শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

এবার লড়াকু হার বাংলাদেশের

প্রকাশের সময় : ৮ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার : তাজিকিস্তানের কাছে হারলেও এবার লড়াই করেছে বাংলাদেশ। এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্লে-অফে ঘরের মাঠে যেন দেখা গেল অন্য এক মামুনুল বাহিনীকে। মাত্র পাঁচ দিন আগে এ আসরের অ্যাওয়ে ম্যাচে তাজিকদের কাছে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত হলেও হোম ম্যাচে ঠিকই ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। যদিও পুরো তিন পয়েন্টই অতিথি দলের ঝুলিতে জমা দিয়েছে তারা। তারপরও পুরো ম্যাচে আক্রমণাত্মক ফুটবলই উপহার দিয়েছে লাল-সবুজের দল। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্লে-অফে গতকাল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে তাজিকিস্তান ১-০ গোলে হারায় বাংলাদেশকে। বিজয়ীদের পক্ষে একমাত্র গোলটি করেন ডিফেন্ডার আকতাম নাজারভ। হোম ম্যাচে বড় জয় পেলেও ঢাকায় যেন ধীরে চলো নীতি অবলম্বন করে তাজিকিস্তান। বাড়তি কোনও চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টাও তারা করেনি। এছাড়া কাল দুপুরের বৃষ্টিতে দাবদাহ দূর হয়ে গেলে তা সফরকারীদের পক্ষেই যায়। কারণ ঢাকায় নেমে স্থানীয় তাপমাত্রা নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন ছিল তাজিকরা। বৃষ্টিভেজা মাঠে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবলই খেলার চেষ্টা করে অতিথি দল। স্বাগতিকরাও কম যায়নি। তারা প্রতিপক্ষের আক্রমণ রুখে দিয়ে পাল্টা আক্রমণ করেছে। কিন্তু সেটপিস আবারো স্বপ্নভঙ্গ করেছে লাল-সবুজদের। বেশ ক’বছর ধরেই সেটপিসে গোল হজম করে একের পর এক হার জুটছে বাংলাদেশের ভাগ্যে। তাজিকিস্তানের বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচে মাঠে নামার আগের দিনও এই সেটপিস নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন বাংলাদেশের ডাচ কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফ। সেই ভয়ই খেলো লাল সবুজদের। কালকের ম্যাচে একমাত্র সেটপিসের এক গোলেই হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলো মামুনুল বাহিনীকে।
এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের প্লে-অফে তাজিকিস্তানের বিপক্ষে অ্যাওয়ে এবং হোম ম্যাচে হেরে যাওয়া এখন ভূটানের বিপক্ষে মাঠে নামতে হবে বাংলাদেশকে। আর ওই ম্যাচে হারলে অশনি সংকেত রয়েছে মামুনুলদের জন্য। যদি ভুটান বাধা টপকাতে না পারে তাহলে কোচ ক্রুইফের দল ২০১৯ সাল পর্যন্ত কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে না।
কাল ম্যাচের শুরু থেকেই গোল পেতে মরিয়া ছিলো তাজিকিস্তান। ফলে তা পেয়েও যায় তারা। ম্যাচের বয়স তখন মাত্র সাত মিনিট। যা ঘটার ঘটে গেলো ওই সময়েই। নিজেদের বক্সের খুব কাছেই তাজিকিস্তানের মিডফিল্ডার ওমরবুয়েভকে ফাউল করেন ডিফেন্ডার রায়হান হাসান। ব্যাস, লেবাননের রেফারি হোসেন আবু ইয়াহিয়া ফ্রি কিকের নির্দেশ দেন। ডিফেন্ডার নাজারভের বাঁক খাওয়ানো শট বাংলাদেশের এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে বলের গতিপথ বদলে প্রবেশ করে স্বাগতিকদের জালে (১-০)। পিছিয়ে পড়ে গোল শোধে মরিয়া হয়ে ওঠেন মামুনুলরা। বার বার চেষ্টা করেছেন তরুণ ফরোয়ার্ড নাবীব নওয়াজ জীবন। কিন্তু প্রতিবারই ব্যর্থ হয়েছেন। কারণ সতীর্থর ব্যস্ত ছিলেন রক্ষণভাগ সামলাতেই। ফলে বল রিসিভ করে জালে পাঠানোর মতো কাউকে দেখা যায়নি। ২০ মিনিটে সমতায় ফেরার সুযোগটাও এসেছিলো জীবনের পা থেকেই। কিন্তু তার শট দক্ষতার সঙ্গেই ফিরিয়ে দেন তাজিক গোলতিপার মাহকামভ। ৩২ মিনিটে দারুণ এক সুযোগ হাতছাড়া হয় বাংলাদেশের। ইমনের লো ক্রস থেকে জীবনের শট বা পোস্ট ঘেষে চলে গেছে মাঠের বাইরে। প্রথমার্ধে ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই ম্যাচে ফিরতে মরিয়া লাল-সবুজ জার্সীধারীরা। কিন্তু জীবন, জুয়েল, রানাদের বারংবার ব্যর্থতায় হতাশ হয়েছেন গ্যালারিতে উপস্থিত গুটি কয়েক দর্শককে। ৫৬ মিনিটে বল নিয়ে একক প্রচেষ্টায় তাজিকিস্তানের অর্ধে ঢুকে পড়েন ডিফেন্ডার মামুন মিয়া। কিন্তু তাকে বক্সের খুব কাছেই ফেলে দেন প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডার নাজারভ। রেফারি হলুদ কার্ড দেখান এই ডিফেন্ডারকে। কিন্তু ফ্রিকিক থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন মামুনুল। সেটপিসে গোল হজম করলেও গোল করতে ব্যর্থ বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ ৬০ থেকে ৭০ টানা দশ মিনিট প্রতিপক্ষের গোলমুখে আক্রমণ করেছে। কিন্তু ভাগ্য সহায় ছিলো না বলে গোলের দেখা পায়নি তারা। ৬৫ মিনিটে দ্বিতীয় কর্নারটা আদায় করে নেয় স্বাগতিকরা। তবে মামুনুলের কর্নার বক্সের বাইরে থেকেই ক্লিয়ার করেন তাজিক ডিফেন্ডাররা। ফিরতি বলে জামাল ভুইয়ার ক্রসে বক্সে হেড নেন তপু বর্মণ। কিন্তু অল্পের জন্য বল জড়ায়নি জালে। ৮২ মিনিটে অধিনায়ক মামুনুলের ৩৫ গজ দূর থেকে নেয়া শট তাজিক গোলরক্ষক আবুঅজিজ কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন। এরপরের মিনিটেই মামুনুলের পরিবর্তে মাঠে নেমে ডেব্যু করেন মিডফিল্ডার রাশেদ তূর্য্য। দ্বিতীয়ার্ধে দুর্দান্ত খেললেও দুর্ভাগ্য লাল সবুজদের গোল পায়নি তারা। ফলে শেষ পর্যন্ত একমাত্র গোলের হার নিয়েই মাঠ ছাড়েন মামুনুলরা। এই হারের ফলে ভূটানের বিপক্ষে আগামী সেপ্টেম্বরে বাছাই পর্বের প্লে-অফে দু’টি ম্যাচ খেলতে হবে বাংলাদেশকে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন