিছুটা কমছে পানি। ৬টি পয়েন্টের মধ্যে বাহাদুরাবাদে বিপদসীমার ১৫৬ সে.মি., ফুলছড়ি পয়েন্টে ১৪৪ সে.মি., সারিয়াকান্দিতে ১২৫ সে.মি., কাজিপুরে ১২০ সে.মি., সিরাজগঞ্জে ৯৪ সে.মি., আরিচায় যমুনার পানি বিপদসীমার ৩৩ সেমি ঊর্ধ্বে প্রবাহিত হচ্ছে।

উত্তর জনপদের কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর পানি আরও কমে বিপদসীমার ৮২ সে.মি. ওপর রয়েছে। গাইবান্ধায় ঘাগট নদীর পানি কমে বিপদসীমার ৮৫ সে.মি. ঊর্ধ্বে আছে। টাঙ্গাইলের এলাসিন ঘাটে ধলেশ্বরী নদী বিপদসীমায় বেড়ে ৯০ সেমি ঊর্ধ্বে প্রবাহিত হচ্ছে। বাঘাবাড়িতে আত্রাই নদীর পানি বেড়ে বিপদসীমার ৭১ সে.মি. ওপরে আছে। অন্যতম বৃহৎ অববাহিকা গঙ্গা-পদ্মা নদীর অধিকাংশ পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও তা ধীর গতিতে বাড়ছে। পদ্মার ভাটিতে গোয়ালন্দে পানি বিপদসীমার ৫৮ সে.মি. এবং ভাগ্যকূলে বিপদসীমার ২৪ সে.মি. ঊর্ধ্বে প্রবাহিত হচ্ছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সুরমা ও কুশিয়ারাসহ প্রায় সবকটি নদীর পানি হ্রাস অব্যাহত রয়েছে। সিলেট বিভাগে বন্যার উন্নতি হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন