মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

মর্যাদাহারা কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ আগস্ট, ২০১৯, ৭:৩৭ পিএম

প্রেসিডেন্ট ডিক্রির মাধ্যমে অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের সংবিধান স্বীকৃত মর্যাদা কেড়ে নিয়েছে ভারত। সোমবার সংসদে রাজ্যসভায় সংবিধানের ৩৭০ ধারা তুলে দেয়ার ঘোষণা দেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। পরে তিনি রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সই করা ওই ডিক্রি পড়ে শোনান। এর ফলে সংবিধান থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ ও ৩৫-এ ধারা বিলোপ হলো। এই দুটি অনুচ্ছেদই দীর্ঘ ৬৯ বছর জম্মু ও কাশ্মীরকে অন্যান্য রাজ্য থেকে আলাদা মর্যাদা দিয়ে রেখেছিল।

বিজেপি সরকারের এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছে চিরবৈরী প্রতিবেশী পাকিস্তান। দেশটিতে সোমবার বিক্ষোভ মিছিলও হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান থেকে শুরু করে বিরোধীদলীয় নেতারাও তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ‘অবৈধ’ এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যত ধরনের পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব, তার সবই করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

মূলত এই কাশ্মীর নিয়েই পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের দীর্ঘদিনের বৈরিতা বিদ্যমান। আজাদ কাশ্মীর নামক অংশের নিয়ন্ত্রণ পাকিস্তানের হাতে। আর জম্মু ও কাশ্মীর শাসন করে আসছে ভারত। ইতোমধ্যে দু’দেশের তিনবার যুদ্ধও হয়েছে কাশ্মীর ইস্যুতে।

এক বিৃবতিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে এবং কাশ্মীরে বিজেপি সরকারের সব ধরনের পদক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করেছে। পাক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘জম্মু ও কাশ্মীর বিতর্কিত সীমানা আন্তর্জাতিকভাবেই স্বীকৃত। ভারত সরকারের একক সিদ্ধান্তে এটির কোনো পরিবর্তন হতে পারে না। কারণ, জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের রেজ্যুলেশনেও এটি অন্তর্ভুক্ত। বিজেপি সরকারের এই সিদ্ধান্ত জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষের মতোই পাকিস্তান মেনে নেবে না।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিতর্কিত এই সীমানার অংশীদার হিসেবে পাকিস্তান ভারত সরকারের অবৈধ পদক্ষেপের সম্ভাব্য সব জবাব দেবে।’

এদিকে, এই ইস্যুতে পাকিস্তানের সংসদে সোমবার দুপুরে কাশ্মীরের সংসদীয় কমিটি বৈঠক করেছে। রেডিও পাকিস্তান খবর দিয়েছে, বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির প্রধান ফকর ইমরান। তিনি জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি ছাড়াও সাধারণ নাগরিকের ওপর ভারতীয় বাহিনীর ক্লাস্টার বোমা নিক্ষেপের বিষয়ে আলোচনা করেন।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশী বলেছেন, ‘বিজেপি সরকার যদি মনেই করতো এতদিন কাশ্মীরে তাদের নীতিগুলো কার্যকর ছিল, তাহলে সেখানে গভর্নর শাসনের ডিক্রি রাষ্ট্রপতি জারি করতেন না।’ তিনি বলেন, ‘যদি তারা জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখকে কেন্দ্রীয়শাসিত করে, তাদের সব স্বপ্ন চুরমার হবে। জেল এবং গৃহবন্দি হওয়ার ভয়ে সাময়িকভাকে কাশ্মীরিরা এটিকে সমর্থন দিলেও আখেরে উত্তেজনা আরও বাড়বে। তারা কখনও এই ইস্যুর সমাধান করতে পারবে না। সময়ই ভারতকে বলে দেবে, সেখানে কী ভয়ঙ্কর খেলা হবে।’

বিরোধী দল পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপি) চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি সোমবার টুইট করে এই ইস্যুতে সংসদে যৌথ অধিবেশন দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘জম্মু ও কাশ্মীরে আরও নৃশংসতা বাড়বে। উগ্রবাদী ভারত সরকারের উদ্দেশ্য স্পষ্ট। কাশ্মীরে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে রাষ্ট্রপতির উচিত যৌথ অধিবেশন ডাকা।’

সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা শাহবাজ শরীফও ভারত সরকারের এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি সংসদের যৌথ অধিবেশন আহ্বানের সঙ্গে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার দাবি করেছেন। প্রয়োজনে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের জরুরি বৈঠক ডাকতে পাকিস্তানকে ভূমিকা নেয়ার কথা বলেছেন শাহবাজ শরীফ।

উল্লেখ্য, ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারতকে ভারত ও পাকিস্তানে বিভাজন করে ভারতীয় সাংবিধানিক আইন কার্যকর হওয়ার সময়কাল থেকেই ভারতভুক্তির বিষয়টি কার্যকর হয়। ভারতভুক্তির শর্ত হিসেবে জম্মু-কাশ্মীরে ভারতীয় সংসদ প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র ও যোগাযোগ- এই তিনটি বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে ক্ষমতাধর।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Mohammed Kowaj Ali khan ৬ আগস্ট, ২০১৯, ৩:১৬ পিএম says : 0
পাকিস্তান ঘুমিয়ে আছো এতো দিন। গরজে উঠো। ভারতকে দেখিয়ে দাও। কাশ্মীর স্বাধীন করো। ইনশাআল্লাহ।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন