শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সম্পাদকীয়

রিফাত হত্যার নেপথ্যে গডফাদারদের হস্তক্ষেপ ঘটনা ভিন্ন দিকে মোড় নিচ্ছে

মোবায়েদুর রহমান | প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

কারাবন্দি আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির স্বামী রিফাত শরীফ একটি সংঘবদ্ধ ঘাতক দলের নেতা নয়ন বন্ড এবং তার সাংগাৎদের চাপাতির কোপে নিহত হয়েছেন। ২ জুন রবিবার যখন রিফাত শরীফকে হত্যা করা হয় তখন একজন দুজন নয়, সেই হত্যাকান্ডে ১৪/১৫ জন অংশ নেয়। এই হত্যাকান্ড ঘটেছিল প্রকাশ্যে দিবালোকে। হত্যাকান্ডের ভিডিওতে দেখা যায় যে স্বামীকে রক্ষা করার জন্য রিফাতের স্ত্রী মিন্নি ঘাতকদের কাছে ছুটে যায় এবং তার স্বামীকে আঘাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করে। কিন্তু সবই ব্যর্থ হয়। ০০৭ নামের একটি ঘাতক গ্যাংয়ের নেতা নয়ন বন্ড এবং তার সাঙ্গ পাঙ্গদের অস্ত্রাঘাতে রিফাত শরীফ নিহত হন। নয়ন বন্ডের দলটি যে একটি ঘাতক গোষ্ঠী হিসাবে গড়ে উঠছিলো সেটির প্রমাণ পাওয়া যায় তাদের নামকরণ থেকে। বাংলাদেশে এই ধরণের ক্রাইমের একটি দুর্ধর্ষ এবং রোমাঞ্চকর ছবি দেখানো হয় বহু বছর আগে ঢাকার নাজ সিনোমায়। ছবিটি ছিলো জেমস বন্ড সিরিজের। সিরিজটির নাম ছিলো ০০৭ জেমস বন্ড। এই সিরিজের প্রথম ছবি ছিলো ‘ড. নো’। জেমস বন্ড সিরিজের আদলেই নয়নদের গ্রুপের কোড নেম হয় ০০৭ এবং জেমস বন্ডের নামের শেষ অংশটি ঘাতক নয়নের নামের শেষ অংশে জুড়ে দিয়ে করা হয় নয়ন বন্ড।

প্রকাশ্য দিবালোকে রিফাত শরীফের এই বিভৎস হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে সারা দেশে তোলপাড় শুরু হয়। যেহেতু অদূরে দন্ডায়মান কিছু সংখ্যক দর্শক হত্যাকান্ডের ভিডিও ধারণ করেছে তাই সেই ভিডিওটিও তৎক্ষনাৎ ভাইরাল হয়ে যায়। নয়ন বন্ডের অপরাধ চাপা দেওয়ার আর কোনো সুযোগ থাকে না। নয়ন বন্ড এবং তার গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে অনেক কু কীর্তি এবং অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ আসতে থাকে। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি এবং অপহরণেরও অভিযোগ ওঠে। যাই হোক, এমন একটি পটভূমিতে ২ জুলাইয়ের সংবাদপত্রে একটি চাঞ্চল্যকর সংবাদ দেখা যায়। ঐ সংবাদে বলা হয় যে আগের রাত্রে নয়ন বন্ড পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়েছে।

নয়ন বন্ডের এই হত্যাকান্ডে শিক্ষিত এবং সুশীল সমাজ চমকে ওঠেন। তারা বলেন ঘাতক দলের নেতা হিসাবে নয়ন বন্ড অনেক কিছুই জানতো। এই দলের প্রধান কে অর্থাৎ ডন কোন ব্যক্তি, কারা তাদেরকে অস্ত্র জোগাতো, রিফাতকে কেন এবং কিভাবে হত্যা করা হলো- ইত্যাকার সবকিছুই নয়ন বন্ড জানতো। নয়ন বন্ডকে হত্যা করে শুধু এক ব্যক্তিকেই দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো না, বরং নয়নের কাছে ঐ এলাকার যতো কুকীর্তি এবং অপরাধের তথ্য ছিলো সেই সব তথ্যকেও চিরতরে চাপা দেওয়া হয়।

নয়ন বন্ডের হত্যার পর থেকেই রিফাত হত্যাকান্ড অকস্মাৎ ভিন্ন মোড় নিতে থাকে। রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি, যিনি হলেন রিফাত শরীফ হত্যাকান্ডের প্রধান স্বাক্ষী, তার বিরুদ্ধে অনেক অনৈতিক এবং চারিত্রিক স্খলনের অভিযোগ আনা হয়। এমনও বলা হয় যে এর আগে নাকি নয়ন বন্ডের সাথে মিন্নির বিয়ে হয়েছিলো। কিন্তু এসব অভিযোগের পক্ষে কেউ কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি। আর একটি বিষয় সকলের নজরে আসে যে সভা সমিতি করে মিন্নির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে এবং মিন্নির চরিত্র হরণ করা হচ্ছে। আর এগুলোর রিং লিডার হচ্ছে বরগুনার স্থানীয় আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ছেলে সুনাম দেবনাথ শম্ভু। সে জেলা আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির একজন সদস্য এবং গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা। অনুসন্ধানে সাংবাদিকরা ঘটনার অনেক ভেতরে যেতে থাকেন এবং যেতে যেতে এই অপরাধী চক্রের শেকড়ে পৌঁছেন। সেখানে তারা এমন এক ব্যক্তিকে দেখতে পান যিনি অত্যন্ত প্রভাবশালী এবং যাকে পুলিশ টাচ করতে পারে না। নয়ন বন্ডের সমর্থকরা মিন্নির চরিত্র হরণ করে প্রচারণা শুরু করলে এই হত্যাকান্ড ভিন্ন মোড় নেয়।

দুই

আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি হলেন রিফাত হত্যা মামলার প্রধান স্বাক্ষী। স্বাক্ষীকে সাধারণত মামলার শুনানি কালে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় এবং তাকে জেরা করা হয়। মিন্নির ক্ষেত্রেও সেটি হবে বলে অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা আশা করছিলেন। কিন্তু কয়েকদিন আগে মিন্নির বাসায় পুলিশ আসে, মিন্নির মা এবং মিন্নিকে জেরা করে এবং তারপর পুলিশ ভ্যানে উঠিয়ে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ ভ্যানে উঠানোর সময় যখন জনগণ সেখানে জড়ো হয় এবং ভ্যানে উঠানোর কারণ জানতে চায় তখন পুলিশ বলে যে অধিকতর জেরার জন্য তাদের থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। থানায় নিয়ে সন্ধ্যার কিছুক্ষণ পর পুলিশের তরফ থেকে ঘোষণা করা হয় যে এই হত্যাকান্ডের সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে মিন্নিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এভাবেই অতি সুকৌশলে মিন্নিকে গ্রেফতার করা হয়। একই দিন রাত ১২টার দিকে ঘোষণা করা হয় যে পুলিশ মিন্নির ৭ দিনের রিমান্ড চেয়েছিলো। কিন্তু আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। সুতরাং দেখা যায় যে রিফাত হত্যার প্রধান স্বাক্ষী মিন্নি ধীরে ধীরে রূপান্তরিত হচ্ছে প্রধান আসামীতে অথবা তার সহযোগীতে।

মামলাটি যখন সবে মাত্র তদন্তনাধীন তখন পুলিশের সিনিয়র অফিসার এমনকি বরগুনার এসপিও বলেন যে, এই হত্যাকান্ডের সাথে মিন্নির সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। সে এই হত্যাকান্ডের পরিকল্পনার সাথেও মিন্নি নাকি জড়িত ছিলেন। সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে রিফাত হত্যাকান্ড প্রথমের দিকে সহজ বিষয় ছিলো। সেটি এখন আর সহজ থাকছে না। ক্রমান্বয়ে বিষয়টিকে জটিল রূপ দেওয়া হচ্ছে। ১০ মুখে এবং ১০ কানে এই কথা ছড়িয়ে গেলো যে, রিফাত শরীফের হত্যাকান্ডের পেছনে রয়েছে একজন বড় গডফাদার। তিনি অত্যন্ত প্রভাবশালী। নেপথ্য থেকে তিনি কলকাঠি নাড়ছেন। তাই মামলার মোড় ঘুরে যাচ্ছে।

দুই একদিন পরেই তার রিফ্লেকশন দেখা যায়। মিন্নির জামিনের জন্য আবেদন করা হয়। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেলো যে, বরগুনার কোনো আইনজীবীই মিন্নির পক্ষে আইনী লড়াই করার জন্য এগিয়ে আসছেন না। যে তিন জন আইনজীবীর আসার কথা ছিল তারাও সেদিন আদালতের বারান্দা থেকে কেটে পড়েন। মিন্নির আত্মীয় স্বজন এবং বন্ধুবান্ধবরা অভিযোগ করেন যে ঐ প্রভাবশালী মহলটির হাত এত লম্বা এবং এত সক্রিয় যে সেই হাত আইনজীবীদেরকেও ছুতে পেরেছে। তাই আইনজীবীরা আর মিন্নির পক্ষে এজলাসে দাঁড়াতে সাহস পাচ্ছেন না। এমন একটি অবস্থায় ঢাকা থেকে আইনজীবীরা বরগুনা যান এবং রবিবার বরগুনার জেষ্ঠ্য বিচারিক আদালতে জামিন চান। কিন্তু সেই জামিন আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়। একজন মহিলা যে প্রত্যক্ষভাবে কোনো অপরাধের সাথে জড়িত নয় তার ক্ষেত্রে জামিনের আবেদন প্রত্যাখ্যান একটি অকল্পনীয় ব্যাপার।

এসব খবর যখন মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়ে তখন অন লাইন নিউজ পোর্টালে দুইটি চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। গত ২১ জুলাই রবিবার একটি সরকারপন্থী অন লাইন নিউজ পোর্টালে দুইটি চাঞ্চল্যকর খবর বেরিয়েছে। প্রথম খবরটির শিরোনাম,‘শম্ভুর সঙ্গে মিন্নির আইনজীবীর রুদ্ধদ্বার বৈঠক’। খবরে বলা হয়, বরগুনার চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় শুরু থেকেই আলোচনায় আসেন বরগুনা ১ আসনে সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। এই হত্যা কান্ডের সাথে তার ছেলে সুনাম দেবনাথের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন সরাসরিই বলেছেন, নিজের ছেলে সুনাম দেবনাথকে বাঁচাতেই শম্ভু এই মামলায় প্রভাব খাটাচ্ছেন।

সেই শম্ভুর সঙ্গে গত শনিবার রাতে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন মিন্নির সদ্য নিয়োগ প্রাপ্ত আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম। একটি সূত্র জানিয়েছে, গত শনিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে বরগুনা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আব্দুর রহমান নান্টু এবং সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী আসলামকে শম্ভুর চেম্বারের ভেতরে প্রবেশ করতে দেখা যায়। সে সময় ঐ কক্ষে শম্ভুর পুত্র সুনাম দেবনাথ ও বরগুনার অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আক্তারুজ্জামান বাহাদুরও উপস্থিত ছিলেন। তারা কক্ষের ভেতরে প্রবেশের পর ভেতর থেকে সুনাম দরজা আটকে দেন। আধা ঘন্টা বৈঠক শেষে রাত ১০টা ১৫ মিনিটে মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম, বারের সভাপতি আব্দুর রহমান নান্টু ও বরগুনার অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুর রহমান বাহার সেখান থেকে বেরিয়ে যান।

অপর সংবাদটির শিরোনাম হলো,‘শম্ভুর দরজায় রিফাতের বাবা, নেপথ্যে কী?’ খবরে বলা হয়, বরগুনা ১ আসনের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ব্যক্তিগত ল’ চেম্বারে গিয়েছিলেন নিহত রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ। গতকাল রাত ১০টা নাগাদ তিনি শম্ভুর চেম্বারের পেছনের একটি কক্ষের দরজায় হাজির হন। ভেতরে তখন রিফাত হত্যা মামলার আসামী মিন্নির আইনজীবীর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছিলেন শম্ভু। তার ছেলে সুনাম দেবনাথও সেখানে ছিলেন। একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন শম্ভুর চেম্বারের বাইরে বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেন দুলাল শরীফ। এক সময় চেম্বারের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসেন সুনাম দেবনাথ। তিনি দুলাল শরীফের কানে কানে কিছু কথা বলেন। এর পর সেখান থেকে চলে যান দুলাল শরীফ।

তিন

গত শুক্রবার পুলিশের বক্তব্য মতে, আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবান বন্দী দিয়েছেন। আদালতকক্ষে যখন আয়েশা সিদ্দিকার জবাবন্দি গ্রহণ চলছিলো, তখন (সন্ধ্যা পৌনে ৬টা) তাঁর বাবা মোজাম্মেল হোসেন আদালত প্রাঙ্গণে ছুটে যান। তিনি চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘ সব শম্ভুবাবুর খেলা। শম্ভুর ছেলে সুনাম দেবনাথ (জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক) মাদকের সম্রাট। তাঁর পোলারে সেভ করার জন্য আজকে আমরা বলি হইয়া যাইতেছি। সব শম্ভু করায়। শম্ভু, শম্ভু, শম্ভু আর শম্ভুর ছেলে। আর এই খুনের সাথে জড়িত যারা, তারা একত্রিত হয়ে এগুলো করতেছে’।

রিফাত শরীফ হত্যাকান্ড নিয়ে পুলিশ যা বলতে বলেছে, আদালতে তা-ই বলেছেন আয়শা সিদ্দিকা। না বললে আরও ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হবে বলে হুমকি দেন পুলিশ কর্মকর্তারা। গত শনিবার আয়শার বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বরগুনা জেলা কারাগারের ফটকে মেয়ের সঙ্গে দেখা করে এসে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। মোজাম্মেল আরও বলেন, ‘স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে কী বলেছে, তা মেয়ের কাছে জানতে চেয়েছি। জবাবে সে বলেছে, পুলিশ যেভাবে বলতে বলেছে, জবানবন্দিতে সেভাবেই বলেছি।’ কাঁদতে কাঁদতে মোজাম্মেল হোসেন বলতে থাকেন, ‘ আজকে সাক্ষী বিবাদীর কাঠগড়ায়। নির্যাতন করে, হুমকি দিয়ে, ভয়ভীতি দেখাইয়া জবানবন্দি নিতেছে। আমার পরিবার এখন গৃহবন্দী। আমার ছেলে মেয়ের স্কুল কলেজ বন্ধ। হাটবাজার বন্ধ। জীবন নিয়া খেলা চলছে।’ তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাত্র ১০টার দিকে পুলিশের উপপরিদর্শক ওবায়দুল তাঁর বাসায় গিয়ে আয়শার চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র নিয়ে আসেন। আর গতকাল জোরজবরদস্তি করে জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।

মিন্নির পিতা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর মিন্নির উদ্ধৃতি দিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, রিমান্ডে নিয়ে মিন্নির ওপর শারিরীক নির্যাতন করা হয়েছে। বলা হয়েছে যে, পুলিশের শেখানো জবানবন্দি না দিলে আবারও মিন্নিকে রিমান্ডে নেওয়া হবে। বলা হয়েছে যে আওয়ামী লীগের এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর পুত্র সুনাম দেবনাথ বরগুনার মাদক সম্রাট। সে নয়ন বন্ড বাহিনীর আসল শক্তি। তাকে বাঁচাবার জন্যই সরকারি দল প্রশাসনের ওপর চাপ দিচ্ছে।

এর আগে বরগুনার পুলিশ সুপার বলেন যে, জেরা করার সময় মিন্নি এই হত্যাকান্ডে তার সম্পৃক্ততা স্বীকার করেছে। পরবর্তীকালে সাংবাদিকরা তাকে আরও প্রশ্ন করলে তিনি বলেন যে, কথাটি তিনি ঠিক ঐ ভাবে বলেননি।

এই পটভূমিতে মানুষের কথা, তারা শুধু পুলিশের কথা বিশ্বাস করবে কেন। পুলিশরা সাংবাদিক সন্মেলন করে সাংবাদিকদের কাছে মিন্নি জড়িত থাকার কথা বলছে। পুলিশ যদি সাংবাদিকদের সামনে কথা বলতে পারে তাহলে মিন্নিকেও সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হোক। কারণ বহুদিন থেকে মানুষ পুলিশের একতরফা কথা শুনে আর বিশ্বাস করতে চায় না। এই সরকার সাম্প্রতিককালে সুশাসনের কথা বলছে। তারা যদি সত্যি সত্যিই সুশাসন চায় তাহলে পুলিশের হাত থেকে তদন্তটি বিচার বিভাগে, না হলে নিদেন পক্ষে, পিআইবির হাতে দেওয়া হোক। তাহলে পূর্ণ সত্য না হলেও অর্ধ সত্য বেরিয়ে আসবে।

মিন্নিকে নিয়ে জবর রাজনৈতিক খেলা শুরু হয়ে গেছে। এই খেলার শেষ কোথায় তা দেখার জন্য মানুষ আগ্রহ ভরে তাকিয়ে আছে।
journalist15@gmail.com

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (12)
Md Ataur Rahman ২৩ জুলাই, ২০১৯, ২:১৬ এএম says : 0
এক জন সংসদ সদস্য কার পক্ষে থাকা উচিৎ ? সন্ত্রাসির পক্ষে না অসহায় মানুষের পক্ষে ৷ আমি মনে করি এমপির ছেলে কে আইনের আওতায় নেওয়া হউক ৷ আর সঠিক বিচার যদি হয় ৷ তাহলে কোন সন্ত্রাসির পক্ষে সংসদ সদস্য কথা বলতে পারবে না ৷আমরা বর্তমান সরকারের কাছে এটাই দাবি ৷ দেশ কে বাচাঁন দেশের মানুষ কে বাচান ?
Total Reply(0)
Nur Islam Rangpur ২৩ জুলাই, ২০১৯, ২:১৭ এএম says : 0
মিন্নি নির্দোষ,কারন তা পুলিশের ভাষায় পরিস্কার,পুলিশ হেপাজতে মিন্নি তার বাসায় থাকলো এতদিন,রিফাতের বাবা মানব বন্ধন করলো আর পুলিশ মিন্নিকে নিয়ে গেল,১২ ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ করার পর মিন্নিকে গ্রেফতার দেখানো হলো,আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলো ৫ দিনের রিমান্ড মন্জুর হলো,২ দিনে জিজ্ঞসাবাদ শেষ হলো,তরিঘড়ি করে ছুটির দিনে আদালতে প্রেরেরন করা হলো,জবান বন্দি শেষে ভ্যান গাড়িতে উঠানোর সময় মুখ চেপে ধরা হলো,এমপি পুত্রের ধরা হলো না,পাবলিক সবেই বুজে।
Total Reply(0)
Amin Uddin ২৩ জুলাই, ২০১৯, ২:১৭ এএম says : 0
প্রকৃত আসামীকে খুজে বেরকরার জন্য সঠিক তদন্ত চাই? অন্যায় ভাবে কাওকে যেন পাশানো না হয়, সেই দিকে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য দেশের মানবাধিকার সংস্থার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। একটি বিষয় না বললেই হয় না, নয়ন বন্ডকে জিবিত গ্রেফতার না করে তাকে কেনো ক্রস ফায়ার করে মেরে ফেলা হলো, এটা তদন্ত করলেই সঠিক তত্ব্য বাহির হয়ে আসবে।? আসামী যেই হোক সটিক তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করছি।
Total Reply(0)
Nazim Uddin ২৩ জুলাই, ২০১৯, ২:১৭ এএম says : 0
বরগুনায় প্রভাবশালীদের তান্ডবে যা হচ্ছে তা সম্পুর্ন অপ্রত্যাশিত, অগ্রহণযোগ্য এবং ন্যাক্কারজনক! এভাবে চলতে থাকতে দেশে ন্যায়বিচার এবং সুশাসন প্রশ্নবিদ্ধ হবে! তাই মিন্নীকে নিরপেক্ষ এবং বাধাহীন আইনি সহায়তা ও মানবাধিকার নিশ্চিত করুন এবং নেপথ্যের সকল ক্ষমতাধর গডফাদারদের আইনের আওতায় আনুন!
Total Reply(0)
Ahmed Rubel ২৩ জুলাই, ২০১৯, ২:১৮ এএম says : 0
মিন্নীর পক্ষে কোন আইনজীবী যখন আদালতে দাড়ালো না,,, তখন তো কোন নেতাকে বলতে দেখিনি মিন্নীকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া উচিৎ। এক সংখ্যালঘু এমপির ছেলের দাপটের কারনেই মিন্নীর পক্ষে আইনজীবী দাড়ালো না,,, তারপরও এই সংখ্যালঘুরাই বহির্বিশ্বে গিয়ে বলছে তারা বাংলাদেশে নিরাপদ না,,, আরে এটা তো মুসলমানদের বলা উচিৎ তারা বাংলাদেশে নিরাপদ না...!!!
Total Reply(0)
সিমলা পারভীন শিমু ২৩ জুলাই, ২০১৯, ২:১৯ এএম says : 0
গডফাদার যারা তাদের বিচার হোক এটা সবাই চায়। কিন্তু মিন্নি কি একেবারে নিরদোষ? শুরুতে সবাই মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলেছিল আর এখন কেন মিন্নির জন্য এত হাহাকার। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বোঝাই যায় যে মিন্নির ভূমিকা কতখানি ছিল। নয়নের বাসায় মিন্নির যাওয়া আসা ছিল সঠিক তদন্ত হলে মিন্নির কাছ থেকে অনেক তথ্য পাওয়া যাবে। কিন্তু পুলিশ তো নেতাদের পা চাটা গোলাম।
Total Reply(0)
Mohammed Hassan ২৩ জুলাই, ২০১৯, ২:১৯ এএম says : 0
মিন্নির পক্ষে যতক্ষণ না পর্যন্ত আওয়ামী লীগের এমপির ছেলে সুনাম দেবনাথের দয়া না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত জামিন হবে না, এই দেশের আইন ক্ষমতাসীন দলের ইশারায় চলবে এটা জাতির জনকের স্বপ্ন ছিলো ।
Total Reply(0)
সবুজ বুং ২৩ জুলাই, ২০১৯, ২:২০ এএম says : 0
আসলে মিন্নিকে ফাঁসানো হয়েছে নয়ন বন্ডের সাথে সম্পর্ক রয়েছে বলে। মূলতঃ সম্পর্কের জের ধরে যদি নয়ন বন্ড রিফাত শরীফকে মারতো তাহলে অনেক আগেই মারতে পারতো। আমি মনে করি, চেয়ারম্যানের বউর সাথে ঝগড়া করার কারণেই রিফাত শরীফ খুন হয়েছে। ভিডিও ফুটেজের হামলার নেপথ্যে রিফাত ও রিশান ফরাজীর মুখ্য ভূমিকাই তার প্রমাণ।
Total Reply(0)
আকাশ ২৩ জুলাই, ২০১৯, ৯:৪০ এএম says : 0
বিষয়টি নিয়ে লেখার জন্য মোবায়েদুর রহমান সাহেবকে অসংখ্য ধন্যবাদ
Total Reply(0)
সাদ্দাম ২৩ জুলাই, ২০১৯, ৯:৪১ এএম says : 0
মিন্নিকে নিয়ে জবর রাজনৈতিক খেলা শুরু হয়ে গেছে। এই খেলার শেষ কোথায় তা দেখার জন্য মানুষ আগ্রহ ভরে তাকিয়ে আছে।
Total Reply(0)
Sunahwar Ali ২৩ জুলাই, ২০১৯, ১০:৩৭ এএম says : 0
I think some of the local politicians do have link and connection such 007 group and independent public inquiry must be carried out and everyone involved indirectly or indirectly with such 007 group must be getting proper punishment by the law of the land, the police can't be trusted!
Total Reply(0)
Md. Shohag ২৪ জুলাই, ২০১৯, ৮:৫৯ এএম says : 0
Right, More Nibey Atai Prokitir Niom
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন