শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

নতুন করদাতার লক্ষ্য ৬ লাখ ৭২ হাজার

বন্ড সুবিধা অপব্যবহার রোধে তৎপরতা বৃদ্ধি : এনবিআর চেয়ারম্যান

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০০ এএম

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেছেন, চলতি অর্থবছরে দেশব্যাপী ৬ লাখ ৭২ হাজার নতুন ব্যক্তিকে কর জালের আনা হবে। এ লক্ষ্যে জরিপ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এছাড়াও ১ জুলাই থেকে ৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্রে ৫ শতাংশ উৎসে কর, ভ্যাটের আওতা বাড়াতে ইএফডি মেশিন (ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস) চালু, পোশাক খাতের রফতানির উৎসে কর হ্রাসের বিষয় বিবেচনা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

গতকাল সেগুনবাগিচায় এনবিআর’র সম্মেলনে কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান তিনি। মূলত ২০১৯-২০ অর্থবছরের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা আদায়ে এনবিআর কী কী উদ্যোগ নেবে সেসব বিষয় জানাতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর রাজনৈতিক নির্দেশনা ছিল করনেট বৃদ্ধি এবং করভিত্তি সম্প্রসারণ। অর্থমন্ত্রী ১ কোটি করদাতা তৈরির নির্দেশনা দিয়েছেন। এ লক্ষ্যে এনবিআর চলতি অর্থবছরে দেশব্যাপী ৬ লাখ ৭২ হাজার নতুন ব্যক্তিকে কর জালে আনতে জরিপ কার্যক্রম শুরু করেছে। মাঠ পর্যায়ের কর অঞ্চলগুলো হতে অঞ্চলভিত্তিক ২১৩টি জরিপ টিম গঠন করা হয়েছে। প্রতি টিমে পাঁচ সদস্যের টিম গঠন রয়েছে। এতে দুই কর্মকর্তা ও তিনজন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রতিটি কর অঞ্চলকে আলাদা লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে গত জুন পর্যন্ত ৪ লাখ ৭৬ হাজারটি জরিপ সম্পন্ন হয়েছে। জরিপের তথ্যের ভিত্তিতে ৩ লাখ ৩১ হাজার ২৭২ জনকে টিআইএন দিয়ে আয়কর নির্ধারণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশের চার কোটি লোকের কর দেওয়ার সামর্থ্য আছে। তাঁদের বেশির ভাগই স্বতঃপ্রণোদিতভাবে কর দেন না। তাই জরিপের মাধ্যমে আমরা তাঁদের কর জালে আনার উদ্যোগ নিয়েছি।
সঞ্চয়পত্র উৎসে কর প্রসঙ্গে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, সঞ্চয়পত্রের বিক্রি ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। যাতে এক ব্যক্তি একাধিক ঠিকানা ব্যবহার করে সীমাতিরিক্ত সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে না পারেন। নতুন নিয়মে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ উৎসে কর ধার্য করা হয়েছে। ১ জুলাই থেকেই এ সুবিধা পাওয়া যাবে। আর যারা অতিরিক্ত কর দিয়েছেন তারা সমন্বয় করতে পারবেন। পেনশনারদের জন্য ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগের উপর কর অব্যাহতি রয়েছে।

বন্ড সুবিধা অপব্যবহার রোধে তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে উল্লেখ করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ফাঁকিবাজ বন্ড প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন, আমদানী পর্যায়ে অধিকতর নজরদারি এবং বিক্রি পর্যায়ে বিভিন্ন অভিযান জোরদার করা হয়েছে। শুল্ক বিষয়ে যথাযথভাবে শুল্কায়ন সম্পন্ন করার জন্য বিশেষভাবে আধুনিকায়ন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ভ্যাট ও শুল্ক ফাঁকি রোধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

তৈরি পোশাকের উৎসে কর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তৈরি পোশাক রফতানির উৎসে কর ও রফতানি প্রণোদনার উৎসে কর কমাতে বিজিএমইএ আবেদন করেছে। তাদের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।
২০১৮-১৯ অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ের চিত্র তুলে ধরে এনবিআর মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আগের অর্থবছরের তুলনায় গত অর্থবছরে রাজস্ব আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ দশমিক ৭ শতাংশ। সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় ৫৭ হাজার কোটি টাকা কম রাজস্ব আদায় হয়েছে। এর কারণ তুলে ধরে তিনি বলেন, গত অর্থবছরে ভ্যাটের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু খাত যেমন গ্যাস, ইন্টারনেট, রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস শিল্প, আশ্রয়ণ প্রকল্প, সোলার মডিউল এন্ড প্যানেল, এমএনপি সার্ভিস এবং কম্পিউটার যন্ত্রাংশে প্রায় ১৫ হাজার ১৯২ কোটি ৬ লাখ টাকা ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। কাস্টমসের ক্ষেত্রেও মূলধনী যন্ত্রপাতি, কাচাঁমাল, ব্যাগেজ রুলস, মোবাইল ম্যানুফ্যাকচারিং, কম্পিউটার ম্যানুফ্যাকচারিং, পোল্ট্রি, রিলিফ গুডস, শিপ বিল্ডিং, বেজা, ক‚টনৈতিক মিশন ইত্যাদি খাতে প্রায় ১ হাজার ৫০২ কোটি টাকা পরিমাণ আমদানি শুল্ক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। আয়করের ক্ষেত্রেও সরকার নির্ধারিত বিভিন্ন খাতে আব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এগুলো বিনিয়োগ ও জনস্বার্থে করা হয়েছে। পরে এর সুফল পাওয়া যাবে।#

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন