বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

সউদী আরবে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা মোতায়েনে বাদশাহর সম্মতি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

সউদী আরবে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা মোতায়েনের প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন সউদী বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সউদ। গত শুক্রবার সউদী আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় টুইটারে এ তথ্য জানিয়েছে। একইদিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে সউদী রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এসপিএ জানিয়েছে, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা জোরালো করতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগও এক বিবৃতিতে সউদী আরবে সেনা মোতায়েনের খবর নিশ্চিত করেছে। জুনে মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগন জানিয়েছিল, মধ্যপ্রাচ্যে ১ হাজার সেনা মোতায়েন করবে যুক্তরাষ্ট্র।

খবরে বলা হয়, ইরানের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই সউদী আরবে মার্কিন সেনা মোতায়েনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে পেন্টাগন। মধ্যপ্রাচ্যে ‘উদ্ভূত হুমকি’ থেকে মার্কিন স্বার্থকে রক্ষা করতেই এ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে, বলেছে তারা। পেন্টাগনের ঘোষণার পাশাপাশি সউদী আরবও তার দেশে মার্কিন সেনা মোতায়েনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বাদশাহ সালমান ‘আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা জোরদারে’ দেশে মার্কিন সেনা উপস্থিতিতে অনুমোদন দিয়েছেন, সউদী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের টুইটের বরাত দিয়ে এমনটাই জানিয়েছে বিবিসি। পারস্য উপসাগরে তেলবাহী ট্যাঙ্কার চলাচলের নিরাপত্তা নিয়ে পশ্চিমাদের সঙ্গে তেহরানের মুখোমুখি অবস্থানের মধ্যেই ওয়াশিংটন মধ্যপ্রাচ্যে তার ঘনিষ্ঠ মিত্রদেশটিতে সৈন্য পাঠানোর এ সিদ্ধান্ত নিল।

ইরাকের কুয়েত দখলের পর ১৯৯১ সালে ‘অপারেশন ডেজার্ট স্টর্মের’ মাধ্যমে সউদী আরবে মার্কিন সেনা মোতায়েন শুরু হয়েছিল। ২০০৩ সালের পর সেটি বন্ধ রাখা হয়। ওই বছর ইরাক অভিযান শেষে যুক্তরাষ্ট্র সউদী ঘাঁটি থেকে তার সৈন্যদের ফিরিয়ে আনে। এবার পেন্টাগন সউদী আরবের প্রিন্স সুলতান ঘাঁটিতে বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাপনা প্যাট্রিয়ট ও ৫০০ সেনা মোতায়েন করতে যাচ্ছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ঘাঁটিটিতে এফ-২২ জঙ্গিবিমানের একটি স্কোয়াড্রন পাঠানোরও পরিকল্পনা আছে। সউদী আরবে মার্কিন সেনা মোতায়েনের এ ঘটনা তেহরান-ওয়াশিংটন উত্তেজনায় ঘি ঢালবে বলে আশঙ্কা পর্যবেক্ষকদের।

গত বছর যুক্তরাষ্ট্র ইরান পরমাণু চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়ার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করে। তেহরানের তেল রপ্তানি বন্ধে ওয়াশিংটনের একের পর এক পদক্ষেপও দুই দেশকে মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড় করিয়েছে। স¤প্রতি ইরান যুক্তরাষ্ট্রের একটি মনুষ্যবিহীন ড্রোনকে গুলি করে ভূপাতিতও করেছে। বৃহস্পতিবার হরমুজ প্রণালীতে মার্কিন নৌযান ইউএসএস বক্সার একটি ইরানি ড্রোনকে ভূপাতিত করেছে বলে ওয়াশিংটন দাবি করলেও তেহরান তা উড়িয়ে দিয়েছে।

শুক্রবার সউদী আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় টুইটার পোস্টে জানায়, ‘আঞ্চলিক হুমকির মুখে সউদী আরব ও যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিনের অংশীদারত্বকে জোরালো করছে।’
বাদশাহ সালমান যুক্তরাষ্ট্রকে সউদী আরবে সেনা মোতায়েনের অনুমতি দিয়েছেন বলেও জানানো হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, সউদী আরবে প্রায় ৫০০ সেনা সদস্যকে মোতায়েন করা হতে পারে। পেন্টাগনের গত মাসের ঘোষণার অংশ হিসেবে তাদের মোতায়েন করা হবে বলেও জানান তিনি।
স¤প্রতি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সিএনএন জানিয়েছিল, ট্রাম্প প্রশাসন সউদী আরবের রাজধানী রিয়াদের উত্তর অংশে অবস্থিত প্রিন্স সুলতান বিমান ঘাঁটিতে পাঁচশো সেনা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা জানান, বিমান ঘাঁটিতে আগে থেকেই অল্প সংখ্যক সেনা রয়েছে। তবে ওই ঘাঁটিতে মোতায়েন থাকা মার্কিন পেট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাসহ রানওয়ে রক্ষণাবেক্ষণ এবং বিমান ঘাঁটির উন্নয়নের জন্য আরও কিছু সেনা পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। বিমান ঘাঁটিতে পঞ্চম প্রজন্মের অত্যাধুনিক স্টিল্থ এফ-২২সহ অন্যান্য মডেলের জঙ্গিবিমান ওড়ানোর পরিকল্পনা ওয়াশিংটন নিচ্ছে বলেও ওই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

ইরানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই সউদী আরবে সেনা পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি থেকে গত বছর যুক্তরাষ্ট্র বের হয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে তেহরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল শুরু করে ওয়াশিংটন। সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Afzalur ২১ জুলাই, ২০১৯, ৫:২১ এএম says : 0
Saudi is not able to protect there self , it like a lady. Very good for them coz Saudi must pay them nonsense human
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন