মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

হাসপাতালে ত্রাহি দশা

২৪ ঘণ্টায় ১৭১২ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০০ এএম

হাসপাতালে স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় মেঝেতে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন ডেঙ্গু রোগীরা -ইনকিলাব


রাত-দিন কঠোর পরিশ্রম করছেন ডাক্তার-নার্সরা
‘মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, একটু সহানুভূতি কি, মানুষ পেতে পারে না ও বন্ধু’ (ভূপেন হাজারিকা)। হাজার হাজার ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর রাজধানী ঢাকার সরকারি হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসার দৃশ্য দেখলে ভূপেন হাজারিকার ওই গানের কথাই স্মরণে আসে। সত্যিই মানুষ মানুষের জন্য। ঢাকার সরকারি কোনো হাসপাতালে তিল ধরণের ঠাঁই নেই। হাজার হাজার রোগী বেড না পেয়ে মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বিল্ডিংয়ের মেঝে, বারান্দা এবং করিডোরে চাটাই বিছিয়ে রোগীর ‘বেড’ বানিয়ে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

নানান সীমাবদ্ধতার মধ্যেও দায়িত্বরত ডাক্তার, নার্স, ওয়ার্ডবয়, আয়া প্রাণান্তকর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায়। এ যেন অন্যরকম দৃশ্য। গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশের হাসপাতালগুলোয় ১৭১২ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। রোগী আর তাদের স্বজনদের ভিড়ে হাসপাতালগুলোর মরণদশা। প্রতিদিনই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। জায়গার সঙ্কুলানে হিমশিম অবস্থায় পড়েছে রাজধানী ঢাকার সরকারি হাসপাতালগুলো। এর মধ্যেই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, মিটফোর্ড হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের গাফিলতি এবং দায়িত্বহীনতার ডামাডোলের মধ্যেই হাসপাতালে দায়িত্বরত চিকিৎসকরা ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় রাজধানী ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি তথা ব্যক্তিমালিকানাধীন হাসপাতালগুলোতেও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তদের জন্য পৃথক ওয়ার্ড খোলা উচিত বলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তাদের বক্তব্য হলো, এতে চিকিৎসা ব্যবস্থায় জড়িতরা ব্যবসার পাশাপাশি কিছুটা হলেও আর্তমানবতার সেবা করতে পারেন।

রাজধানীসহ সারাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। প্রতিদিনই আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আগের দিনের রেকর্ড ভাঙছে। সর্বশেষ নেত্রকোনা ও বরগুনা থেকেও ডেঙ্গু আক্রান্তের তথ্য পাওয়া গেছে। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ ছাড়া সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (পয়লা আগস্ট) সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ৭১২ জন। সরকারি হিসাবে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৯ হাজার ৫১৩ জন। তবে বেসরকারি হিসাবে এর কয়েক গুণ বেশি। অনেকেই বাইরে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ছাড়া সরকারি হিসাবে এ পর্যন্ত ১৪ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হলেও বিভিন্ন হাসপাতালের তথ্য বলছে, মৃতের সংখ্যা অর্ধশতাধিক ছাড়িয়ে গেছে। প্রতিদিনই ডেঙ্গু জ্বরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। গতকালও মাদারীপুরে একজন এবং ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় দু’জন ডেঙ্গু রোগী মারা গেছেন।

বাংলাদেশের ইতিহাসে গত বছর (২০১৮) রেকর্ডসংখ্যক ১০ হাজার ১৪৮ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। চলতি বছরের (২০১৯) এখনো পাঁচ মাস বাকি থাকতেই গতকাল পর্যন্ত ১৯ হাজার ৫১৩ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আর হাজার হাজার রোগী রক্ত পরীক্ষা করছেন।

চলতি বছর হাসপাতালে ভর্তি মোট রোগীর মধ্যে ইতোমধ্যে চিকিৎসক ও নার্সসহ সবার সেবায় সুস্থ হয়ে ইতোমধ্যে বাড়ি ফিরেছেন ১২ হাজার ২৬৬ জন। বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা ৬ হাজার ৬১৫ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ডেঙ্গু বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, চলতি আগস্ট মাসে ডেঙ্গু পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে এডিস মশার প্রজনন বাড়তে পারে। তারা জরুরি ভিত্তিতে মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য রাজধানীসহ সার দেশে ব্যাপক কার্যক্রম পরিচালনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৭১২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন ২২২ জন। এর বাইরে মিটফোর্ড হাসপাতালে ৮১, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ২৫, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ৯৬, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ৪৫, বারডেম হাসপাতালে ৩২, বিএসএমএমইউতে ৩০, পুলিশ হাসপাতাল রাজারবাগে ৩৯, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৮৬, বিজিবি হাসপাতাল পিলখানায় ৮, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৪৫ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর বাইরে রাজধানীর বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৩৮৮। রাজধানী ঢাকা শহরে সর্বমোট ১১৫০ জন ভর্তি হন।

এ দিকে রাজধানীর বাইরে বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে ভর্তি রোগীর সংখ্যাও ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। রাজধানী ঢাকা সিটির বাইরে ঢাকা বিভাগে ১৪৫, চট্টগ্রাম বিভাগে ৯৮, খুলনা বিভাগে ৭৬, রংপুর বিভাগে ৩৩, রাজশাহী বিভাগে ৫৮, বরিশাল বিভাগে ৬৩, সিলেট বিভাগে ৩১ ও ময়মনসিংহ বিভাগে ৬২ জন ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সূত্র জানায়, বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ইবনে সিনা হাসপাতাল (ধানমন্ডি), স্কয়ার হাসপাতাল (ধানমন্ডি), শমরিতা হাসপাতাল (পান্থপথ), ল্যাবএইড হাসপাতাল (ধানমন্ডি), সেন্ট্রাল হাসপাতাল (ধানমন্ডি), হাই কেয়ার হাসপাতাল, হেল্থ অ্যান্ড হোপ হাসপাতাল, গ্রীন লাইফ মেডিক্যাল হাসপাতাল, ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতাল (কাকরাইল), ইউনাইটেড হাসপাতাল (গুলশান), খিদমাহ হাসপাতাল (খিলগাঁও), সিরাজুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, এ্যাপোলো হাসপাতাল (বসুন্ধরা), আদ-দ্বীন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বিআরবি হাসপাতাল, বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল, উত্তরা আধুনিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, সালাউদ্দিন হাসপাতাল (টিকাটুলি), পপুলার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ শতাধিক হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীরা ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এটা সরকারি হিসেব। এর বাইরেও অসংখ্য ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন ক্লিনিক ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

রাজধানী ঢাকার বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি রোগীর সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। সর্বত্রই ডেঙ্গু ভীতি। সামান্য জ্বরেও চিকিৎসকরা ডেঙ্গু রোগ কি না পরীক্ষার পরামর্শ দিচ্ছেন। রাজধানী ঢাকার প্রায় শতাধিক হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগের রক্ত পরীক্ষার জন্য শত শত রোগী হাজির হচ্ছেন। তারা রক্ত পরীক্ষা করছেন। আর সরকারি হাসপাতালগুলোতে রক্ত পরীক্ষা ও ডেঙ্গু রোগী ভর্তির জন্য দীর্ঘ লাইন দৃশ্যমান। জেলা পর্যায়ে ডেঙ্গু রোগের পরীক্ষা সীমিত হওয়ায় বিপদে পড়েছেন রোগীদের স্বজনরা। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, রোগীর চাপ বেশি। তাই পরিশ্রম বেশি করতে হচ্ছে। ডাক্তারি পেশা মানবতার সেবা। তাই কাজ করে যাচ্ছি।

চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামে গতকাল (বৃহস্পতিবার) আরও ৩০ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৬ জন, নগরীর বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ১৪ জনসহ ৩০ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা হয়। চমেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধীনে আলাদা ৩টি বøকে ৭৩ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আখতারুল ইসলাম।

যশোর : যশোরে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১১৫ জন। এরমধ্যে ৫১ জন যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সিভিল সার্জন অফিস স‚ত্র জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত জেলায় ১১৫ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৫১ জন যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।

রাজশাহী : রাজশাহীর সাংবাদিক ফেরদৌস সিদ্দিকী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। গত বুধবার রাতে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ফেরদৌস অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগো নিউজের রাজশাহীর নিজস্ব প্রতিবেদক। বৃহস্পতিবার রামেক হাসপাতালে মোট ৪৩ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ছিলেন। এদের মধ্যে দু’জন রাজশাহীতে আক্রান্ত হন। বাকিরা ঢাকায় আক্রান্ত হয়ে এসেছেন। সাংবাদিক দ্বিতীয় ব্যক্তি যিনি রাজশাহীতে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।

সিলেট : সিলেটে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত সিলেট বিভাগের চার জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ১০৪ জনে দাঁড়িয়েছে। তবে সিলেটের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ৭৩ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। বাকি ৩২ জন বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরেছেন।

দিনাজপুর : ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দিনাজপুরে এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৮ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।

নরসিংদী : নরসিংদীতেও গতকাল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩৬ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে সদরে ১৩ জন, পলাশে ৪ জন, শিবপুরে ৪ জন, বেলাবতে ১ জন, রায়পুরায় ২ জন ও পৌর এলাকার ১২ জন।

বরগুনা : বরগুনায় গতকাল পর্যন্ত বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নতুন করে আরও ৭ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। আমতলী উপজেলায় ২ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সোহরাফ উদ্দিন জানান, এ পর্যন্ত ১২০ রোগীকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে এ পর্যন্ত ২৭ ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।

সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরায় গতকাল পর্যন্ত ২৮ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ জন হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।

সাভার (ঢাকা) : গত ১৫ দিনে সাভারের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে ১৩৩ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। এরমধ্যে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৫৬ জন, রেফার্ড হয়েছে দুইজন ও মৃত্যু হয়েছে একজনের। বর্তমানে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাধীন রয়েছে ৮১ জন ডেঙ্গু রোগী।

খাগড়াছড়ি : খাগড়াছড়িতে গত কয়েক দিনে নার্স ও শিশুসহ আরও নয়জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।এ নিয়ে গত চার দিনে ১৫ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।

মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জের গত ১১ দিনে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন নারী ও শিশুসহ ৫২ ডেঙ্গু রোগী। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছে।

ভোলা : ভোলায় নতুন করে আরও ৬ সহ ১৬ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে ভোলা সদর উপজেলায় দুইজন , লালমোহন ও চরফ্যাশন উপজেলায় দুইজনকে শনাক্ত করা হয়। এ নিয়ে জেলায় মোট ১৬ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হলো।

দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা) : ঢাকার নবাবগঞ্জ ও দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত ৮দিনে ১৪৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। এ পর্যন্ত নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৫জন রোগী ও দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শহিদুল ইসলাম ও দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জসিম উদ্দিন এ খবর নিশ্চিত করেছেন।

কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে গত নয় দিনে ২৪ জন ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে ১৫জন।

কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন। গতকাল দুপুর পর্যন্ত এ হাসপাতালে মোট ১১ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে শিশুসহ ৩১ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক নূরুন নাহার বেগম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মাদারীপুর : মাদারীপুরে বাড়ছে ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। জেলার সদর হাসপাতালে এখন পর্যন্ত চিকিৎিসা নিয়েছেন ২১ জন রোগী। বর্তমানে ভর্তি রয়েছেন ৭ জন। এছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেগুলোতেও ভর্তি রয়েছেন আরো ৮জন রোগী। এদিকে বুধবার রাতে ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত হয়েছে শিবচরের সলুবেপারীর কান্দি এলাকার ফারুক খান (২২) নামের এক যুবক চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার ইসলামিয়া হাসপাতালে মারা গেছেন।

মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজার জেলায় এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯ জনে। আক্রান্তরা মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালসহ প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

রাজাপুর : রাজাপুর সরকারি হাসপাতালে নতুন ২ জন ডেঙ্গু সন্দেহে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে ২ জন রোগী গতকাল রাতে ভর্তি হয়েছে।এদেরকে সাধারণ রোগীদের মধ্যে বিনা মশারীতে রাখা হয়েছে

টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। গত ২৪ ঘন্টায় টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নতুন আরো ১৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৬ জনে। এছাড়াও গতকাল দুইজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্যে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও টাঙ্গাইলের মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে অন্তত ১৭ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ফলে জেলায় মোট রোগীর সংখ্যা ৫৩ জনে দাঁড়িয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন শরীফ আহম্মেদ খান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
Sadek Islam ২ আগস্ট, ২০১৯, ১:২৩ এএম says : 0
এডিস মশাসহ অন্য যেকোন প্রাণীর ক্ষতি থেকে বাঁচার আমল! যেকোন প্রাণীর ক্ষতি, বিষ এবং যাদু থেকে বাঁচতে সকাল-সন্ধ্যায় এই দো'আটি তিনবার পড়তে পারেন। __(জামে তিরমিযী, ৩৫৫৯) أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ উচ্চারণঃ আ’উযু বিকালিমা- তিল্লা হিত্তাম্মা-তি, মিং-শাররি মা-খলাক্ব। অর্থঃ আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি আল্লাহর সব পূর্ণ কালিমাসমূহের উসিলায়, তাঁর সৃষ্ট সকল প্রাণীর অনিষ্ট থেকে।
Total Reply(0)
মোঃ এমদাদুল হক এমদাদ ২ আগস্ট, ২০১৯, ১:২৩ এএম says : 0
ডেঙ্গু মশা নিধন করা সরকার বা সিটি করপোরেশনের একার দ্বারা সম্পূর্ণভাবে হয়তো সম্ভব নয় ,জনগণের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে হবে , লিফলেট এবং বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচার করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে এর করনীয় কি , কি কারনে ডেঙ্গু মশা সৃষ্টি হয় ইত্যাদি জনগণকে বুঝাতে হবে ।।
Total Reply(0)
Supti Hossain ২ আগস্ট, ২০১৯, ১:২৩ এএম says : 0
ডেঙ্গু আর এখন ডেঙ্গু নেই। মহামারী আকার ধারন করেছে। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ মারা যাচ্ছেন। আল্লাহ আমাদের ভুল-ত্রুটিগুলো ক্ষমা করে দিন। আমাদের সকলকে এই বিপদ থেকে উদ্ধার করুন। (আমীন)
Total Reply(0)
Prehistoric Hasib ২ আগস্ট, ২০১৯, ১:২৫ এএম says : 0
ডেঙ্গু হচ্ছে বাঙালী মুসলমানদের প্রতি আল্লাহতালার গজব। সবাই বেশীবেশী তওবা ইস্তেগফার করেন।
Total Reply(0)
Arif Hossain Joy ২ আগস্ট, ২০১৯, ১:২৫ এএম says : 0
সত্যি দুঃখজনক,সরকার যদি আগে পদক্ষেপ নিতো,তাহলে হয়ত এতগুলো জীবন আজ ঝরতো না আল্লাহ রহম করুন,
Total Reply(0)
Kajal Mondol ২ আগস্ট, ২০১৯, ১:২৬ এএম says : 0
বাংলাদেশের রাস্তাঘাট অপরিষ্কার এ জন্য এই অবস্থা
Total Reply(0)
Mehedi Hasan ২ আগস্ট, ২০১৯, ১:২৬ এএম says : 0
হে আল্লাহ আপনি আমাদের সকলকে ক্ষমা করুন এবং আমাদের উপর রহম করুন!
Total Reply(0)
Gazi Elias ২ আগস্ট, ২০১৯, ১:২৬ এএম says : 0
দেশের সকল মানুষ আজ উদ্বিগ্ন। গতকাল আমার কিশোর ছেলেকে মশায় কামড়ানোর পর সে ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিল। ভয়ে বারবার পানি পান করছিল। তখন আমিও খুব ভয় পেয়েছি ছেলের মানসিক অবস্থা দেখে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন