বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

হাসি ফুটছে খামারিদের

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে দেশি গরু যাচ্ছে বিভিন্ন স্থানে

মিজানুর রহমান তোতা | প্রকাশের সময় : ৭ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল শুধু সবজি, সাদা সোনা চিংড়ি, রেণুপোনা, খেজুরের গুড় আর রজনীগন্ধা নয়, পশুসম্পদেও সমৃদ্ধ। পবিত্র ঈদুল আযহা সমাগত। চারিদিকে কুরবানির প্রস্তুতি। কুরবানির পশুহাটগুলো ক্রমেই জমে উঠছে। বরাবরই দেশের মোট চাহিদার একটা অংশের গরু ও ছাগলের জোগান হয় এ অঞ্চল থেকে। এবারো স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে কুরবানির পশুর চালান যাচ্ছে রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ দেশের বিভিন্নস্থানে। এ তথ্য প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের। সূত্র জানায়, ভারতীয় গরু ঢোকার ক্ষেত্রেও সবসময় এ অঞ্চলের সীমান্ত তুলনামূলক বেশি ব্যবহৃত হতো। কুরবানির পশুর বাজার ধরতে এবারো ব্যাপকহারে গরু ঢোকানোর পাঁয়তারা করছে ভারতীয়রা। কিন্তু বিজিবি তাদের অপতৎপরতা রুখে দেয়ায় গরু করিডোর দিয়ে এবার ভারতীয় গরু ঢুকছে না বললেই চলে। যশোর বিজিবি কমান্ডিং অফিসার কর্ণেল সেলিম রেজা মঙ্গলবার দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, গত এক সপ্তাহে একটি ভারতীয় গরুও বাংলাদেশে ঢোকেনি।

প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তর ও খামারিদের সূত্রে জানা গেছে, ভারতীয় গরুর আধিক্য না থাকায় গরু লালন পালনকারি সাধারণ কৃষক ও ছোট-বড় খামারিদের মুখে হাসি ফুটেছে। কুরবানির পশুহাটে প্রচুর দেশি গরু উঠেছে। অভ্যন্তরিণ চালানও হচ্ছে। প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তর খুলনা বিভাগীয় উপ পরিচালক মাসুদ আহমেদ খান গতকাল জানান, ভারতীয় গরু ঢুকছে না বললেই চলে। গোটা অঞ্চলে ৭ লাখ ৩১ হাজার ৮শ’৪৪টি কোরবানির পশু প্রস্তুত আছে। মোট ১শ’৭১টি স্থায়ী হাটে ১শ’১৯টি মেডিক্যাল টিম চিকিৎসা কাজে নিয়োজিত রয়েছে। তিনি খামারিদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ভারতীয় গরু না আসায় খামারিরা খুব খুশি। ইতোমধ্যেই কুরবানির পশুহাটগুলোতে দেশি গরুর সরবরাহ সন্তোষজনক। দেশি গরুর চাহিদাও বেশি। প্রায় সব ক্রেতাই হাটে গিয়ে দেশি গরু খোঁজ করছেন। দেশি গরুর গোশতে আঁশ কম, স্বাদও বেশি। চামড়াও সমৃদ্ধ। যার কারণে বাংলাদেশের গরু ও ছাগলের চামড়া বিদেশের বাজারে ব্যাপক চাহিদা।

সুত্র জানায়, যশোর, খুলনা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলায় কুরবানির জন্য প্রস্তুত হৃষ্টপুষ্ট গরু ও ছাগলের বাইরে রয়েছে অসংখ্য বয়স্ক গাভী, অনুর্বর ও দুর্বল, বকনা বাছুর এবং ভেড়া ও মহিষ। সীমান্ত সূত্র জানায়, বেনাপোলের নাভারণ, শার্শার পুটখালী, দৌলতপুর, সাতক্ষীরার সোনাবাড়িয়া, ভাদিয়ালি, রাজাপুর ও আবাদেরহাটসহ করিডোর দিয়ে গরু ঢোকানোর চেষ্টা করছে ভারতীয়রা। সূত্রমতে, অসাধু গরু ব্যবসায়ী, চোরাচালানি, সীমান্ত ঘাট এবং খাটাল মালিকদের যোগসাজসে কুরবানিকে সামনে রেখে ভারত থেকে গরু আনার ব্যবস্থা হয়। প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করা হলে দেশে পশুপালন আরো বৃদ্ধি পাবে। তাতে দেশের চাহিদা পূরণ করার পর বিদেশে গোশত রফতানি করা সম্ভব হবে।

যশোর, খুলনা, ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়ার কয়েকজন খামারি জানালেন, আমরা কয়েকবছর জোর দিয়েছি গরু ও ছাগল পালনে। শুধু কুরবানি উপলক্ষে নয়, সারা বছর নিয়মিত হাটে প্রচুর দেশি গরু ও ছাগল ওঠে। এ অঞ্চল থেকে অন্যান্য সময়ও বিভিন্নস্থানে চালান হয় কমবেশি। তাদের কথা জরুরিভাবে গরু করিডোরগুলো বন্ধের ঘোষণা দেয়া উচিত। গরু করিডোর দিয়ে ভারতীয় গরু আসার কারণে ঘাট মালিক, খাটাল মালিক ও সিন্ডিকেট এবং অবৈধ আয়কারি প্রভাবশালীরা লাভবান হয়ে থাকে। সরকার নামকাওয়াস্তে রাজস্ব পায়। কিন্তু দেশের ও দশের ক্ষতি ছাড়া কোন লাভ হয় না।

এদিকে, দক্ষিণ-পশ্চিমের গ্রামাঞ্চলের হাটগুলোতে ক্রমেই দেশি পশু আমদানি বাড়ছে। পশু হাটের বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে জোরদার ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলায় জেলায় আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। একইসাথে পশুহাটে যাতে কোনরূপ চাঁদাবাজি না হয় সেদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর দৃষ্টি দিয়েছে। রাজধানীতে আগেভাগেই পশুর হাট

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
সাইফুল ইসলাম চঞ্চল ৭ আগস্ট, ২০১৯, ২:০৮ পিএম says : 0
বিদেশি গরু আনা বন্ধ করে দেশের গরু খামারিদের নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে হবে ভালো কথা, কিন্তু তাই বলে ৫০ হাজারের গরু ৭০ /৮০ হাজার টাকা হবে এটা কোন ধরনের ন্যায্য মূল্য একটু বলবেন কি?
Total Reply(0)
Rabi Islam ৭ আগস্ট, ২০১৯, ২:০৮ পিএম says : 0
পিঁয়াজ, রসুন, আদা, কাপড়, সবই আমদানী করেন, তবে গরু আমদানী করলে সমস্যা কি? দেশের খামারীরা চায় দেশে গরুর শংকট দেখা দিলে বাছুর বিক্রয় করবে লক্ষ টাকায়।
Total Reply(0)
Abdur Rahman Pappu ৭ আগস্ট, ২০১৯, ২:০৯ পিএম says : 0
প্রচুর পরিমানে বিদেশি গরু আসা দরকার। দেশি খামারি রা বিদেশি গরু আনায় বাঁধা দেয়ায় ২৫০ টাকা কেজি গরুর মাংস এখন ৬০০ টাকা ৭০০ টাকা কেজি হয়েছে। আগে ৫০ হাজার টাকায় ভাল মানের আর সাইজের গরু পাওয়া যেত। এখন ১ লক্ষ টাকার নিজে বাছুর ছাড়া কিছু পাওয়া যায় না। এইসব কাদের কারসাজি ? গরুর পালনে যদি দেশিয় খামারিদের এতই খরচ হয় তাহলে গরু পালন বাদ দিয়ে অন্য কিছু করুন। সাধারণ মধ্যবিত্তদের কুরবানির হক মাটি করবেন না।
Total Reply(0)
Masud Rana ৭ আগস্ট, ২০১৯, ২:০৯ পিএম says : 0
আমার মনে হয় দেশের গরু দিয়ে চাহিদা পুরন করা সম্ভব না
Total Reply(0)
Nazmul Sagor ৭ আগস্ট, ২০১৯, ২:১০ পিএম says : 0
শুধু খামারিদের কথা ভাবলে হবে? ক্রেতাদের কথাও তো ভাবতে হবে
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন