শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

১৩ সন্তানের সবাই ছুঁড়ে ফেললো, হিন্দু বৃদ্ধার ঠাঁই হলো মুসলিম পরিবারে!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০১৯, ২:৪৬ পিএম

তেরো সন্তানের জননী তিনি। কিন্তু ছেলেমেয়েদের সংসারে ঠাঁই হয়নি বিধবা বৃদ্ধার। অবিবাহিত এক মেয়েকে নিয়ে প্রায় রাস্তায় এসে দাঁড়িয়েছিলেন।

কিন্তু মানবিকতা তো মুছে যায়নি। ফুরিয়ে যায়নি ভাল মানুষও। নবতিপর বৃদ্ধা বেলা রাণী দত্ত তাই নতুন ঘর পেয়েছেন। সাকিনা বিবির ঝুপড়িই এখন তার ঠিকানা।

৯৫ বছর বয়সী বেলা রাণী দেবী পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথির খড়কি গ্রামের বাসিন্দা। স্বামীর মৃত্যুর পরে ছেলেমেয়েদের মধ্যে জমিজমার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে অশান্তি শুরু হয়। তার জেরেই বছর চারেক আগে ছেলে আর তাদের স্ত্রীরা বৃদ্ধা বেলা রাণী দেবীকে বাড়ি থেকে বার করে দেন। সেই সময় কাঁথির মহকুমাশাসকের কাছে নালিশ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বৃদ্ধার।

তখন অবিবাহিত মেয়ে শোভা রাণীকে নিয়ে জুনপুটের রামপুরের কাছে বাড়ি ভাড়া নিয়ে চলে আসেন বেলা রাণী দেবী। মেয়ে শোভা রাণী লোকজনের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন। কোনওরকমে মা-মেয়ের চলে যেত। তবে কাজ করতে করতে শরীর ভেঙে যায় এবং স্নায়ুর রোগে আক্রান্ত হন শোভা রানী।

আর এক সড়ক দুর্ঘটনায় হাত-পা ভাঙে বেলা রানী দেবীর। অর্থাভাবে বাড়ি ভাড়া দিতে পারছিলেন না। তাই বাড়িওয়ালা মা-মেয়েকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। আর সেই সঙ্কটকালেই তাদের পাশে এসে দাঁড়ান এক মুসলিম পরিবার।

কাঁথির উত্তর দারুয়ায় সাকিনা বিবির ঝুপড়ি ঘরেই এখন থাকেন বেলা রানী এবং শোভা। সাকিনার স্বামী বাইরে থাকেন। পরিচারিকার কাজ করে, চারাগাছ বেঁচে বহু কষ্টে দিন গুজরান করেন সাকিনা। তবু সংসারে আরও দু’জন মানুষকে ঠাঁই দিতে দু’বার ভাবেননি তিনি।

সাকিনা বলেন, ‘মাসিমা (বেলা রাণী) আমার স্বামীর পূর্ব পরিচিত। ঠিকমতো খেতে পাচ্ছিলেন না। অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাই আমাদের বাড়িতে এনে রেখেছি।’
বেলা রাণী দেবী ও শোভাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার কথা অবশ্য স্বীকার করছেন না তার ছেলে, বৌমা, নাতি-নাতনিরা।

এক পুত্রবধূ লক্ষ্মী দত্ত বলেন, ‘মাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়নি। উনি নিজেই মেয়েকে নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। আমরা বহুবার ফিরিয়ে আনার জন্য গিয়েছি। কিন্তু উনি রাজি হননি।’

তবে পুত্রবধূর এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন বেলা রানী দেবী। তিনি সাকিনার হাত দু’টো ধরে বসেছিলেন। চোখে জল। পাশে দাঁড়ানো মেয়ে শোভা বললেন, ‘দাদা-বৌদির সংসারে আমাদের জায়গা হয়নি। কিন্তু সাকিনা আশ্রয় দিয়েছেন। আমরা তার কাছে কৃতজ্ঞ।’

আর বেলা রাণী বলেন, ‘সাকিনাই আমার সত্যিকারের মেয়ে।’

সূত্র: আনন্দবাজার।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Jahangir ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৪:২৪ পিএম says : 0
Where is BJP ? Ask them where is their cow democracy?
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন