রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মার পানি বিপদসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রবিবার জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এরই মধ্যে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজার হাজার পরিবার। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। উঁচু স্থানে ও শহর রক্ষাবাধের উপর আশ্রয় নিচ্ছে মানুষ। মারাত্বক সংকট দেখা দিয়েছে পশু খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির।
সরেজমিনে রবিবার সকালে দেখা যায়, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবোগ্রাম ইউনিয়নের কাওয়াজানি গ্রামের বাসিন্দা শুকুর জান বেগমের বসতবাড়িতে হাটু সমান পানি। গবাদিপশু ও সন্তানদের নিয়ে তাই বসতী তৈরি করছেন শহর রক্ষা বাধের উপর। শুধু শুকুর জান বেগম নয় দেবোগ্রাম ইউনিয়নের রমজান শেখ, রতন শেখ, শুকুর আলীসহ প্রায় ৫০ টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে শহর রক্ষা বাধে। পানি বন্দি হয়ে পড়েছে রাজবাড়ী সদর উপজেলার বরাট, মিজানপুর, পাংশা উপজেলার হাবাসপুর, কালুখালী উপজেলার কালিকাপুর, রতনদিয়া, গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া, দেবোগ্রাম, ছোট ভাকলা ইউনিয়নসহ মোট ৯ টি ইউনিয়নের বেশির ভাগ মানুষ।
পানিবন্দি কাওয়াজানি গ্রামের বাসিন্দা শুকুরজান বেগম জানান, বাড়ি ঘরে পানি উঠে যাওয়ায় এখন আর বসবাসের উপযোগি না থাকায় রাস্তায় অবস্থান নিয়েছেন তার পুরো পরিবার। বাড়ি পানি মাঠে পানি বসবাসের তো সমস্যা হচ্ছেই অসুবিধা হচ্ছে রান্না করতে। পাশাপাশি অভাব দেখা দিয়েছে পশু খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি।
দৌলতদিয়া ইউনিয়নের সাত্তার মেম্বারের পাড়া এলাকার বাসিন্দা হারুন অর রশিদ অভিযোগ করেছেন এক সপ্তাহ ধরে তারা পানিবন্দি হয়ে থাকলেও এখন পর্যন্ত প্রশাসন বা কোন সংস্থাই সাহায্য তো দুরের কথা কেই কোন খোজই নেননি।
শুধু বসত বাড়ি নয় বিদ্যালয়ে পানি প্রবেশ করায় এরই মধ্যে ক্লাস বন্ধ হয়ে গেছে রাজবাড়ী সদর উপজেলার ফুরসাহাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বরাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গোয়ালন্দ উপজেলার তেনাপচা ও চান খান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবায়েত হায়াত শিপলু জানান, উপজেলা প্রশাসনের খসড়া তালিকা মতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাঁড়াতে রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম দূর্গত এলাকা সরেজমিন পরিদর্শনে করবেন। ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হবে।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( সার্বিক ) মোঃ আশেক হাসান জানান, এবারের বন্যা মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের পর্যাপ্ত প্রস্তুুতি রয়েছে। ইতিমধ্যে জেলার পাচটি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের নিয়ে সভা করা হয়েছে। জেলার আশ্রয়ন সেন্টারগুলোকে প্রস্তুত করা হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে ৪৯ টি মেডিকেল টিম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন