বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

বর্ষায় নেই বৃষ্টি : মংলায় তীব্র গরম

মংলা থেকে মনিরুল ইসলাম দুলু | প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

আষাঢ়-শ্রাবণ এই ২ মাস বর্ষাকাল হলেও মংলায় বৃষ্টি নেই। তীব্র গরমে মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। গত বছরের এই সময় সপ্তাহে ১০০ মিলি মিটারের অধিক বৃষ্টি রেকর্ড করা হলেও এবছর বৃষ্টি নেই বললেই চলে। পড়ছে প্রচন্ড গরম।

স্থানীয়রা জানান, বর্ষা শুরু হলেই বৃষ্টির পানিতে খাল, বিল ও নদী ভরে যায়। ডুবে যায় এখানকার কয়েক হাজার চিংড়ি ঘের। আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে এ বছর মংলাতে বৃষ্টির হচ্ছে না বললেই চলে। মংলা নদী ও পশুর নদীতে পানির প্রবাহ স্বাভাবিক রয়েছে।
মংলা খেয়া ঘাটের মাঝি আশরাফ আলী জানান, রোদ বৃষ্টিতেই তাদের নৌকা চালাতে হয়। এখন যেভাবে গরম পড়ছে তাতে মনে হয় চৈত্র মাসের চেয়েও বেশি গরম পড়ছে। তাদের খুবই কষ্ঠ হচ্ছে।

কমিশনার নুর মোহাম্মদ সড়কের বাসিন্ধা ভ্যানচালক মো. ইসমাইল জানান, গরম বেশি পড়ায় শহরে লোকজন কম। তাই তার আয়ও হচ্ছে কম। সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছেন।
ব্যবসায়ী আহসান হাবিব হাসান জানান, মংলাসহ আশপাশের এলাকায় ৩৮/৩৯ তাপমাত্রায়ও মানুষ তেমন কষ্ট বোধ করেনি, কিন্তু এখন ৩৬/৩৭ তাপমাত্রায় শরীর পুরে যাচ্ছে। শরীরে জ্বালা পোড়া করছে। বৃষ্টি নেই বললেই চলে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) বাগেরহাট শাখার সভাপতি মো. নুর আলম শেখ জানান, আগে বাংলাদেশকে ৬ ঋতুর দেশ বলা হতো। এখন ৩টি বেশি ঋতু দেখা যায় না। শিল্পায়ন ও পরিবেশ দুষনের ফলে আবহাওয়ার এই পরিবর্তন। বায়ু দুষণ রোধ করতে হবে এবং সবুজ গাছপালা লাগাতে হবে।

শিপিং ব্যবসায়ী মেসার্স নুরু এন্ড সন্সের মালিক আলহাজ এইচ এম দুলাল জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এমন অবস্থার সৃষ্ঠি হচ্ছে। তাই মানুষের বসবাসের জন্য দ্রæত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। বন্ধ করতে হবে অপরিকল্পিত শিল্প কারখানা।
সেভ দ্যা সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেযারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম জানান, জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের দক্ষিনাঞ্চলের মানুষই বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এর পরেও এনিয়ে কোন গবেষনা নেই। বৃষ্টি না হওয়ায় এই এলাকাতে লবনাক্ততা বেড়ে যাচ্ছে। সুন্দরবনের উপর আরও বেশি সুনজর দিতে হবে।

মংলা আবহাওযা পর্যবেক্ষনাগার-এর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদ জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর বৃষ্টি কম হচ্ছে। আরও কয়েকদিন এই ভাবে চলবে। শুস্ক আবহাওয়ার কারনে মানুষের শরীরের জ্বালা পোড়া করছে। তবে বৃষ্টি হলেই এই অবস্থা থাকবেনা। গত বছরের এই সময় সপ্তাহে অন্তত ১০০ মিলি মিটারের অধিক বৃষ্টি রেকর্ড করে আবহাওয়া অফিস। কিন্তু এবছরের ৮-২১ জুলাই পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ৪৮ মিলি মিটার। এর মধ্যে ১৪ জুলাই বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ৪০ মিলি মিটার।
বায়ু দুষণ রোধে এখনই ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে এই পৃথিবী মানুষের বসবায়ের অনুপযোগি হয়ে পড়বে বলে মনে করেন এখানকার অভিজ্ঞ জনরা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন