বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বন্যার পানি হ্রাস

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ২৪ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৫ এএম | আপডেট : ১২:১১ এএম, ২৪ জুলাই, ২০১৯

দেশের বন্যা কবলিত উত্তর, উত্তর-পূর্ব ও মধ্যাঞ্চলের বেশিরভাগ স্থানে নদ-নদীর পানি কমতির দিকে রয়েছে। এদিকে বন্যার্ত লাখ লাখ মানুষের মাঝে খাদ্য, আশ্রয়, বিশুদ্ধ পানি, চিকিৎসা ও ওষুধের সঙ্কট মিলে তাদের কষ্ট-দুর্ভোগ দিন দিন প্রকট হয়ে উঠেছে। ত্রাণ সাহায্যের আশায় প্রহর গুণছে তারা। কিন্তু ত্রাণের অভাবে সর্বত্র হাহাকার অবস্থা বিরাজ করছে। গতকাল (মঙ্গলবার) পর্যন্ত প্রায় এক সপ্তাহ যাবৎ বন্যার পানি হ্রাস পায়। এরফলে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত থাকে। তবে বাংলাদেশের সাথে লাগোয়া উজানভাগে উত্তর-পূর্ব ভারতে আবারও শুরু হয়েছে অতিবৃষ্টি। গতকাল দ্বিতীয় দিনের মতো ভারতের ওই অঞ্চলের বিশেষ করে আসাম, মেঘালয়, অরুণাচল, মিজোরাম, সিকিম এবং হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাংশে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হয়।

উপরোক্ত অঞ্চলে অর্থাৎ উজানের অববাহিকায় এই ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত আরও ৫ দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) পূর্বাভাস দিয়েছে। উজানের এই পাহাড়ি ঢল-বানের পানি আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে নামতে পারে ভাটিতে বাংলাদেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে। এ অবস্থায় ভারতের উজানের বর্ষণের কারণে বন্যা পরিস্থিতির সম্ভাব্য অবনতি নিয়ে ফের উদ্বেগ-আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র গতকাল জানায়, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় তিস্তা ও ধরলা নদীসমূহের পানির সমতল দ্রæত বৃদ্ধি পেতে পারে। উত্তর জনপদের ধরলা নদী কুড়িগ্রামে গতকাল বিকেল পর্যন্ত পানি বেড়ে গিয়ে বিপদসীমার ২০ সে.মি. ওপরে প্রবাহিত হয়। তিস্তা নদী ডালিয়া ও কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ২৮ ও ২৪ সে.মি. নিচে। সুরমা-কুশিয়ারা ছাড়া অন্যান্য প্রধান নদ-নদীর পানির সমতল হ্রাস পায়।
বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং এর সংলগ্ন উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম, পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চল ও মেঘালয় প্রদেশে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় যমুনা এবং গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীসমূহের পানির সমতল হ্রাস অব্যাহত থাকতে পারে। অন্যদিকে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে।

আগামী ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদে পানির সমতল স্থিতিশীল হয়ে আসতে পারে। এ সময় গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও মুন্সীগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত থাকতে পারে। গতকাল ১০টি নদী ২০ পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এরমধ্যে ১৫টি পয়েন্টে ছিল পানি কমতির দিকে।

এছাড়া দেশের নদ-নদীসমূহের ৯৩টি পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে ৩২ পয়েন্টে পানির সমতল বৃদ্ধি, ৫৯ পয়েন্টে হ্রাস এবং দুটি পয়েন্টে অপরিবর্তিত থাকে। গত সোমবার ৩৪ পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি ও ৫৬টিতে হ্রাস পায়। গতকাল সকাল ৯টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশের অভ্যন্তরে নদ-নদী অববাহিকা এলাকায় উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাতের পরিমান, সুনামগঞ্জে ১৭২, মহেশখোলায় একশ’, পঞ্চগড়ে ৯৭, লরেলগড়ে ৯৫, কানাইঘাটে ৬৬, কমলগঞ্জে ৬১, জাফলংয়ে ৫৩ মিলিমিটার।
নদ-নদী পরিস্থিতি
পাউবো সূত্র প্রধান নদ-নদীসমূহের প্রবাহ সম্পর্কে সর্বশেষ তথ্যে জানায়, গতকাল উত্তরাঞ্চলে ঘাগট ও ধরলা নদী বিপদসীমার ঊর্ধ্বে প্রবাহিত হয়। তিস্তায় পানি বিপদসীমার নীচে নামে। ব্রহ্মপুত্র চিলমারী পয়েন্টে এবং যমুনা ৬টি পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর থাকলেও পানি হ্রাসের দিকে। ধলেশ্বরী, আত্রাই ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি হ্রাস অব্যাহত রয়েছে। তবে উত্তরের বানের পানির ভাটির দিকে চাপ অব্যাহত থাকায় ঢাকার চারপাশের নদ-নদী বুড়িগঙ্গা, বালু, তুরাগ, টঙ্গী খাল, শীতলক্ষ্যা ও কালিগঙ্গার পানি এখনো বৃদ্ধির দিকে রয়েছে। যদিও বিপদসীমার নিচে রয়েছে।

গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সবকটি পয়েন্টে হ্রাস পাচ্ছে। বিপদসীমার ওপর থাকা গোয়ালন্দ ও ভাগ্যকুল পয়েন্টে পদ্মায় পানি কমতির দিকে। সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি ৬টি পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর প্রবাহিত হচ্ছে এবং গতকাল পর্যন্ত পানি হ্রাস-বৃদ্ধির অবস্থায় থাকে। বি.বাড়ীয়ায় তিতাস নদীর পানি ২০ সে.মি. ঊর্ধ্বে প্রবাহিত হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
Saif Mahmud Jewel ২৪ জুলাই, ২০১৯, ১:১৯ এএম says : 0
আল্লাহ সকলকে হেফাজত করুণ। আমিন।
Total Reply(0)
Md. Mahabub Alam Shimul ২৪ জুলাই, ২০১৯, ১:২১ এএম says : 0
আল্লাহ সবাইকে রক্ষা করুন আমিন
Total Reply(0)
Md Ali Dewan Sabuz ২৪ জুলাই, ২০১৯, ১:২২ এএম says : 0
উন্নয়নের জোয়ারে সব ভাইসে যাক
Total Reply(0)
Abdur Razzak ২৪ জুলাই, ২০১৯, ১:২৩ এএম says : 0
দারুন সাংবাদ। এখন থেকে সম্মানীত শিক্ষকদের মাছ কিনতে হবেনা। স্কুলের বারান্দায় বসেই মাছ ধরতে পারবে!
Total Reply(0)
জামিল ২৪ জুলাই, ২০১৯, ৯:৫৮ এএম says : 0
আসুন সবাই বন্যা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াই
Total Reply(0)
নাসির ২৪ জুলাই, ২০১৯, ১০:২৬ এএম says : 0
রেড়িবাধগুলো দ্রুত মেরামত করা হোক
Total Reply(0)
রাসেল ২৪ জুলাই, ২০১৯, ১০:২৯ এএম says : 0
বন্যার্ত লাখ লাখ মানুষের মাঝে খাদ্য, আশ্রয়, বিশুদ্ধ পানি, চিকিৎসা ও ওষুধের সঙ্কট মিলে তাদের কষ্ট-দুর্ভোগ দিন দিন প্রকট হয়ে উঠেছে। যে যার অবস্থা থেকে সরকারি বেসরকারিভাবে এই মানুষগুলোকে সহযোগিতা করা উচিত
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন