শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিএসটিআই পরিচালকের অপসারণ দাবি

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ২১ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশ স্টান্ডার্ড এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউটের (বিএসটিআই) পরিচালক আব্দুল মান্নানের অপসারণ দাবি করেছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। দাবি মানা না হলে বিএসটিআই কার্যালয় ঘেরাও করারও ঘোষণা দিয়েছেন সংগঠনটি। গতকাল শনিবার দুপুরে টিএসসির ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় (ঢাবি) সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে দুধ নিয়ে গবেষণাকারী ঢাবি বায়োমেডিকেল রিসার্চ সেন্টারের সাবেক পরিচালক প্রফেসর আ ব ম ফারুক উপস্থিত ছিলেন।


প্রফেসর আ ব ম ফারুককে হুমকি প্রদান ও অমর্যাদার প্রতিবাদে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাবি সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর আ ক ম জামাল উদ্দিন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক শরিফুল হাসান শুভ, ঢাবি শাখার সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, সাধারণ সম্পাদক আল মামুন প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে আ ক ম জামাল উদ্দিন বলেন, দুধ নিয়ে গবেষণা করায় প্রফেসর আ ব ম ফারুককে হুমকি প্রদান ও বেঈমান হিসেবে গালমন্দ করেন বিএসটিআই পরিচালক আব্দুল মান্নান, যা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাকে অপসারণ করা না হলে আমরা বিএসটিআই কার্যালয় ঘেরাও করবো।


প্রফেসর আ ব ম ফারুক বলেন, যে কোম্পানীর দুধ পাস্তুরিতকরণের মেশিন আছে, সুযোগ-সুবিধা আছে, সে কোম্পানীর দুধে কিন্তু জীবাণু থাকার কথা নয়। এর মানে হলো ওই সুবিধাটুকু হয়তো সঠিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে না। এটা একটা ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটি। পাস্তুরিতকরণের চেক পয়েন্টগুলো আন্তরিকতার সঙ্গে দেখলে ও মনিটরিং বাড়ালে পাস্তুরিতকরণ প্রক্রিয়ার পর দুধে এত জীবাণু থাকার কথা নয়।

প্রফেসর ফারুক বলেন, দুধ ভালোভাবে পাস্তুরিতকরণ করা হলে জাল না দিয়েও খাওয়া যাবে। আজকে দেশে দুধের বিষয়টি নিয়ে যে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, তা দূর করার জন্য আমরা কোম্পানীগুলোকে অনুরোধ করব। দ্রুত এ সমস্যা সমাধানের জন্য কোম্পানীগুলোকে তাদের দুধ পাস্তুরিতকরণ ইউনিটে কর্মরত কর্মচারীদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে, তাদের আরও সচেতন করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, গরু, মহিষ এগুলো রোগাক্রান্ত হতেই পারে। এজন্য তাদের এন্টিবায়োটিক দিতে হয়। পশু চিকিৎসার জন্য যে সমস্ত এন্টিবায়োটিক আছে, গরু অসুস্থ হলে সেগুলো দেয়া উচিত। মানুষের এন্টিবায়োটিক কেন গরুকে দিতে হবে! গরুর শরীরে মানুষের এন্টিবায়োটিক গেলে তার দুধের মধ্যে ওই এন্টিবায়োটিক আসে, যা পরবর্তীকালে আর মানুষের কাজে আসবে না, অকার্যকর হয়ে যাবে। এজন্য মানুষের এন্টিবায়োটিক গরুকে দেয়া যাবে না। নিয়ম হচ্ছে, এন্টিবায়োটিক সেটা ট্যাবলেট, ক্যাপসুল বা ইনজেকশন যাই হোক না কেন, তা দেয়ার পরে কমপক্ষে ২১ দিনের মধ্যে সে প্রাণীর দুধ বা মাংস খাওয়া যাবে না। কিন্তু সে নিয়ম মানা হচ্ছে না। জনগণের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে হলেও দুধ সংগ্রহের সময় এ নিয়ম মানা উচিত। ঢাবির এ গবেষক বলেন, বাংলাদেশের আইনে গরুর জন্য তৈরিকৃত কৃত্রিম খাদ্যে এন্টিবায়োটিক দেয়া নিষেধ। কিন্তু পর্যবেক্ষণের অভাবে সেটা দেয়া হচ্ছে। চিকিৎসাগতভাবে যতটুকু এন্টিবায়োটিক গরুর শরীর থেকে আমাদের শরীরে আসে, তার চেয়ে অনেক বেশি আসে গরুকে কৃত্রিম এসব খাদ্য খাওয়ানোর ফলে। কারণ এসব খাদ্য খাওয়ানো হচ্ছে অসুস্থ এবং সুস্থ সব গরুকেই। সুতরাং, সুস্থ গরুর দুধ হলেই যে তা এন্টিবায়োটিকমুক্ত হবে, তা নাও হতে পারে। এজন্য সরকারের দফতরগুলো যেন বাজার থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে এবং যেসব উৎপাদক এন্টিবায়োটিক মিশিয়ে কৃত্রিম খাদ্য বানায় তাদের শাস্তি দেয়। তিনি জনস্বার্থে ট্যানারির বর্জ্যে এসব গো-খাদ্যে ব্যবহার হচ্ছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখবেন বলেও জানান।

ঢাবির বায়োমেডিকেল রিসার্চ সেন্টারের সাবেক এ পরিচালক বলেন, আমার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার একটা হুমকি আছে। আইনগত ব্যবস্থা যদি কেউ নেন, তবে আমরাও আইনের সামনে দাঁড়াতে রাজি আছি। তবে আমি এখন পর্যন্ত আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেই নি। আমার কাছে একটি লিগ্যাল নোটিশ এসেছিল। সাতদিনের মধ্যে আমাকে লিগ্যাল নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছিল। সাতদিনের মধ্যেই আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য যেটুকু বলার আমি তা বলেছি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন