শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বাংলাদেশের মডেল কৃষি খামার পাচ্ছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

মিজানুর রহমান তোতা | প্রকাশের সময় : ১৮ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

মেহেরপুরের পরিত্যক্ত জমিতে গড়ে তোলা সুদৃশ্য মডেল খামার -ইনকিলাব


বাংলাদেশের কৃষি ক্রমান্বয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন ফসল আবাদ ও উৎপাদনে ঘটছে বিপ্লব। এবার বাংলাদেশের একটি মডেল খামার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সকল প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। খামারবাড়ি মডেলের সমৃদ্ধ এ জানালাটি হলো মেহেরপুরে। শীত গ্রীষ্ম বর্ষা সকল মৌসুমে এখানে সবুজের সমারোহ দৃশ্যমান। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মেহেরপুরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ ড. আখতারুজ্জামান নিজ অফিস চত্বরে পরিত্যক্ত জমিতে গড়ে তুলেছেন মডেল খামারবাড়ি।

চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে ব্যাংককে অনুষ্ঠিতব্য ৬ষ্ঠ আন্তর্জাতিক সম্মেলন অন এগ্রিকালচার ২০১৯-এ যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছেন তিনি। সেখানে ‘মডেল ফার্মহাউজ ইজ দ্যা বেস্ট ওয়ে ফর এ্যাপরোপ্রিয়েট এগ্রো টেকনোলজি ডেসিমিনেশন সিস্টেম উইথ গ্রেটার ইমফ্যাসিস অন সাসটেইনএবল প্লান্ট প্রডাকশন, প্রটেকশন এন্ড টু প্রডিউস কোয়ালিটি এগ্রো-প্রডাক্টস্’ বিষয়ে পেপার উপস্থাপিত হবে। ওই সম্মেলন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মেহেরপুরের মডেল খামারের স্বীকৃতি দেয়া হবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষিবিদ ড. আখতারুজ্জামানের মডেলের যাবতীয় কর্মকান্ড বিভিন্ন দেশের উচ্চ পর্যায়ের কৃষি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত নিরপেক্ষ কমিটির চুলচেরা যাচাই বাছাই ও বিশ্লেষণের পর তারা প্রাথমিক অনুমোদন দেয়। পরে কৃষি মন্ত্রণালয় অনুমতিপত্র সম্বলিত সরকারি আদেশ জারি করে। তিনি দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ‘আমার খামারবাড়ি মডেল আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাচ্ছে এতে আমি ভীষণ এক্সসাইটেড’।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয় ও সমবায় বিভাগের নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) এবং জনপ্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে ‘আমার বাড়ি, আমার খামার’ নামক একটা মেগা প্রকল্প দেশের সবগুলো উপজেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে কিন্তু বাস্তবে এ প্রকল্পের বেশির ভাগ কাজ সীমাবদ্ধ রয়েছে ঋণ আদান প্রদানের মধ্যে। বিক্ষিপ্তভাবে এ প্রকল্পের সুবিধাভোগিরা কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে কিছুটা ভূমিকা রাখলে ‘আমার বাড়ি আমার খামার’ এর মূল কার্যক্রম যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। এ অবস্থায় ‘আমার বাড়ি আমার খামার’ এর একটা আদর্শ মডেল স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন ড. আখতারুজ্জামান। তিনি তাঁর সহকর্মিদের সহায়তায় শুধু উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে মেহেরপুরের প্রতিটি গ্রামে একাধিক মডেল খামারবাড়ি স্থাপনেরও উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।

মেহেরপুর মডেল খামারবাড়ির স্থানটিতে আগে সন্ধ্যা হলেই ভুতুড়েপুরিতে মানুষ যেতে ভয় পেত। সেখানে এখন স্থাপিত হয়েছে নান্দনিক মডেল খামারবাড়ি, রাতে সেখানে শোভা পাচ্ছে অসংখ্য লাইটিং সাইনবোর্ড, এলইডি সাইনবোর্ড, পর্যাপ্ত সিকিউরিটি বাতি আরো কত কী। মডেলটি অনুসরণ করে যদি প্রতিটি কৃষকের বাড়িকে একটা আদর্শ খামারবাড়িতে রূপান্তর করা যায়, তাহলে কৃষি প্রযুক্তি যেমন স¤প্রসারিত হবে তেমনি কৃষক তাঁর নিজস্ব খামারবাড়ি থেকে পাবেন সব ধরনের জৈব প্রযুক্তির মাধ্যমে উৎপাদিত ফল ফলাদি, ডিম, দুধ, হাঁস, মাছ ইত্যাদি
সর্বোপরি কৃষকের প্রতিটি বাড়ি একেকটি খামারবাড়িতে রূপান্তরিত হলে সবুজে বাঁচবে কৃষক, সবুজকে বাঁচাবে কৃষক, সুশোভিত হবে সবুজ শ্যামলিমায় ঢাকা চিরায়ত বাংলার মুখচ্ছবি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন