মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ফিরতি যাত্রায় টিকিট নিয়ে ভোগান্তি

ঈদুল আজহার ছুটি শেষ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

ঈদের ছুটি শেষে রাজধানীতে ফিরছে মানুষ। গতকাল কমলাপুর রেল স্টেশনে -ইনকিলাব


ঈদুল আজহার ছুটি শেষে গত বুধবার থেকে রাজধানী ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে মানুষজন। ফিরতি পথে বিলম্বের যন্ত্রণা তেমন ছিল না। তবে বাস ও ট্রেনের টিকিট পেতে যাত্রীদের ঘাম ঝরাতে হয়েছে। ৯০০ টাকার ট্রেনের টিকিট কালোবাজারে কেউ পেয়েছেন সাড়ে তিন হাজার টাকায়। ৬০০ টাকার বাসের টিকিট নিতে হয়েছে ১৬০০ টাকায়। আর এসি বাসের টিকিট নিতে হয়েছে দুই হাজার টাকায়।

আজ শুত্রবার পর্যন্ত রাজধানীতে ঈদে ফেরা মানুষের উপস্থিত কম হলেও আগামী সপ্তাহে বাড়বে। আগামী রোববার থেকে ঢাকায় কর্মচাঞ্চল্য বাড়বে। ঢাকার পরিচিত দৃশ্য আবার দেখা যাবে আগামী সপ্তাহে।
এবার ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাড়ি যেতে যাত্রীদের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ২৪-২৬ ঘণ্টাও কাটাতে হয়েছে যানজটে পড়ে। উত্তরের ট্রেনগুলোর সূচি বিড়ম্বনাও ছিল ভয়াবহ। ঈদের আগের দিন রোববার ঢাকা থেকে রংপুর যাওয়ার পথে টাঙ্গাইলের স্থানে স্থানে ১১ ঘণ্টা কাটাতে হয়েছে শাহানাজ বেগমকে। তিনি বললেন, তিন শিশুসন্তানকে নিয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পথ চলতে হয়েছে।

এর আগে গত শুক্রবার রাত ১০টায় ঢাকার গাবতলী থেকে এসি বাসে বরিশাল যাওয়ার জন্য রওনা দিয়েছিলেন বোরহান খান। পুরো রাত তাকে কাটাতে হয়েছে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে। পরদিন শনিবার বেলা ১টায় পাটুরিয়া ঘাটে তাদের বাসটি ফেরিতে ওঠে। তারপর বরিশাল পৌঁছতে বিকেল ৫টা। তিনি ঢাকায় ফিরবেন আগামী শনিবার। বাড়ি যাওয়ার সেই যন্ত্রণার কথা মনে করেই বললেন, ঢাকায় ফিরব পরিস্থিতি দেখে।

যারা ভোগান্তি সয়ে ঈদ করতে বাড়ি গিয়েছিল তারা ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে। অনেকেই গত মঙ্গলবার আগেভাগেই ফিরেছে। গতকাল বৃহস্পতিবারও বাড়ি থেকে ফেরা যাত্রীদের দেখা গেছে গাবতলী বাস টার্মিনাল, কমলাপুর রেলস্টেশন ও সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে। এবার ঈদে গত শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটিসহ পাঁচ দিন ছুটি কাটিয়েছেন সরকারি চাকরিজীবীরা।

গতকাল জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে। তার পরের আজ শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। ফলে সরকারি চাকরিজীবীরা ছুটি পাচ্ছেন আরো তিন দিন। অনেকে বুধবার ছুটি নিয়ে অতিরিক্ত ছুটি উপভোগ করছেন। আশা করা হচ্ছে, আগামী রোববার থেকে ঢাকায় কর্মচাঞ্চল্য বাড়বে। ঢাকার পরিচিত দৃশ্য আবার দেখা যাবে আগামী সপ্তাহে। রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশালসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাকামুখী পরিবহনে যাত্রী বাড়ছে বলে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানান। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে দেখা যায়, বিভিন্ন রুটের ট্রেনে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ফিরছেন অনেকেই। রংপুর এক্সপ্রেসে করে গাইবান্ধা থেকে ঢাকায় ফেরা লিয়ন বললেন, যাওয়ার সময় একই ট্রেন ১৫ ঘণ্টা দেরি করেছিল। এবার ফেরার ক্ষেত্রে তিন ঘণ্টা দেরি হয়েছে। এই দেরি মানিয়ে নেয়া যায়।

সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনটিও দেরিতে আসে খুলনা থেকে। উত্তরের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী চারটি ট্রেন নীলসাগর, দ্রæতযান, একতা ও পঞ্চগড় এক্সপ্রেসেও দেরি হচ্ছে। এসব ট্রেনের টিকিট বিক্রি হচ্ছে কালোবাজারে। ফলে সাধারণ যাত্রীরা টিকিট না পেয়ে বিমানে বাড়তি অর্থ খরচ করেও ফিরছেন। দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে ঢাকায় ফেরার জন্য মিজানুর রহমান নীলসাগর, দ্রæতযান, একতা ও পঞ্চগড় এক্সপ্রেসের মধ্যে কোনো ট্রেনেরই কোনো শ্রেণির টিকিট পাননি। তিনি জানান, বিশেষ কয়েকজন ব্যক্তির কাছে ট্রেনগুলোর এসি টিকিট মিলছে। এগুলোর দাম ৯০০ টাকা হলেও কালোবাজারে বিক্রি হচ্ছিল সাড়ে তিন হাজার টাকায়।
হক এন্টারপ্রাইজের দু’টি বাস প্রতিদিন পার্বতীপুর থেকে ছেড়ে ঢাকায় আসে। এই বাসের টিকিটও নেই। শেষ পর্যন্ত তিন হাজার ২০০ টাকায় নভো এয়ারের বিমানের টিকিট পেয়ে ঢাকায় ফেরেন।

সদরঘাটে গতকাল সকাল থেকে ভিড়তে শুরু করে নৌযান। চাঁদপুর থেকে ভোর ৫টায় রবরব-২ নামের লঞ্চে ওঠেন আবু তালেব। ১০০ টাকা ভাড়া দিয়ে ঢাকায় ফেরেন তিন ঘণ্টায়। তিনি জানান, যাত্রী কম ছিল। ঢাকায় নেমে দেখি সেই যানজট নেই। এবারে উত্তরঞ্চালের বাসগুলোর মধ্যে নাবিল পরিবহন, শ্যামলী, ডিপজল, আগমনী, এসআরসহ বেশ কয়েকটি পরিবহন সরকার নির্ধারিতের চেয়ে তিন গুণ ভাড়া নিয়েছে।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন