প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়াকে একাই টেনেছিলেন স্টিভ স্মিথ। দ্বিতীয় ইনিংসেও দল যখন টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান হারিয়ে বিপদে তখন আবারও দাঁড়িয়ে গেলেন স্মিথ। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ১৬ মাস পর টেস্টে ফিরে ইংলিশ বোলারদের দারুণভাবে সামলে দ্বিতীয় ইনিংসেও তুলে নিলেন সেঞ্চুরি। তার ব্যাটেই অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম টেস্টে বড় লিডের পথে অস্ট্রেলিয়া।
এজবাস্টনে টেস্টের চতুর্থ দিনে চা বিরতির সময় অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ছিল ৫ উইকেটে ৩৫৬ রান। হাতে ৫ উইকেট রেখে তখনই অজিদের লিড ২৬৬ রানের। ভগ্ন পিচে স্বাগতিকদের সামনে বড় লক্ষ্যই ছুড়ে দেয়ার পথে ছিল টিপ পাইনের দল। তাদের এই দাপট কেবল স্মিথের কল্যাণেই। এসময় তাকে দারুণ সঙ্গ দেন ট্রেভিস হেড ও ম্যাথিউ ওয়েড। ফিফটি পেরিয়ে ওয়েড ছিলেন প্রথম অ্যাশেজ শতকের অপেক্ষায়।
১২৪ রান ও হাতে ৭ উইকেট নিয়ে চতুর্থ দিন শুরু করে সফরকারীরা। স্মিথ দিন শুরু করেন ৪৬ রানে, ২১ রানে ছিলেন হেড। দলীয় ২০৫ রানে ও ব্যক্তিগত ৫১ রানে আউট হন হেড। বিচ্ছিন্ন হয় চতুর্থ উইকেটে তাদের ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া ১৩০ রানের জুটি। হেড ফিরলে স্মিথের সঙ্গে এসে যোগ দেন ওয়েড। মধ্যাহ্ন বিরতি থেকে ফিরে দ্বিতীয় ওভারেই স্টুয়ার্ট ব্রডকে কাভার দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ক্যারিয়ারের ২৫তম শতকে পৌঁছান স্মিথ।
২০০২ সালে ম্যাথু হেইডেনের পর প্রথম ও সব মিলে পঞ্চম অস্ট্রেলিয়ান হিসেবে অ্যাশেজের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরির কীর্তি গড়লেন স্মিথ। তার এই কীর্তি মাঠে বসেই উপভোগ করেছেন স্টিভ ওয়াহ। তারও এই কীর্তি আছে অ্যাশেজে। স্মিথকে মূল্যায়ন করতে গিয়ে অজি গ্রেট বলেন, ‘তার মত কাউকে আমি আর দেখিনি। তার প্রস্তুতি অসাধারণ।’ ওয়াহ বলেন, ‘সে জানে আসলে সে কি করতে যাচ্ছে, তাকে নিয়ে প্রতিপক্ষ কী পরিকল্পনা করছে, তাকে কিভাবে আউট করার ফন্দি আঁটা হচ্ছে। সে এর সব উত্তর জানে। সে অসাধারণ এক খেলোয়াড়।’
স্মিথের ইনিংস থামে চা বিরতির ঠিক আগে। ভাঙে ১২৬ রানের জুটি। নতুন বলে করা মার্ক উডের ফুল লেন্থ ডেলিভারিটি লেট সুইংয়ে স্মিথকে বোকা বানায়। বল তার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে উইকেটরক্ষকের গøাভসে আশ্রয় নেয়। স্মিথ তার ১৪২ রানের ইনিংসটি সাজান ২০৭ বলে ১৪টি চারের সাহায্যে। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার ২৮৪ রানের মধ্যে স্মিথের রানই ছিল ১৪৪। এরপর ওয়েডের (৮৬*) সঙ্গে যোগ দেন দলপতি পাইন (৭*)।
১১৯ ইনিংসে ২৫তম টেস্ট সেঞ্চুরির মাইলফলকে পৌঁছালেন স্মিথ। তার চেয়ে কম ইনিংস খেলে এই মাইলফলকে পা রেখেছেন কেবল একজন- ডন ব্রাডম্যান (৬৮ ইনিংস)। শচীন টেন্ডুলকার এই মাইলফলকে পৌঁছান ১৩০ ইনিংসে, ১৩৮ ইনিংস লেগেছিল সুনিল গাভাস্কার ও বিরাট কোহলির।
২ি০০২ সালে স্বদেশী ম্যাথু হেইডেনের পর প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে অ্যাশেজর উভয় ইনিংসেই সেঞ্চুরি করলেন স্মিথ। সব মিলে পঞ্চম অজি খেলোয়াড় হিসেবে এই কীর্তি গড়লেন তিনি। তার আগে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে এই কীর্তি গড়েন ওয়ারেন বার্ডসলি (১৯০৯), আর্থার মরিস (১৯৪৭), স্টিভ ওয়াহ (১৯৯৭) ও ম্যাথু হেইডেন (২০০২)। ইংলিশদের হয়ে এই কীর্তি আছে তিনজনের- হার্বার্ট সাসলিফ, ওয়ালি মাম্মন্ড ও ড্যানিস কম্পটনের।
অ্যািশেজে স্মিথের এটি দশম সেঞ্চুরি। পাঁচটি ইংল্যান্ডে। প্রতিযোগিতায় তার চেয়ে বেশি সেঞ্চুরি আছে কেবল ডন ব্রাডম্যান (১৯) ও জ্যাক হবসের (১২)। স্টিভ ওয়াহরও অ্যাশেজে শতক ১০টি। ইংল্যান্ডে পাঁচ সেঞ্চুরি আছে ব্রাডম্যান, ওয়াহ, অ্যালেন বোর্ডার ও মার্ক টেইলরের।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন