শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সিটি কর্পোরেশন কী কাজ করছে?

ডেঙ্গু দমনের প্রকৃত তথ্য উঠে না আসায় হাইকোর্টে দুই স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে তলব

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের তলব করেছেন হাইকোর্ট। গতকাল সোমবার বিচারপতি তারিক উল হাকিম এবং বিচারপতি মোহাম্মদ সোহরাওয়ার্দীর ডিভিশন বেঞ্চ তাদের তলব করেন। এডিস মশা নিধন এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধে দুই সিটি করপোরেশনের গৃহীত ব্যবস্থার বিষয়ে তুলে ধরা প্রতিবেদনে তথ্য যথাযথভাবে উঠে না আসায় আদালত তাদের তলব করেন। আগামী ২৫ জুলাই সশরীরে তাদের হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
গতকাল রিটের শুনানিকালে আদালত দুই সিটি করপোরেশনের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রাখেন- সিটি করপোরেশন কী কাজ করছে? আগে সিটি কর্পোরেশনকে সচেতন হতে হবে। তারপর তারা মানুষকে সচেতন করবে। মানুষ জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে যাচ্ছে। আর আপনারা (সিটি করপোরেশন) বলছেন অ্যাওয়ারনেস। আদালত বলেন, সাংবাদিকরা আর তো শখে লেখে না যে, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মানুষ মারা গেছে। ডেঙ্গুতে মারা যাওয়ার খবর আজও পত্রিকায় এসেছে।
এর আগে গত ১৪ জুলাই এডিস মশা নিধন এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জানাতে বলেছিলেন হাইকোর্ট। এ প্রসঙ্গে গতকাল হাইকোর্ট উষ্মা প্রাশ করে বলেন, আমরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদক্ষেপ জানতে চাইলাম। অথচ তার কোনো অগ্রগতি নেই। গতকাল শুনানিতে সরকারপক্ষে অংশ নেয়া সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সায়রা ফাইরোজ রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করেন। প্রতিবেদনে সিটি করপোরেশনের গৃহীত পদক্ষেপ যথাযথভাবে উঠে না আসায়, দুই সিটির দুই প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে তলব করেন।
এর আগে গত ১৪ ডিসেম্বর বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান এবং বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের ডিভিশন বেঞ্চ ডেঙ্গু জীবাণুবাহী এডিস মশা নিধনে প্রয়োগকৃত ওষুধ কেন কাজ করছে না তা তদন্তের নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে এডিস মশা নিধনের জন্য আমদানিকৃত ওষুধে কোনো ভেজাল আছে কি না, থাকলে এটির সঙ্গে কারা জড়িত সেটিও তদন্তের মাধ্যমে বের করার আদেশ দেয়া হয়েছে। আগামী ২০ আগস্টের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এ প্রতিবেদন দাখিল করবে। এ ছাড়াও মশক নিধনে কার্যকর ওষুধ আনা এবং তা ছিটানোর জন্য অতি দ্রুত পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এতে প্রয়োজনে সরকারের সহায়তা নিতেও বলা হয়। রিটের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, সিটি কর্পোরেশন মশা নিয়ন্ত্রণে যে ব্যবস্থা নিচ্ছে সেটা অকার্যকর। মিডিয়ায় রিপোর্ট এসেছে এই যে ওষুধগুলো দেয়া হচ্ছে, সে ওষুধগুলোর মধ্যে কার্যকারিতা নেই। তারপরও সেই ওষুধ তারা ছিটাচ্ছে। এখানে ২০-২২ কোটি টাকার অর্থনৈতিক সংশ্লিষ্টতা আছে। এগুলো দুর্নীতির মাধ্যমে নেয়া হচ্ছে। যারা এ কাজগুলো করছে তাদের বিরুদ্ধে সিটি কর্পোরশেন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আরেকটা রিপোর্ট এসেছে। সিটি কর্পোরেশন বলছে- নতুন ওষুধ এনে কার্যকর করতে ৬ মাস লাগবে। আমি বলেছি, জনগণের প্রয়োজনে টেন্ডার এবং আইনকানুনের বাইরে দ্রুত ওষুধগুলো এনে ব্যবহার করে জনগণের জীবন রক্ষার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। শুনানি শেষে আদালত দু’টি নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রথমত, এ অকার্যকর ওষুধ যারা এনেছেন, যারা সরবরাহ করেছেন এবং এর সঙ্গে যারা জড়িত এটি একটি দুর্নীতি। সিটি কর্পোরেশনকে এ দুর্নীতি তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, সিটি কর্পোরেশন যেটা চিন্তা করছে ভালো ওষুধ আনবে- সে ব্যাপারে আদালত বলেছেন, এ বিষয়ে অতিদ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। সরকারের সহায়তা নিয়ে কার্যকর ওষুধ এনে তা ছিটানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন