শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ট্রাম্পের বেশি খরচ ডিজিটাল বিজ্ঞাপনে

দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস | প্রকাশের সময় : ৭ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

আগাম জরিপ থেকে কালো ভোটারদের নির্বাচনে ব্যাপক ভাবে জড়িত হওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে। গত জুন মাসে সিএনএনের এক জরিপে দেখা যায় ৭৪ শতাংশ ডেমোক্র্যাট আগামী বছর ভোট দিতে চরম ভাবে আগ্রহী বা অত্যন্ত আগ্রহের সাথে ভোট দিতে চান। এই হার এমনকি ওবামার দুটি নির্বাচনের আগের হারের চেয়েও বেশি। এ সংখ্যা সাদা ও অশ্বেতাঙ্গ ডেমোক্র্যাটদের ক্ষেত্রেও একই। ব্রেনান সেন্টারের গবেষক থিওডোর আর. জনসন কালো ভোটদাতাদের বিষয়ে ব্যাপক ভাবে লিখেছেন। তিনি বলেন, তিনি সন্দেহগ্রস্ত যে আফ্রিকান-আমেরিকান ভোটদানের সংখ্যা ওবামা আমলের পর্যায়ে পৌঁছবে। তবে তিনি উল্লেখ করেন যে ভোট প্রদান যদি ২০১৬ সালের চেয়ে সামান্য বেশিও হয়, তাহলে ট্রাম্পের জন্য সমস্যা দেখা দেবে। ২০১২ সালে যোগ্য ভোটারদের রেকর্ড ৬৬.৬ শতাংশ ভোট দিয়েছিল। কিন্ত ৪ বছর এ সংখ্যা ৫৯.৬ শতাংশে নেমে আসে।

জনসন বলেন, ট্রাম্প আমলের সাক্ষ্যপ্রমাণ থেকে ইঙ্গিত মিলছে যে আফ্রিকান-আমেরিকানরা ভীষণ ভাবে উৎসাহিত। তিনি ২০১৭ সালে আলাবামায় বিশেষ সিনেট নির্বাচনে তাদের ভোটদান এবং গত বছর মধ্যমেয়াদি নির্বাচনের কথা উল্লেখ করেন যাতে কালোদের ভোট ২০১৪ সালের তুলনায় ১১ শতাংশ উল্লম্ফন ঘটে। ডেট্রয়েটের এক নারী দমকলকর্মী টেরেসা সিঙ্গলটন (৫৫) বলেন, তিনি অত্যন্ত অসম্মানকারী। এটা অত্যন্ত অসম্মান জনক। আমি ভীষণ মর্মাহত যে যুক্তরাষ্ট্রের ১ নম্বর ব্যক্তি এ ধরনের টুইটার আক্রমণ করেন। তার এ কাজ আমাকে তার আওতা থেকে বের হয়ে আসতে ও নির্বাচনে আলাদা কোনো ব্যক্তির জন্য কাজ করতে উৎসাহিত করেছে। আমি এটাকে আমার দায়িত্ব বলে অনুভব করি।

ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় বলা হচ্ছে যে তারা কালো ভোটারদের বার্তা দিতে আগ্রহী। ট্রাম্পের এক নির্বাচনী মুখপাত্র টিম মুরতাও বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কালো আমেরিকানদের জন্য কল্যাণকর কিছু করার চমৎকার রেকর্ড রয়েছে যা আমরা আগ্রহের সাথে সবাইকে জানাব। কালো বেকারত্ব সর্বসময়ের মধ্যে কম পর্যায়ে এসেছে। বেতন বাড়ছে এবং অপরাধ বিচার সংস্কারের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট জনগণকে দ্বিতীয়বার সুযোগ দিচ্ছেন।

ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা তার ডেমোক্র্যাট চ্যালেঞ্জকারীদের চেয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করতে ডিজিটাল বিজ্ঞাপনে অনেক বেশি অর্থ খরচ করা হচ্ছে। ডেমোক্র্যাটিক ডিজিটাল প্রতিষ্ঠান ব্যালি পুলপিট ইন্টারঅ্যাকটিভের মতে, ২০১৯ শুরুর পর থেকে ট্রাম্প ফেসবুক ও গুগল প্রচারণায় এক কোটি ৪১ লাখ ডলার ব্যয় করেছেন। এদিকে ২০২০ সালের নির্বাচনী প্রচারণায় সর্বোচ্চ ব্যয়কারী ডেম্যোক্র্যাটিক প্রার্থী হলেন এলিজাবেথ ওয়ারেন। তিনি এ পর্যন্ত ৩২ লাখ ডলার ব্যয় করেছেন।

এ সব মেসেজের কিছুর লক্ষ্য হচ্ছে জিআইপি কোড ব্যবহারকারী কালো ভোটাররা যদিও কোনো সরকারি তথ্যে তাদের সুনির্দিষ্ট ভাবে সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি। ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় অপরাধ বিচার আইন বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে ফেসবুকে বহুরকম বিজ্ঞাপন দেয়া হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে একটিতে দেখানো হচ্ছে যে প্রেসিডেন্ট এ আইনে স্বাক্ষর করার পর হোয়াইট হাউসে আফ্রিকান-আমেরিকানদের পাশে দাঁড়িয়ে বুড়ো আঙুল উঁচিয়ে আনন্দ প্রকাশ করছেন। এ ধরনের একটি বিজ্ঞাপনের শেষে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক বলয়ে থাকা আমেরিকানরা কারা সংস্কার আইনকে ঘিরে ঐক্যবদ্ধ হতে পারেন। আর তা সতীর্থ নাগরিকদের দায়মোচনের সুযোগ প্রদানসহ অপরাধ হ্রাস করবে।

এ বার্তা দিয়ে কালো ভোটারদের পক্ষে টেনে আনার প্রয়োজন ট্রাম্পের নেই। শুধু তাদের অনেককে ভোটের দিন অংশগ্রহণ করতে না দেয়ার মধ্যেই রয়েছে তার উদ্দেশ্যের সার্থকতা। শীর্ষ কালো কর্মকর্তারা ইতোমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে ট্রাম্পের নিজের বিজ্ঞাপনের অতিরিক্ত হিসেবে ভোটার সনাক্তকরণ আইন এবং সামাজিক মাধ্যমে অধিক আগ্রাসনমূলক বিদেশী হস্তক্ষেপ কালো ভোটদানের সংখ্যা হ্রাস করতে পারে।
প্রেসিডেন্টের জন্য ঝুঁকি হচ্ছে শহরতলির ভোটাররা। তারা মধ্যমেয়াদি নির্বাচনে রিপাবলিকান দল ত্যাগ করেছিল। ২০২০-এর নির্বাচনে তারা ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর পক্ষে প্রবল সমর্থন নিয়ে ফিরে আসবে। ডেট্রয়েট, মিলওয়াউকি, ফিলাডেলফিয়া ও ফিনিক্স-এর মত নগরীগুলোতে কালো ও হিস্পানিক ভেটাররা ২০১৬ সালের চেয়েও অনেক বেশি সংখ্যায় অংশ নেবে। এখনো ডেমোক্র্যাট প্রার্থীরা বলছেন যে ট্রাম্পের বার্তার পাল্টা জবাব দেয়া কঠিন। প্রেসিডেন্ট ও তার জাতিগত বিভেদ মূলক হামলা ইতোমধ্যেই বহু কালো মানুষের কাছে গা সওয়া ব্যাপার হয়ে গেছে।

কালো ডেমোক্র্যাটদের নির্বাচন করতে নিবেদিত গ্রুপের প্রধান কুয়েন্টিন জেমস বলেন, এটা সুনির্দিষ্ট, কারণ ট্রাম্পের ব্যাপারে এত বেশি আফ্রিকান-আমেরিকান অভ্যস্ত যে ডেমোক্র্যাট দলকে তাদের একটি অনিয়মিত অথচ গুরুত্বপূর্ণ আসনে তরুণ কালোদের ভোট সংগ্রহের জন্য উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ ঢালতে হবে। ডেমোক্র্যাটরা বলছেন, গবেষণা থেকে আভাস পাওয়া যাচ্ছে যে এ ধরনের বিষয়গুলো ট্রাম্পের গোচরীভ‚ত হওয়াটা কোনো উপকারে আসবে না। (কাল পড়–ন শেষ পর্ব)

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন