শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

শেষের নায়ক লায়ন

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০০ এএম

২০০১ সালে এজবাস্টনে সর্বশেষ টেস্ট জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। ইংল্যান্ড থেকে ‘ছাইদানি’ সঙ্গে করে অজিদের দেশে ফেরার সর্বশেষ স্মৃতিও সেটি। দেড় যুগ পর সেই মাঠেই ইংলিশদের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে অ্যাশেজ সিরিজ শুরু করল অস্ট্রেলিয়া।

৩৯৮ রানের অসম্ভবপ্রায় লক্ষ্যে ১৩ রান ও হাতে ১০ উইকেট নিয়ে গতকাল পঞ্চম ও শেষ দিন শুরু করে ইংল্যান্ড। নাথান লায়নের ঘুর্ণি ও প্যাট কামিন্সের সুইয়ে নাকাল হয়ে লাঞ্চের আগেই তারা হারিয়ে বসে চার উইকেট। চা বিরতির আগে ১৪৬ রানে গুটিয়ে ম্যাচ হারে ২৫১ রানের বিশাল ব্যবধানে। ইনিংসে কোনো ব্যক্তিগত ফিফটি নেই। সর্বোচ্চ ৩৭ রান নয় নম্বরে ব্যাটে নামা ক্রিস ওকসের। সর্বোচ্চ জুটি ৪১ রানের, দ্বিতীয় উইকেটে জো রুট ও জেসন রয়ের মধ্যে। ৪৯ রানে ৬ উইকেট নিয়ে আসল ছোবল দেন লায়ন। দুর্দান্ত সুইংয়ে বাকি চার উইকেট তুলে নেন কামিন্স।

অথচ ম্যাচের প্রথম দিন চা বিরতির আগে ১২২ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে বড় ধরণের বিপর্যয়ের মুখে ছিল অস্ট্রেলিয়া। এই অবস্থায় দলকে পথ দেখান ১৬ মাস নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দলে ফেরা স্টিভ স্মিথ। দ্বিতীয় ইনিংসেও টপ অর্ডার হারিয়ে দল যখন বিপদে তখনও জেগে ওঠে স্মিথের ব্যাট। দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে স্মিথ গড়েন অনন্য কীর্তি। দ্বিতীয় ইনিংসে জেগে ওঠে হেড-ওয়েডের ব্যাটও। দলও পেয়ে যায় বড় সংগ্রহ। ৭ উইকেটে ৪৮৭ রান তুলে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে অজিরা। পরে বোলারদের দৃড়তায় প্রথম ইনিংসে ৯০ রানে পিছিয়ে থেকেও জয় ছিনিয়ে নেয় সফরকারীরা। প্রথম ইনিংসে পিছিয়ে থেকেও ইংল্যান্ডে অজিদের জয় পাওয়ার ঘটনা ১৯৮১ সালের পর এই প্রথম।

ম্যাচ শেষে হতাশা চেপে রাখতে পারেননি পরাজিত দলপতি রুট, ‘এটা ব্যাথাতুর, তিক্তভাবে হতাশ করে। আমি মনে করি আমরা ভালো কিছু ক্রিকেট খেলেছি কিন্তু কৃতিত্ব অস্ট্রেলিয়ার।’ যার কারণে এই হতাশা সেই স্মিথকে বলেছেন ‘ব্রিলিয়ান্ট’। নয় দিন পর লর্ডসে হতে যাওয়া সিরিজের পরের টেস্টে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন রুট।

এমন জয়ে বিষ্মিত নন বিজয়ী অধিনায়ক টিম পাইন, ‘আমি বলব না এটা বিষ্ময়ের। যদিও এক পর্যায়ে আমরা পিছিয়ে ছিলাম, তবে আমাদের ছিল বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়। দ্বিতীয় ইনিংসে বল ও ব্যাটে আমরা ছিলাম অসাধারণ।’ ম্যাচের নায়ক স্মিথকে প্রসংশা করে পাইন বলেন, ‘সম্ভবত আমাদের দেখা সেরা টেস্ট পারফম্যান্স ছিল এটি।’

স্মিথের দৃষ্টিতে এই ম্যাচটা ছিল ‘বিশেষ’। আবার টেস্টে ফিরতে পেরে খুশি এই টপ অর্ডার, ‘ফিরে এসে আবারও অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলতে পেরে এবং জয়ের জন্য যা করতে পছন্দ করি তা করতে পারায় আমি কৃতজ্ঞ। বিশেষভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে অস্ট্রেলিয়ার জয়ে সহায়তা করতে পারায় আমার কাছে মনে হচ্ছে এখন আমি চাঁদে দাঁড়িয়ে আছি।’ প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরি ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির মতো আনন্দদায়ক ছিল বলে উল্লেখ করেন স্মিথ। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ১-০তে এগিয়ে ১৪ আগস্ট লর্ডসে দ্বিতীয় টেস্টে মাঠে নামবে অস্ট্রেলিয়া।

অস্ট্রেলিয়া : ২৮৪ (স্মিথ ১৪৪, সিডল ৪৪, হেড ৩৫; ব্রড ৫/৮৬, ওকস ৩/৫৮) ও ৪৮৭/৭ ডিক্লে. (স্মিথ ১৪২, ওয়েড ১১০, হেড ৫০; স্টোকস ৩/৮৫, মঈন ২/১৩০)। ইংল্যান্ড : ৩৭৪ (বার্নস ১৩৩, রুট ৫৭, স্টোকস ৫০; কামিন্স ৩/৮৪, লায়ন ৩/১১২, সিডল ২/৫২) ও (লক্ষ্য ৩৯৮) (আগের দিন শেষে ১৩/০) ৫২.৩ ওভারে ১৪৬ (বার্নস ১১, রয় ২৮, রুট ২৮, ডেনলি ১১, বাটলার ১, স্টোকস ৬, বেয়ারস্টো ৬, মঈন ৪, ওকস ৩৭, ব্রড ০, অ্যান্ডারসন ৪*; সিডল ০/২৮, লায়ন ৬/৪৯, প্যাটিনসন ০/২৯, কামিন্স ৪/৩২)। ফল : অস্ট্রেলিয়া ২৫১ রানে জয়ী।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন