বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

বছরে একবারই মুদ্রানীতি, ঘোষণা বুধবার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ জুলাই, ২০১৯, ৯:০১ পিএম

বছরে দুইবারের পরিবর্তে একবার মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০০৬ সাল থেকে বছরে দুইবার মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হলেও এবার থেকে তার ব্যতিক্রম হচ্ছে। আগামী বুধবার (৩১ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ফজলে কবির নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করবেন। এটি হবে ২০১৯-২০ পুরো অর্থবছরের জন্য নতুন মুদ্রানীতি। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, রোববার (২৮ জুলাই) বছরে একবার মুদ্রানীতি ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওইদিন বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর এ সংক্রান্ত ফাইলে স্বাক্ষর করেছেন বলেও একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। একইদিন বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক সাঈদা খানম স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ৩১ জুলাই সকাল সাড়ে ১১টায় ২০১৯-২০ পুরো অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করবেন।

এদিকে, সোমবার (২৯ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, মুদ্রানীতি সাধারণত বছরে দুইবার করার কথা। তবে এবার যদি গর্ভনর মনে করেন বছরে একবার মুদ্রানীতি করবেন। তাহলে ৩১ জুলাই মুদ্রানীতি ঘোষণা করলেই জানা যাবে। কারণ এটি গভর্নরের নিজস্ব ব্যাপার। তিনি যদি মনে করেন বছরে দুইবারের পরিবর্তে একবার করা হবে তাও হতে পারে।

সিরাজুল ইসলাম আরো বলেন, বাজেট বছরে একবার হয়, সেক্ষেত্রে মুদ্রানীতিও বছরে একবার হতে পারে। তবে এটা অগ্রিম না জানাই ভালো। বিষয়টি গভর্নরের এখতিয়ারভুক্ত।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর ড. সালেহ উদ্দিনের আমলে ২০০৬ সাল থেকে প্রথমবারের মতো বছরে দুইবার মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়। ২০০৫-০৬ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে বছরে দুইবার মুদ্রানীতি ঘোষণা করে আসছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরবর্তী গর্ভনর ড. আতিউর রহমানও তা অনুসরণ করে আসছিলেন। এদিকে, ২০১৬ সালের মার্চে দায়িত্ব নেওয়া বর্তমান গর্ভনর ফজলে কবিরও এতদিন বছরে দুইবার মুদ্রানীতি ঘোষণা করে আসছিলেন। সবশেষ চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি বছরের প্রথম ছয় মাসের মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়।

এদিকে, আগামী ৩১ জুলাই ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বেসরকারিখাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা কমানো হতে পারে। অর্থ্যাৎ আগামী অর্থবছরের জন্য ঋণ প্রবৃদ্ধি ১৫ শতাংশ ধরে ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হতে পারে। যা চলতি বছরের প্রথমার্ধের ঘোষিত মুদ্রানীতির লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দেড় শতাংশ কম। ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৬ দশমিক পাঁচ শতাংশ। এ সময় বেসরকারি খাতে ১১ দশমিক ২৯ শতাংশ ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, চলতি বছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি আট দশমিক ২০ শতাংশ অর্জন করার জন্য বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ১৪ থেকে ১৫ শতাংশই অর্জন হলেই যথেষ্ট। কারণ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি সাড়ে ১১ শতাংশের মত হলেও জিডিপির প্রবৃদ্ধি হয়েছে আট দশমিক ১৩ শতাংশ। এছাড়াও নতুন মুদ্রানীতিতে নগদ জমা সংরক্ষণ হারে (সিআরআর) কোনো পরিবর্তন আনা হচ্ছে না।

উল্লেখ্য, মুদ্রানীতির মাধ্যমে বছরে দুইবার জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নানা কৌশল নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়াও, মুদ্রানীতির মাধ্যমে মুদ্রা সরবরাহ, সরকারি বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহসহ আর্থিক খাতের বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী বিষয় এই মুদ্রানীতিতে তুলে ধরা হয়।

মুদ্রানীতি ঘোষণার মধ্যদিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং কাঙ্খিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য ঋণ প্রবৃদ্ধির একটি আগাম ধারণা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। মুদ্রানীতিতে ঋণ প্রবৃদ্ধি, বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিনির্ধারণী সুদহার, বৈদেশিক মুদ্রাবাজারসহ বিভিন্ন বিষয়ে একটি প্রাক্কলন করা হয়।

সরকার ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ। আর মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। সূত্র জানায়, নতুন মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতের ঋণপ্রবাহ চলতি মুদ্রানীতির চেয়ে বেশ খানিকটা কমিয়ে ধরা হচ্ছে। যদিও তা চলতি মুদ্রানীতির প্রকৃত অর্জনের চেয়ে কিছুটা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হবে।

এদিকে, মুদ্রানীতি প্রণয়নের লক্ষ্যে এরইমধ্যে দেশের সাবেক অর্থমন্ত্রী, উপদেষ্টা, গভর্নর, ব্যাংকার, অর্থনীতিবিদ ও গবেষকদের মতামত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন