ফেনীর মুহুরী ও কহুয়া নদীর প্রবাহ কমায় পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী ও পরশুরামের গ্রামীণ সড়কের বেহাল দশা বিরাজ করছে। চলতি বর্ষা মৌসুমের টানা ও প্রবল বর্ষণ এবং ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়ি ঢলে ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার গ্রামীণ সড়ক, উপ-সড়কে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ তিন উপজেলার সড়ক ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়েছে। বন্যার পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে দৃশ্যমান হয়েছে ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন।
সরেজমিনে দেখা যায়, পানিতে তলিয়ে যাওয়া গ্রামগুলোর অধিকাংশ সড়কের বিভিন্ন স্থান ধ্বসে পড়েছে। সড়কগুলোতে খানা খন্দের সৃষ্টি হয়ে যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সড়কগুলোতে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হয়ে জীবন দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে। ফলে ভোগান্তির শেষ নেই স্থানীয়দের। জনদুর্ভোগ দূর করতে সড়কগুলো জরুরি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এদিকে বর্ষা মৌসুমে মুহুরী-কহুয়া নদীর বাঁধের ভাঙা অংশ পানি উন্নয়ন বোর্ড মেরামতের নিশ্চয়তা দিতে না পারায় আবারও পানিতে ভাসার আশঙ্কায় আছেন স্থানীয়রা। গত দুইদিনের টানা বর্ষণে এলাকাবাসী আরো আতঙ্কিত হয়ে উঠেছে।
স্থানীয় প্রশাসনের তথ্য মতে, মুহুরী-কহুয়া প্রকল্পের মোট ১ শত ২২ কিলোমিটার বাঁধের ১২টি স্থানে ভাঙনের ফলে ফুলগাজী ও পরশুরামসহ দু’টি উপজেলার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সম্প্রতি টানা বৃষ্টি আর ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফেনীর মুহুরী ও কহুয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলা অংশে কমপক্ষে ১২টি স্থানে ভাঙনের সৃষ্টি হলে ভেসে যায় দুই উপজেলার ১৫টি গ্রাম। পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে দৃশ্যমান হয় ক্ষতচিহ্ন। অপরদিকে ছাগলনাইয়া উপজেলার ৪২৮টি রাস্তার ৫৯১ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ৩শ’ ৩১ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা। এছাড়াও সম্প্রতি অতি বর্ষণ ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আরো ১২ কিলোমিটার রাস্তা।
ছাগলনাইয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. নজিবুর রহমান জানান, বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ পেলেই এসব সংস্কারের কাজ করা হবে।
উপজেলা চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল জানান, যে সমস্ত প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে, সেগুলোর কাজ শুরু হলে উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থার সকল সমস্যার সমাধান হবে। সুফল ভোগ করার জন্য ছাগলনাইয়াবাসীকে আর কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবদুল আলীম বলেন, নদীর বাঁধ ভাঙনের স্থায়ী সমাধানে নদী সংস্কার ও দখলমুক্তসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। এদিকে ফেনীর জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজ্জামান মানুষের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে দ্রæত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন